Advertisement
Advertisement
Spider-Man

Spider-Man: No Way Home: ৫ দিনে ১২১ কোটি! কোন জাদুতে বক্স অফিসে বাজিমাত স্পাইডারম্যানের

বছরের প্রথম ব্লকবাস্টার হয়ে উঠতে চলেছে 'স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম'।

Spider-Man No Way Home: why the movie emerge as 2021's first blockbuster in India। Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:December 21, 2021 10:21 pm
  • Updated:December 22, 2021 8:25 am

বিশ্বদীপ দে: ৫ দিনে ১২১ কোটি! মাত্র কয়েক দিনের হিসেবেই পরিষ্কার, ২০২১ সালে ভারতীয় বাজারে প্রথম ব্লকবাস্টার হয়ে উঠতে চলেছে ‘স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম’ (Spider-Man: No Way Home)। নিঃসন্দেহে অক্ষয় কুমারের ‘সূর্যবংশী’ সুপারহিট হয়েছে। কিন্তু সেই ছবিকেও পিছনে ফেলে বছরের সেরা ছবি হতেই পারে মাকড়সা মানুষের অভিযান। যদি আগামী দিনে ‘৮৩’, ‘পুষ্পা’, ‘অতরঙ্গী’র মতো ছবি এসে চ্যালেঞ্জ জানায়, তাহলে আলাদা কথা। না হলে এই গতিতে চলতে থাকলে সত্য়িই সব্বাইকে পিছনে ফেলে দেবে স্পাইডারম্যান (Spider-Man)।

ভাবলে সত্য়িই চমকে উঠতে হয়। অতিমারীর সময়ে চলচ্চিত্র ব্যবসা যখন ধুঁকছে, তখন ঘুরে দাঁড়াতে সত্য়িই এমন ছবি দরকার ছিল। কিন্তু তা বলে একটা হলিউডের ছবি এসে সলমন-অক্ষয়দের পিছনে ফেলে দিল, ব্যাপারটা কী? যাঁরা ইতিমধ্যেই ছবিটা দেখে ফেলেছেন তাঁরা হয়তো বুঝতে পারছেন। কিন্তু যাঁরা এখনও দেখেননি কিংবা স্পাইডারম্য়ানের ভক্ত নন অথচ ছবিটির সাফল্যে চমকে গিয়েছেন তাঁদের সকলেরই মনের মধ্যে এই প্রশ্ন বুজকুড়ি কাটাই স্বাভাবিক।

Advertisement

[আরও পড়ুন: 83 Movie Review: রণবীরের ডেভিলদের স্টেডিয়ামে বসে রুদ্ধশ্বাস দর্শন]

‘কনটেন্ট ইজ কিং’। বিল গেটসের কথাটাই বোধহয় স্পাইডারম্যানের নতুন ছবির সাফল্যের আসল মন্ত্র। মার্ভেল কমিকস ইউনিভার্স মানেই ঝাঁ চকচকে ভিএফএক্সের জৌলুস। কিন্তু এই ছবিতে ‘ট্রিট টু ওয়াচ’ মুহূর্ত অসংখ্য থাকলেও তাকে প্রাণভোমরা বলা যায় না। বরং গল্পের বুনোটই দর্শককে চেয়ার ছেড়ে নড়তে দেয় না। এমনিতেই ‘স্পাইডার-ম্যান: ফার ফ্রম হোম’ যেখানে শেষ হয়েছিল তা দর্শকদের কৌতূহল ধরে রাখার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। কিন্তু যে দর্শক ছবিটি দেখেননি, তিনিও এই ছবির শুরু থেকেই ভাবতে বসবেন। কেননা স্পাইডারম্যানের পরিচয়ই যে ফাঁস হয়ে গিয়েছে! এখন সবাই জানে কলেজে পড়া এক নিতান্ত ছোকরা পিটার পার্কারই মাকড়সা মানুষ হয়ে চোখের নিমেষে উড়ে চলে গগনপথে। ঠিক ওড়ে না। বরং জাল বেয়ে এগিয়ে চলে। একদিকে খ্যাতি। সেই সঙ্গে জুটছে অসম্মানও। সে হয়ে গিয়েছে ভিলেন! সকলের কৌতূহলের কেন্দ্রে এখন পিটার, তার বান্ধবী এমজে ও অভিন্নহৃদয় বন্ধু নেড।

Advertisement

Spiderman-1

[আরও পড়ুন: জ্যাকলিন, নোরার পর পছন্দের তালিকায় শ্রদ্ধা ও শিল্পা! ইডির জেরায় তথ্য ফাঁস ‘ঠগ’ সুকেশের]

সকলেই জানেন, আসল পরিচয় লুকিয়ে রাখাই যে কোনও সুপারহিরোর অন্যতম লক্ষ্য। আর এখানেই দর্শককে সহজে গ্রাস করে পিটারের অস্বস্তি। ছবির শুরু থেকেই দর্শক অনায়াসে রিলেট করতে পারে তার সমস্যার সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত ডক্টর স্ট্রেঞ্জের কাছে হাজির হয়ে ঘড়ির কাঁটাকেই কার্যত পিছন দিকে ঘোরানোর দাবি করে পিটার। যে করেই হোক আবার পৃথিবীর সব লোককে ভুলিয়ে দিতে হবে তার পরিচয়। আর সেখানেই শুরু সমস্যার। পিটারের জন্য়ই ঘেঁটে যায় স্ট্রেঞ্জের কলাকৌশল। মাল্টিভার্সের গোলমালে গল্পে এরপর ঢুকে পড়তে থাকে স্পাইডারম্য়ানের পুরনো দিনের কাহিনির ভিলেনরা। ডক্টর অক্টোপাস ওরফে ডক অক, গ্রিন গবলিন, স্যান্ডম্যান, লিজার্ড, ইলেক্ট্রোর মতো ভয়ংকর সব খলনায়কদের ভিড়ে স্পাইডারম্য়ান একা! কী হবে এবার? এরপর আর কিছু বললে স্পয়লার হয়ে যায়। কেবল এটুকুই বলার, এরপর যা ঘটে তাতে হলজুড়ে হাততালির বন্যা বয়ে যেতে থাকে।

একেবারে ক্লাইম্যাক্স পর্যন্ত একই রকম টানটান ‘নো ওয়ে হোম’। সেই সঙ্গে ছবিতে রয়েছে নানা আবেগঘন মুহূর্ত। যার কেন্দ্রে স্পাইডারম্যানরূপী টম হল্যান্ডই। আগের ছবিগুলির তুলনাতেও তিনি এই ছবিতে অনেক বেশি পরিণত। উইথ গ্রেট পাওয়ার কামস গ্রেট রেসপন্সিবিলিটি। সেই গত শতকের ছয়ের দশকে স্পাইডারম্যানের গল্প শুরু হওয়ার পর থেকেই এই একটি বাক্য যেন সমস্ত কাহিনিরই চুম্বক। ক্ষমতা থাকা মানেই তার ওজনটা বুঝতে শেখা। এই ছবি থেকেই তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে শুরু করেছে কিশোর পিটার। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা, প্রিয়জনদের বিপন্নতা তার মনের মধ্যে বুনে দিয়েছে লড়াইয়ের বীজ। চোখে জল নিয়েও চোয়াল শক্ত করে যেভাবে সে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুদের মোকাবিলায়, তা সুপারহিরোর গ্ল্যামারকে টপকে আমাদের সকলের দৈনন্দিন লড়াইকেও যেন প্রতিফলিত করতে থাকে। আর সেই ক্যাথারসিসের প্রাবল্য দর্শককে চরিত্রটির সঙ্গে আরও বেশি একাত্ম করে দেয়। ট্রেলার মুক্তি থেকেই পারদ চড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু ছবিটি বোধহয় সব প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এটাই কি সর্বকালের সেরা স্পাইডারম্য়ান ছবি?

Spider-Man-2

চোখধাঁধানো গ্রাফিক্স ও চমৎকার এডিটিং। সেই সঙ্গে সকলের দুরন্ত অভিনয়। উত্তেজনার ফাঁকে ফাঁকেই চমৎকার সরস সব মুহূর্তও তৈরি হয়ে যায়। এই ব্যালান্সটাও ছবিকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। ছবির একেবারে শেষে পোস্ট ক্রেডিটে পরের পর্বের ইঙ্গিত রয়েছে। যেমনটা মার্ভেলের ছবিতে থাকে। সেই জায়গা থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রতীক্ষা। এরপর কী করবে পিটার? ছবির শুরুতে সে ছিল এক সমস্যায়। শেষে এসে সে দাঁড়াচ্ছে আরেক সমস্যায়। পরের ছবিটার বক্স অফিসের ইঙ্গিতও এখান থেকেই আঁচ করা যায়। মার্ভেল ভক্তরা তো বটেই, যারা সচরাচর এই ধরনের ছবি দেখেন না, অপেক্ষা শুরু হয়ে যায় তাঁদেরও। আর সেটাই স্পাইডারম্যানের সাফল্যের আসল চাবিকাঠি। এই ম্যাজিকেই সাগরপারের ছবি হয়েও তা বলিউডকে সরিয়ে ২০২১ সালের সেরা ছবি হয়ে উঠেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ