Advertisement
Advertisement
মৃণাল সেন

জন্মদিন আছে, জাতক নেই – মৃণালহীন ‘নীল আকাশের নিচে’ স্মৃতিচারণায় অনুরাগী মহল

শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Filmmaker Mrinal Sen remembered on his 96th birth anniversary
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:May 14, 2019 4:32 pm
  • Updated:May 14, 2019 4:32 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:  ‘রে’-ঘটক-সেন… সিনেপ্রেমী বাঙালিদের অন্দরে উঁকি মারলে কিংবা কান পাতলেই দেখবেন,চা-মেরি সহযোগে এই তিন নাম এখনও জপেন তাঁরা। সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণাল শুধু বাংলা চলচ্চিত্র নয়, ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসেরও একেকটা মাইলস্টোন। কার ছবির ভাষা তুখোর বেশি, কে কোন ছবিতে কতটা জীবনদর্শনের কোন দিকটিতে বেশি আলো ফেলেছেন, কে তা করেননি – এসব কাটাছেঁড়ায় লাগাম টানা দায়। বরং, বলি কী তুলনা না টানাই ভাল। এঁরা যে যাঁর কাজে একেকটা উজ্জ্বল নক্ষত্র। এত কথা লেখার একটাই কারণ। আজ মৃণাল সেনের জন্মদিন। আর মৃণাল সেনের প্রসঙ্গ উঠলে তো ঋত্বিক ঘটক এবং সত্যজিত রায়ের কথা অনায়াসেই এসে যায়। বাংলা সিনেমাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে ঘটক এবং রায়ের সঙ্গে ইনি জুড়ে গিয়েছেন অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে।

[আরও পড়ুন:  আসছে রহস্যে মোড়া নতুন ওয়েব সিরিজ, নাইট ওয়াচম্যানের ভূমিকায় অর্জুন ]

Advertisement

পরিচালক হিসেবে আজীবন নিজেকে ভেঙেছেন। চেনা ছক, চেনা গতি ভেঙে আরও দুর্বার হয়েছেন। ছাপিয়ে গিয়েছেন পারাপার। মেইনস্ট্রিম ছবির পাশাপাশি সমান্তরালভাবে রূঢ় বাস্তব সমাজের ন্যাড়া চেহারাকে তুলে ধরেছেন রূপোলি পর্দায়। আপন মনের সূক্ষ্মবোধগুলো দিয়ে চুপিসাড়ে একপ্রকার বিপ্লবই ঘটিয়েছেন বলা চলে।

Advertisement

পরিচালক হিসেবে হাতেখড়ি হয় ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ ছবি দিয়ে। সে ছবি অবশ্য তখন খুব একটা পরিচিতি পায়নি। তবে, পরিচালক হিসেবে তিনি যে ভারত তথা বিশ্বের যে কোনও পরিচালককে যে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেন, সেটা চলচ্চিত্র বোদ্ধারা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন ‘নীল আকাশের নীচে’ এবং ‘বাইশে শ্রাবণ’ দেখে। তবে, ১৯৬৯ সালের ‘ভুবন সোম’ পরিচয় করায় এক অন্য মৃণাল সেনের সঙ্গে। দূরত্ব-ভালবাসা-বিশ্বাস – কী অদ্ভুতভাবে মিলেমিশে গিয়েছে ‘ভুবন সোম’-এর গল্পে। এই ছবির বড় প্রাপ্তি উৎপল দত্তের অভিনয়।

মৃণাল সেনের কথা বললে তাঁর কলকাতা ট্রিলোজির কথা উঠবেই। বেকারত্ব, মধ্যবিত্তের জ্বালা, সাতের দশকের রাজনৈতিক হিংসা দুর্নীতি, তৎকালীন কলকাতার টুকরো টুকরো হতাশা – এসবের চিত্র ফুটে উঠেছে ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘ক্যালকাটা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩)-এ। এই তিনটি ছবিতে তিনি তৎকালীন কলকাতার অস্থিরতাকে তুলে ধরেছিলেন। মধ্যবিত্ত সমাজের নীতিবোধকে মৃণাল সেন তুলে ধরেন বহুল প্রশংসিত দুই ছবি ‘একদিন প্রতিদিন’ (১৯৭৯) এবং ‘খারিজ’ (১৯৮২)-এ। ১৯৮৩ সালে কান-যাত্রা হয়েছিল ‘খারিজ’-এর। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছিল। ‘মৃগয়া’, ‘খণ্ডহর’, ‘আকাশ কুসুম’… ছবির নাম উল্লেখ করে শেষ করা যাবে না। প্রত্যেকটি সিনেমাতেই ভারতীয় চলচ্চিত্র জগৎ পেয়েছে তাঁর ভবিষ্যতের মণিমাণিক্যকে। যাঁদের স্মৃতিচারণায় আজও জ্যান্ত তাঁদের ‘মৃণালদা’।

[আরও পড়ুন: ২০২০-র অস্কারের দৌড়ে তামিলনাড়ুর খুদে স্কেটবোর্ডারের কাহিনি ‘কামালি’ ]

গত বছরই ৩০ ডিসেম্বর নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মৃণাল সেন। অবসান ঘটে ‘রে-ঘটক-সেন’ যুগের। বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক সোনালি অধ্যায়ে দাঁড়ি পড়ে। আজ তাঁর ৯৬তম জন্মবার্ষিকী। মহান পরিচালকের জন্মদিবসে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ