ছবি ইনস্টাগ্রাম
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী শুনানি পর্যন্ত গায়ক সোনু নিগমের বিরুদ্ধে করা যাবে না কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ, সাফ জানাল কর্নাটক হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়, তদন্তের প্রয়োজনে আদালত গায়ককে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করার অনুমতিও দিয়েছে। এছাড়াও গায়ককে সামনাসামনি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তদন্তকারী অফিসার নিজে সোনুর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অবশ্য সোনুকেই সমস্ত খরচ দিতে হবে।
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর কর্নাটকের কনসার্টে অপ্রীতিকর মন্তব্যের জেরে রোষের মুখে পড়তে হয় সোনু নিগমকে। পহেলগাঁও কাণ্ড দেশের এক অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। যা নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল গায়কের বিরুদ্ধে। মামলা ওঠে হাই কোর্টে। অবশেষে বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত।
ঠিক কী হয়েছিল? ওই কনসার্টে একের পর এক হিন্দি গান গাওয়ার পর কন্নড় ভাষার গান গাওয়ার অনুরোধ আসতে থাকে গায়ক সোনু নিগমের কাছে। অভিযোগ, এরপর রীতিমতো দুর্ব্যবহারও করা হয় গায়ককে! রেয়াত করেননি সোনুও। পালটা দিতে গিয়ে পহেলগাঁও সন্ত্রাসের উদাহরণ দেখিয়ে তিনি বলেন, “এমন অসহিষ্ণু মনোভাবের জন্যই পহেলগাঁওয়ে হামলা হয়েছে।” সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল। সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় তাঁকে নিয়ে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে ‘উসকানিমূলক মন্তব্যে’র অভিযোগে সোনু নিগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ‘কর্নাটক রক্ষণা বেদিকে’ নামে এক সমাজসেবী সংস্থা। তাঁদের দাবি, “গায়ক পহেলগাঁও সন্ত্রাসের সঙ্গে কন্নড় ভাষা জুড়ে দিয়ে, কন্নড়ের মানুষদের ভাবাবেগে আঘাত হেনেছেন। এই অপমান আপামর কন্নড়বাসীর।” সংগঠনের দাবি, এতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হবে।
এই বিতর্কের পর ক্রমশই কোণঠাসা হয়েছেন সোনু নিগম। গায়কের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায়সংহিতার ৩৫২ ধারায় ইচ্ছাকৃতভাবে অপমানের অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়। জানা যায় সংশ্লিষ্ট ভাষার সিনে ইন্ডাস্ট্রিতেও তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমন আবহেই বেঙ্গালুরু পুলিশের তরফে তলব করা হয় সোনুকে। বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, গায়ককে নোটিস পাঠিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে থানায় হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আভালাহল্লী পুলিশ।
এরপর সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করেন সোনু নিগম। যেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “আমি যখন প্রথম গান গাইতে শুরু করি তখনই চার-পাঁচ জন ছাত্র কন্নড় গান গাওয়ার জন্য কার্যত হুমকি দিতে থাকে। দর্শকাসনে থাকা অনেকেই তাদের থামানোর চেষ্টা করছিল। সে কারণে ওই চার-পাঁচজনকে আমার বোঝানোর প্রয়োজন ছিল যে, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিরা প্যান্ট খুলতে বলেছিল, কোন ভাষায় কথা বলে জিজ্ঞাসা করেনি। আমি কন্নড়দের ভালোবাসি। তাঁরা সত্যিই খুব সুন্দর এবং মিষ্টি। তাঁরা আমার হৃদয়ের খুব কাছের। সুতরাং দয়া করে সকলকে মিশিয়ে ফেলবেন না। শুধুমাত্র চার-পাঁচজন ছেলের প্রতিই আমি ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম। সর্বত্রই এমন লোকজন থাকে। দর্শক হিসাবে তাদের আমাকে হুমকি দেওয়ার কোনও অধিকার নেই। আমার কন্নড় গানের প্রায় ঘণ্টাখানেকের একটি অ্যালবাম আছে। ভালোবাসার দুনিয়ায় যারা ঘৃণার বীজ পুঁতছে, তাদের রোখা প্রয়োজন। নইলে একদিন বিষবৃক্ষ কাটতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.