Advertisement
Advertisement
Pallavi Dey Suicide Case

Pallavi Dey: গয়না, ফ্ল্যাটের ইএমআই দিতে জেরবার পল্লবী, মেজাজ হারিয়ে ছুঁড়তেন বাসন, জুতো

দু'বছর ধরে সাগ্নিকের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন পল্লবী।

Pallavi Dey Suicide Case: She Faced Economic crisis
Published by: Akash Misra
  • Posted:May 17, 2022 9:05 am
  • Updated:May 17, 2022 1:28 pm

অর্ণব আইচ: রোজগারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল খরচও। আর তা থেকেই মেজাজ হারাতেন পল্লবী। তাই টাকা রোজগার করতে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যও নিয়েছিলেন। কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে টাকা রোজগার করা যায় তা নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী পল্লবী দে (Actress Pallavi Dey)। টাকার চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেজাজ হারাতেন অভিনেত্রী।

দক্ষিণ কলকাতার গড়ফার গাঙ্গুলীপুকুরের কে পি রায় লেনের বাসিন্দা অভিনেত্রী পল্লবী দে ও তাঁর লিভ ইন পার্টনার সাগ্নিক চক্রবর্তীর প্রতিবেশিরা জানাচ্ছেন, দু’জনের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হত। আর তারই পরিণামে মেজাজ হারাতেন অভিনেত্রী পল্লবী। প্রচণ্ড জেদিও ছিলেন। প্রায়ই প্রতিবেশিরা শুনতে পেতেন ভিতর থেকে বাসনের মতো জিনিসপত্র ছোড়াছুড়ির শব্দ। আবার অনেক সময় দেখতেন, রেগে বাড়ির রেগে বাড়ির জিনিসপত্র, এমনকী, জুতোও বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন পল্লবী। এক প্রতিবেশী জানান, ওই সময় ওই ফ্ল্যাটটির সামনে যেতেও ভয় করত তাঁদের। তখন সাগ্নিককেই মূলত সামলাতে হত। গোলমাল দেখে উপরে উঠে আসতেন কেয়ারটেকারও।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, সাগ্নিক ও পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সোনার গয়না কিনতে শুরু করেছিলেন পল্লবী। এ ছাড়াও ফ্ল্যাট সাজিয়ে তোলার জন্য আরও নতুন জিনিস কিনতে শুরু করেন। তার উপর নতুন একটি ফ্ল্যাট কেনেন সাগ্নিক। নিউ টাউনে ৮০ লাখ টাকার ফ্ল্যাটের মধ্যে ৫৭ লাখ টাকা দেন পল্লবী (Pallavi Dey) নিজেই। তবে জানা গিয়েছে, বাড়ির টাকার ইএমআই বা মাসিক ঋণ শোধ করতেন তিনি। সাগ্নিক যে গাড়ি কেনেন, তার ইএমআইও মেটাতেন পল্লবী। একটি ব্যাঙ্কের জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে দু’জনের ১৫ লাখ টাকা ছিল। কিন্তু সেই টাকা ব্যাঙ্ক থেকে সাগ্নিক বের করতে চাইতেন না। নিজের জন্য প্রচুর সোনার গয়না ও জিনিসপত্র তিনি ইএমআইয়ে কেনেন। একসময় অভিনয় করে বেশ কিছু টাকা হাতে আসে পল্লবীর। পুলিশের কাছে খবর, তাঁর একটি সিরিয়াল শেষের দিকে। কিন্তু নতুন করে কোনও কাজ পাচ্ছিলেন না পল্লবী। পুলিশের কাছে সাগ্নিকের দাবি, তাই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন অভিনেত্রী। কারণ কীভাবে তিনি বিপুল টাকার ইএমআই শোধ করবেন, তা নিয়েই ভাবতেন তিনি। এদিকে, পুলিশের কাছে খবর, পল্লবীর সঙ্গে টলিউডেরই এক ব্যক্তির বন্ধুত্ব ও ঘনিষ্ঠতা হয়। সেই বিষয়টি ঘিরে সাগ্নিকের সঙ্গে পল্লবীর গোলমাল ছিল কি না, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

Pallavi Dey

[আরও পড়ুন: পল্লবী মৃত্যু মামলায় নয়া মোড়, সাগ্নিক ও তাঁর বান্ধবীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের ]

নিলু দের অভিযোগ অনুযায়ী, টাকা হস্তগত করার কারণেই তাঁর মেয়ে পল্লবীকে খুন করা হয়। পল্লবী (Bengali Actress Pallavi Dey) ও তাঁর মায়ের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সাগ্নিক নিজের অ্যাকাউন্টে হাতিয়ে নিয়েছেন। এতে সহযোগিতায় করেছেন ঐন্দ্রিলা সরকার তথা ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায়, যাঁর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় সাগ্নিকের। ওই যুবকের সঙ্গে ২০২০ সালে তাঁর মেয়ে পল্লবীর সম্পর্ক তৈরি হয়। ২০১৬ সাল থেকে মেয়ে টেলি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। গত রবিবার সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে সাগ্নিক জানায়, মেয়ে অচেতন। তাঁর স্ত্রী মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। নিলু দের ছেলেও ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন। গত এপ্রিল থেকে ওই ফ্ল্যাটে দু’জন স্বামী ও স্ত্রী বলেই থাকতেন। দে পরিবারকে সাগ্নিক বলেছিলেন যে, তাঁদের মধ্যে রেজিস্ট্রি বিয়ের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

Pallavi Dey Suicide Case

দু’বছর আগে সাগ্নিকের সঙ্গে  মেয়ের পরিচয় হয়। তখন থেকেই সাগ্নিক পল্লবী ও তাঁর মায়ের প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাখেন। সাগ্নিকের বাবার নামে কেনা নিউ টাউনের ৮০ লাখ টাকা ফ্ল্যাটের ৫০ লাখ টাকা দেন পল্লবী। এ ছাড়াও ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিটের ১৫ লাখ টাকা সাগ্নিক তাঁর ও পল্লবীর একটি  যৌথ অ্যাকাউন্টে রাখেন। একই সঙ্গে ঐন্দ্রিলার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় সাগ্নিকের। পল্লবী তার প্রতিবাদ করতে শুরু করলে সাগ্নিক তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করতেন। সেই মারের চিহ্ন পল্লবীর সহকর্মীদের চোখেও পড়ে। পল্লবী এর মধ্যেও যখন সাগ্নিককে বিয়ে করার কথা বলেন, তখন সাগ্নিক জানান, তাঁর ডিভোর্স হয়নি। তাই বিয়ে করবেন না। প্রতিনিয়ত মদ্যপান করতেন সাগ্নিক। গত ১২ মে পল্লবী শুটিংয়ে বেরিয়ে গেলে সাগ্নিক ঐন্দ্রিলা ও অন্য কয়েকজন বন্ধুকে ডেকে নিয়ে এসে সারাদিন ধরে ‘ফূর্তি’ করেন। যদিও ঐন্দ্রিলা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। মৃত্যুরর পর পল্লবীর মুখ, গলা ও দেহের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে অভিযোগ পরিবারের। পল্লবীর মৃত্যু হয়েছে জানা সত্ত্বেও সাগ্নিক তাঁদের অন্ধকারে রেখেছিলেন বলে পরিবারের লোকেরা অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগগুলি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। তারই ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: ‘কেজিএফ চ্যাপ্টার ২’কে টেক্কা, রেটিং তালিকার শীর্ষে ‘অপরাজিত’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ