Advertisement
Advertisement

Breaking News

নাটক

রাষ্ট্রব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল নাটক ‘লেফট রাইট লেফট’

নাটকের বুননে বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতাও প্রকটভাবে ধরা দিয়েছে৷

A brief review of the contemporary dramma 'Left Right Left'
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 13, 2019 4:56 pm
  • Updated:April 13, 2019 4:56 pm

সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়: সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার তপন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হল ‘নাট্যজন’ প্রযোজিত নাটক ‘লেফট রাইট লেফট’৷ মৈনাক দাশগুপ্ত রচিত এই নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন সন্দীপ ভট্টাচার্য৷ রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতা ও তার অপব্যবহার নিয়ে তৈরি এই নাটকটি অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং প্রাসঙ্গিক৷

                                           [ আরও পড়ুন: কবীর সুমনকে পালটা, ফেসবুকে খোলাখুলি ‘নিজেকেই’ চিঠি লিখলেন অনিকেত]

নাটকের শুরুতেই আমরা দেখতে পাই আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ডঃ প্রশান্ত বোসকে, যিনি ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত এবং অভিযুক্ত, যাঁর আত্মপক্ষ সমর্থনে সহায়তা করতে হাজির হচ্ছেন না শহরের কোনও আইনজীবী৷ নাটক এগোতে থাকে এবং পরতে পরতে উন্মোচিত হতে থাকে ডঃ প্রশান্ত বোসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নেপথ্যে থাকা বৃত্তান্ত৷ দেখা যায়, বস্তুতান্ত্রিক সভ্যতার আবেগহীনতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে ডঃ প্রশান্ত বোস স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়েছেন শহর থেকে বহু দূরে৷ যেখানকার মানুষ হতদরিদ্র এবং আধুনিক সভ্যতার সমস্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত৷ প্রশান্তবাবুর অপরাধ এটাই যে তিনি পাণ্ডববর্জিত এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত এক যুবকের চিকিৎসা করছিলেন৷

Advertisement

natak-1

Advertisement

আমাদের বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা এবং জটিলতার ফলে প্রশান্তবাবু সত্যিই অপরাধী কিনা, তা প্রমাণিত হয় না৷ অন্যান্য অনেক বন্দির মতোই তাঁর বন্দিদশা দীর্ঘায়িত হতে থাকে৷ নাটকটি দেখতে দেখতে ফ্রানৎস কাফকার ‘দ্য ট্রায়াল’ উপন্যাসের ‘জোসেফ কে’ চরিত্রটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল৷ ডঃ প্রশান্ত বোসের ভূমিকায় সুমন পাল যথাযথ অভিনয় করেছেন৷ পুরো নাটকটিতে অভিনয়ের মধ্যে তিনি একটা সুর ধরে রেখেছেন, যা ধারাবাহিকভাবে আবেগবর্জিত এবং কিছুটা উদাসীন৷

                                           [ আরও পড়ুন: দেবের মন্তব্যে মেজাজ হারিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দিলেন কবীর সুমন]

ডঃ প্রশান্ত বোসের স্ত্রী এবং পুত্রের সঙ্গে সহ-নাগরিকদের দুর্ব্যবহার এবং পরবর্তী সময়ে পু্ত্র প্রতীককেও ‘দেশদ্রোহী’ বলে চিহ্নিত করা হয়৷ কারণ, সে দেশের মানুষের দারিদ্রকে ফ্রেমবন্দি করতে চায়৷ নাটকের শেষে প্রতীকের সঙ্গে আমরা একাত্ম বোধ করি এবং ভরসাহীন দুঃসময়েও কোথায় যেন ক্ষীণ আশার আলো সন্ধান দেন নাট্যকার, এখনও সমস্ত মস্তিষ্ক, এখনও সমস্ত কলম বিক্রি হয়ে যায়নি৷ কেউ কেউ এখনও স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কাটার সাহস দেখাচ্ছেন৷ আদালতের এজলাসে বিচারকের পরিবর্তে প্লাস্টিকের মূর্তি বসিয়ে রেখে পরিচালক নাটকের বক্তব্যে একটি অন্য মাত্রা যোগ করেছেন৷ আমাদের বিচারব্যবস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং আমাদের বিপন্নতার মুখোমুখি দর্শকদের দাঁড় করিয়ে দেন নাট্যকার৷ সরকারি উকিল এবং গোয়েন্দার ভূমিকায় রাহুলদেব ঘোষ প্রশংসার দাবি রাখেন৷ ঊহিনীর ভূমিকায় শৈলী দত্ত যথাযথ৷ অন্যান্য অভিনেতা, অভিনেত্রীরও যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ