Advertisement
Advertisement

Breaking News

Corona

সম্পাদকীয়: ‘আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’

কেন্দ্র-রাজ‍্য বিবাদটা কি খুব জরুরি ছিল?

Time to keep political rivalry at bay as corona wrecks havoc | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:May 22, 2021 3:16 pm
  • Updated:May 22, 2021 3:16 pm

জয়ন্ত ঘোষাল: এবার নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হওয়ার আগেই দিল্লির এক প্রবীণ সাংবাদিক বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা যতই করুক, এ রাজ্যে রাজনৈতিক মেরুকরণও এত তীব্র যে, ধর্মীয় মেরুকরণ হওয়া কঠিন। ভোটের ফল প্রকাশিত হয়েছে। হয়তো সেই প্রবীণ সাংবাদিকের কথা আংশিক হলেও সত্য হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক মেরুকরণের চেহারা যে কী হতে পারে, তা গত কয়েক মাস ধরে দেখে আমি নিজেও স্তম্ভিত! বিমর্ষ হওয়ারও যথেষ্ট কারণ আছে ভোট-পরবর্তী এই মেরুকরণের কদর্য চেহারা দেখে!

এখন তো মনে হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক দলাদলি এতটাই শিকড় বিস্তার করেছে- জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরমশাই জামাইকেও বলতে পারেন যে, তুমি বিজেপি হয়ে গিয়েছ, এবারের জামাইষষ্ঠীতে তোমার আসা বারণ। অর্থাৎ, জামাইয়ের নিমন্ত্রণ নাকচ। শ্বশুরমশাই তৃণমূল করেন বলে বিজেপি-জামাই শ্বশুরকেও সারা জীবনের জন‍্য বয়কট করে দিতে পারে। বউকে বলতে পারে যে, বাপের বাড়িতে যাওয়া তোমার আর চলবে না! এই ধরনের রাজনৈতিক মেরুকরণ, যা আমাদের সামাজিক, ব‍্যক্তিগত বা পারিবারিক জীবনেও ক‍্যানসারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে- তা বোধহয় বর্জনীয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সম্পাদকীয়: আমি, আপনি ও অ্যাপ]

এখন তো আমরা করোনা-বিপর্যয়ের এক চূড়ান্ত পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। তাই লিখতে বসে মনে হল যে, যদি রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে আসার কথা বলি, তাহলে কি আপনাদের সেটা অপছন্দ হবে? দেখুন, করোনার এই দ্বিতীয় ভয়ংকর ঢেউ নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় পর্বকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। দু’-দুটো সমীক্ষার রিপোর্ট এসেছে; একটি আমেরিকার, অন‍্যটি ভারতীয়। দু’টি রিপোর্টই বলছে, অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে নরেন্দ্র মোদির সর্বভারতীয় জনপ্রিয়তার শতকরা ২০ ভাগ ক্ষয় ঘটেছে। করোনা-মোকাবিলার ব‍্যর্থতাই এর অন‍্যতম কারণ। যখন নরেন্দ্র মোদি ‘ডিমনিটাইজেশন’ করেছিলেন, তখনও তাঁর জনপ্রিয়তায় আঘাত লেগেছিল। কিন্তু সেটা শতকরা ২০ ভাগ ছিল না, ছিল শতকরা পাঁচভাগ মতো। জনপ্রিয়তায় সেই ভাটাও তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অতিক্রম করেছিলেন নানা রাজনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে। বর্তমানে এই অবক্ষয় সামলানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে।

Advertisement

বিদেশ থেকে ভ‍্যাকসিন যতটা প্রয়োজন, ততটা পাওয়া যাচ্ছে না। ক’দিন আগে আমরাই প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে ভ‍্যাকসিন দিচ্ছিলাম। আমরা নাকি সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ভ্যাকসিন উৎপাদন করি, আর আমরাই ভ‍্যাকসিন চেয়ে পাচ্ছি না! আসল কারণ হল, মোদি সরকার শুধু নয়, দেশজুড়ে মানুষ এমন একটা ধারণার বশবর্তী হয়েছিল যে, সকলে ভাবতে শুরু করেছিলাম, করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউটির বোধহয় আসার সম্ভাবনা নেই। তবে সাধারণ মানুষ যা-ই ভাবুক, সরকারের তো আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল। এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের জন্য আমরা বিদেশের কাছে ভ‍্যাকসিনের আবেদন পর্যন্ত জানাইনি। এমনকী, বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্র, প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র, তারাও অভিযোগ করছে- টাকা দেওয়া সত্ত্বেও ভ‍্যাকসিনের দ্বিতীয় ইনস্টলমেন্ট ঢাকাতে পৌঁছচ্ছে না। বাংলাদেশ ভাল ‘জেশ্চার’ দেখিয়ে কলকাতায় ভ‍্যাকসিন পাঠিয়েছে। আর সেখানে মোদির ভ‍্যাকসিন-কূটনীতি মার খেয়েছে। বাংলাদেশ সরকার বলছে, ভোটের সময় মোদি চেয়েছিলেন বলেই ঢাকা সরকার তাঁকে কত কষ্ট করে মতুয়ার প্রতিষ্ঠাতার আদি নিবাসে নিয়ে যাওয়ার সমস্ত ব‍্যবস্থা করেছিল। সেখানে রাস্তা ছিল না, নিরাপত্তার ব‍্যবস্থা ছিল না। তা সত্ত্বেও কিন্তু তারা বন্ধুরাষ্ট্র হিসাবে মোদির কথা শুনেছে। কিন্তু এখন তিনিই বাংলাদেশকে করোনার প্রতিষেধক দেবেন বলেও দিচ্ছেন না!

দিল্লিতে দেখছি, এই ভ‍্যাকসিন যে পাওয়া যাচ্ছে না, তার জন্য একে-অন‍্যকে দোষারোপ করাও শুরু হয়ে গিয়েছে। জয়শংকরের বিদেশমন্ত্রক বলছে, প্রথম থেকেই মন্ত্রী আক্রমণাত্মক ভ‍্যাকসিনেশন নীতি গ্রহণের কথা বলেছিলেন। তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন তাঁকে গুরুত্ব দেননি। আবার হর্ষবর্ধন প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কিছু কর্তাকে দুষেছেন। জয়শঙ্করের মন্ত্রক এখন চেষ্টা করছে, আমেরিকার ট্রাম্প সরকার ভ‍্যাকসিনের কিছু উপাদান পাঠানোর উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করে গিয়েছিল, তা প্রত‍্যাহার করার। ভ‍্যাকসিন তৈরি করার জন্য ৩০০টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। যার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আরএনএ-সংক্রান্ত। সেই উপাদানটির মনোপলি আমেরিকার চারটে কোম্পানির কাছে। তারা না দেওয়াতে ভারতীয় ভ‍্যাকসিন-উৎপাদনকারী সংস্থাগুলো ভ‍্যাকসিন তৈরি করতে পারছে না।

আগে দাবি জানানো হয়নি, এখন বেশিমাত্রায় ভ‍্যাকসিন তৈরি করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে- এই অভিযোগ করে সিরাম ইনস্টিটিউটের কর্তা আদর পুনাওয়ালা ক্ষুব্ধ হয়ে সপরিবার লন্ডন চলে গিয়েছেন। অন্যদিকে, জয়শংকর লন্ডনে জি-৭ শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের মধ্যে দু’জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তাতে জয়শংকর তথা ভারতের যথেষ্ট অমর্যাদা হয়। লন্ডনে গিয়েও তাঁকে বৈঠকটা ভারচুয়ালি করতে হয়। যদিও বিদেশমন্ত্রক জানাচ্ছে যে, প্রত্যেক সদস্যকে যাওয়ার আগে সাতবার পরীক্ষা করা হয়েছে, কিন্তু ভারতীয় পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়েনি। লন্ডনের পরীক্ষা অনেক বেশি সংবেদনশীল এবং যাঁদের আগে হয়েছিল, তাঁদের মৃত আরএনএগুলো ধরা পড়ায় দু’জনকে ‘করোনা পজিটিভ’ বলা হয়। আসলে তাঁদের করোনা সংক্রমণ আগেই হয়ে গিয়েছে। আর সেটার প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে, এরকম ব‍্যক্তিকে নিয়ে যাওয়ার কী প্রয়োজন ছিল– যাতে ভারতের মর্যাদাহানি হয়।

সব মিলিয়ে নিজেদের মধ্যেই গোলমাল বেধে গিয়েছে। প্রতিষেধক নেই। প্রতিষেধক দেওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ অক্সিজেনের এত অভাব হবে, সেটাও কেউ ভাবতে পারেনি। বিদেশ থেকে অক্সিজেন আনা হচ্ছে। এই সমস্ত পরিস্থিতিতে অত‍্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমাদের এই লড়াই লড়তে হচ্ছে। এই অবস্থায় আমার মনে হচ্ছে, এখন রাজনীতি করার সময় নয়। আমরা যখন দেখছি যে, পশ্চিমবঙ্গে করোনার প্রকোপ বাড়ছে, বিধিনিষেধ আরও বেশি করে মানা প্রয়োজন (আগে না হলেও পশ্চিমবঙ্গে এখন আংশিক লকডাউন হয়েছে)- তখন কেন আট দফায় ভোট হল? কেন সেই সময় নির্বাচন কমিশন করোনা সচেতনতা দেখাল না? কোন রাজনৈতিক চাপে? এসব প্রশ্ন তুলে আর লাভ কী! তার চেয়ে এখন বোধহয় উচিত, করোনা-সমস্যার মোকাবিলায় কেন্দ্র-রাজ‍্য, বিজেপি-তৃণমূল- সব এক হয়ে মানবতার জন্য লড়াই করা। কিন্তু তা কি আমরা দেখতে পাচ্ছি? টিভি খুললেই দেখতে পাচ্ছি, তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে সিবিআই হানা, নিজাম প‍্যালেসে সারাদিন ধরে নাটক, হাই কোর্টের জামিন নিয়ে তুলকালাম টেনশন। কিন্তু এটা কি আমাদের অগ্রাধিকার? সিবিআইয়ের এই অভিযান যদি আর কয়েকটা দিন বাদে হত, তবে কী এমন সমস্যা হত?

মনে পড়ছে, ২০১৪ সালে হিমাচলের মুখ‍্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের মেয়ের বিয়ের দিনই তাঁর বাড়িতে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট হানা দিয়েছিল, এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তল্লাশি চালানো হয়েছিল। যদিও পরে সুপ্রিম কোর্টে সেই অপরাধ প্রমাণ হয়নি। এখন তিনি জামিনে আছেন। সেই কেসের আজও মীমাংসা হয়নি। সেই বিয়ের দিনই কংগ্রেস মুখ‍্যমন্ত্রীর বাড়িতে সিবিআইয়ের হানা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত- এমনটাই সবাই
মনে করেছিল।

আমার মনে হয়, মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে করোনা নিয়ে ভারচুয়াল বৈঠকে সম্মত হয়েছেন, অন্তত মুখ‍্যমন্ত্রীদের বৈঠকে তিনি যে শামিল হয়েছেন- এটা ভাল। কেন্দ্র-রাজ‍্য যৌথভাবে সমস্যার মোকাবিলা করুক, এ বিষয়ে তিনি জোর দিচ্ছেন। এটাকেই তো বলে ‘কো-অপারেটিভ ফেডারেলিজম’। কিন্তু তালি একহাতে বাজে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো ইমরান খান নন যে, তাঁর সঙ্গে কথা বলা যাবে না। যেমন, পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলা বারণ। সুতরাং, সে-ব‍্যাপারে যতক্ষণ না সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ততক্ষণ নরেন্দ্র মোদি ইমরান খানকে ফোন করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো সেরকম কোনও চরিত্র নন। এমনকী, পাকিস্তানেও তো ভারত ভ‍্যাকসিন পাঠিয়েছে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও একটা মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি রাখা হয়েছে। তাহলে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলতে চাইলে কেন বলতে দেওয়া হবে না?

এবারের এই করোনা-যুদ্ধে কত মানুষ মারা যাচ্ছেন! এর মধ্যে কত সাংবাদিকেরও মৃত্যু হয়েছে। কেবলমাত্র রাজনৈতিক ‘তু তু ম‍্যায় ম‍্যায়’ কভার করতে গিয়ে শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, দেশজুড়ে কত সাংবাদিক মারা গেলেন! আমি অবাক হয়ে সেদিন টেলিভিশনের পর্দায় দেখছিলাম, কত রাত হয়ে গিয়েছে, প্রেসিডেন্সি জেলের সামনে, নিজাম প‍্যালেসের সামনে, রিপোর্টাররা তাঁদের কাজ করছেন। সংবাদমাধ্যম ছাড়া তো রাজনীতিকে সারাদিনের ইভেন্ট করা যায় না! সংবাদমাধ্যমকে সিবিআই কর্তারা আগাম খবর পাঠান যে, আমরা যাচ্ছি, আপনারা আসুন। এ কোন ভারত? এ কোন বাংলা? আমরা কি কিছুদিনের জন্য এই সময়টাকে অতিক্রম করার জন্য রাজনীতিকে একটু কম অগ্রাধিকার দিতে পারি না?

আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র। আমাদের মাস্টারমশাইরা পড়িয়েছিলেন, শিখিয়েছিলেন যে, রাজনীতি মানে শুধু রাষ্ট্র নয়, শুধু সরকার নয়। রাজনীতি সর্বত্র। রান্নাঘরেও রাজনীতি। বাংলা টেলিভিশনের সিরিয়ালগুলো দেখলেও বোঝা যায় যে, রাজনীতি কেমন সর্বত্রগামী। আর রাজনীতি থেকে ঊর্ধ্বে ওঠার কথা ভাবছি বলেই শেষ করব একটা অন্য কথা দিয়ে।

করোনা-মোকাবিলায় ব‍্যর্থ হওয়ায় নরেন্দ্র মোদি বেশ প্যাঁচে পড়েছেন- এমনটা অনেকেই মনে করছেন। হাতি কাদায় পড়লে তখন চামচিকেও লাথি মারে। ২০২৪-এ ‘করোনা ২’ আর ‘মোদি ২’, দুটোরই পরিণতি নেতিবাচক হবে, আর সেই পরিণতি হবে মোদি সাম্রাজ্যের পতন। কিন্তু, আমি বলি, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাক। যেমন, গুজরাটে ভয়ংকর সাইক্লোন হল। মোদি দেখতে যাচ্ছেন। যাঁরা বিজেপি-বিরোধী, মোদি-বিরোধী- তাঁরা কি চাইবেন যে, গুজরাটে বেশি করে মানুষ মারা যাক? ওখানে মোদি টাকাপয়সা দেবেন না, এটা কি হতে পারে? সুতরাং বাংলার জন‍্যও যেমন ভাবা উচিত এবং সাহায্য দেওয়া উচিত, একইভাবে আমাদেরও এই সংকটে গুজরাট সম্পর্কে কোনও নেতিবাচক মনোভাব রাখা উচিত নয়। ২০২৪-এর আগে ২০২২-এর উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনও আছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদিকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করার জন্য করোনার নিয়ন্ত্রণ ভারতে ব‍্যর্থ হোক- এটা চাই না! তাহলে আরও অনেক বেশি মানুষকে মরতে হবে। কোনও জায়গায় যাতে ভ‍্যাকসিন না পৌঁছতে পারে, বা অনেক মানুষ বিধি ভেঙে একটা নৈরাজ্য তৈরি করুক- সেটা কি আমরা চাইব? না। নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক ব‍্যর্থতা কামনা করার জন্য ভারত সরকারের করোনা-মোকাবিলা ব‍্যর্থ হয়ে যাক- এমনটা চাওয়া যায় না। সেই কারণেই কেজরিওয়াল যখন সমস্ত তথ্য না জেনে সিঙ্গাপুর সম্পর্কে মন্তব্য করেন এবং জয়শংকর তার প্রতিবাদ করেন, তখন মনে হয়, এই কেন্দ্র-রাজ‍্য বিবাদটা কি খুব জরুরি ছিল? কেজরিওয়ালকে সঠিক তথ্য দেওয়াটা কেন্দ্রের কর্তব্য। আবার তাঁরও কোনও মন্তব্য করার আগে দশবার ভাবা কর্তব্য ছিল।

সকলের কাছে একজন ভারতের নাগরিক, পশ্চিমবঙ্গের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে হাতজোড় করে একটাই প্রার্থনা যে, আমাদের প্রত্যেকের শুভবুদ্ধির উদয় হোক‌। আমরা আত্মীয়-বন্ধু-পরিজনকে প্রতিদিন হারাচ্ছি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে মোবাইল ফোন খুলতে ভয় পাচ্ছি। ফোন বাজলে আতঙ্কিত হয়ে থাকছি, কী খবর এল, কার খবর এল! এই পরিস্থিতিতে আমরা ‘তৃণমূল বনাম বিজেপি’- এই রাজনীতি থেকে কি একটু দূরে থাকতে পারি না? কেন্দ্র-রাজ‍্য সম্পর্কটা অন্তত করোনা-মোকাবিলার জন্য সুষ্ঠু হওয়াটা জরুরি বলে কি আমরা মনে করব না? শ্মশানে গেলে মানুষের মৃতদেহ দেখে শ্মশানবৈরাগ্য আসে। আজ যখন এই করোনা-কালে মৃত্যুর মিছিল দেখছি, তখন রাজনৈতিক নেতাদের, অস্থায়ী হলেও, শ্মশানবৈরাগ্য কি আসতে পারে না?

[আরও পড়ুন: সম্পাদকীয়: ‘আত্মশাসন’ না মানাটা হবে আত্মহত্যা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ