সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সরগরম টলিপাড়া। এবার বকেয়া নয় বরং ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হলগুলির সার্ভিস চার্জ। একের পর এক বন্ধ হচ্ছে রাজ্যের সিঙ্গল স্ক্রিন হলগুলি। সম্প্রতি বন্ধ হয়েছে বেহালার ইলোরা এবং সোদপুরের মিনি রথীন্দ্র সিনেমাহল। আর্থিক সমস্যার কারণে বন্ধের মুখে প্রায় আরও অনেক প্রেক্ষাগৃহ। যার দরুণ অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের কথা ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচারস অ্যাসোসিয়েশন অর্থাৎ ইম্পা। তাঁদের দাবি, এবার থেকে পশ্চিমবঙ্গেও সিনেমার টিকিটে সার্ভিস চার্জ বসানো হোক।
[আরও পড়ুন: কঙ্গনাকে বয়কটের হুমকি, সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন একতা কাপুর]
মঙ্গলবার ঠিক দুটো কারণে সরগরম ছিল টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। প্রথমত, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে ইডির তলব। এবং দ্বিতীয়ত, সিনেমার টিকিটে সার্ভিস চার্জের ইস্যুতে ইম্পার বৈঠক। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে সিঙ্গল স্ক্রিনযুক্ত সিনেমাহলের সমস্যা বহুদিনের। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে এরপর হয়তো মাল্টিপ্লেক্স ছাড়া সিনেমা দেখাই উঠে যাবে। রাজ্যের সিঙ্গল স্ক্রিন হলগুলি অনেকদিন থেকেই ধুঁকছে। এ রাজ্যে সিঙ্গল স্ক্রিনযুক্ত সিনেমাহলের মালিকরা সার্ভিস চার্জ হিসেবে ২ থেকে ৩ টাকা পেয়ে থাকেন। তাঁদের দাবি, তা বাড়িয়ে ৫-১০ টাকা করা হোক। তবে, এই সমস্যার কথা যথাস্থানে বলার পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনওরকম সাহায্য পাননি তাঁরা। অন্যদিকে, ইম্পার দাবি তাঁরাও বিগত একবছর ধরে সিঙ্গল স্ক্রিনের সার্ভিস চার্জ বাড়ানোর কথা জানিয়ে আসছে। কিন্তু কোনওরকম ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে অবশেষে ১৯ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, নয়ের দশক থেকেই সিনেমার টিকিটে সার্ভিস চার্জ নেওয়া চালু হয়েছিল। তবে, মোদি সরকারের আমলে জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকে অন্যান্য যাবতীয় সব ট্যাক্স তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলি যেমন মহারাষ্ট্র, গোয়া, ত্রিপুরা এবং ঝাড়খণ্ড-সহ একাধিক রাজ্যে প্রেক্ষাগৃহ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সার্ভিস ট্যাক্স দেওয়ার নিয়ম চালু রয়েছে। ফলে সেসব রাজ্যে এই সমস্যা এতটা প্রকট নয়। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার মৌখিকভাবে সম্মতি জানালেও, লিখিত কোনও অনুমতি দেয়নি। যার জন্য হিন্দি এবং ইংরেজি ছবির ডিস্ট্রিবিউটররা সার্ভিস চার্জও দেন না। এই অবস্থায় প্রবল আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমাহল মালিকদের।
[আরও পড়ুন: ওয়েব প্ল্যাটফর্মে এবার ‘হেডকোয়াটার্স লালবাজার’-এর অন্দরের কাহিনি]
এই প্রসঙ্গে ইম্পার চেয়ারম্যান পিয়া সেনগুপ্ত জানান, “অনেকদিন ধরেই আলোচনা চলছে। তবে এবার যদি সরকার কোনওরকম পদক্ষেপ না নেন, তাহলে আমরা চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।” রাজ্যে একের পর এক সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হলগুলি আর্থিক সমস্যার মোকাবিলা না করতে পেরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সিঙ্গল স্ক্রিনের সংখ্যা ৯০০ থেকে ২০০-তে এসে দাঁড়িয়েছে। সূত্রের খবর, এর আগে যখনই ধর্মঘটের কথা উঠেছে স্বরূপ বিশ্বাসের মধ্যস্থতায় তা বাতিল হয়ে গিয়েছে। তবে, বর্তমান রাজ্য রাজনীতির পরিবর্তনের হাওয়া ইম্পার পালেও লেগেছে কিনা, সে সন্দেহই প্রকাশ করেছেন অনেকে।