সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেমের কোনও বয়স হয় না। হয় না কোনও লিঙ্গ। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে প্রেমকে ছকে বাঁধতে চাওয়া ভিত্তিহীন। ষাটোর্ধ দম্পতির মধ্যেও যেমন প্রেম বিদ্যমান, তেমনই প্রাণচঞ্চল এক তরুণীর ভাল লাগতেই পারে আর এক তরুণীকে। এই কথাই উঠে এল গায়ক শৌনক চট্টোপাধ্যায়ের নতুন সিঙ্গলস ‘এসো আমার ঘরে’তে।
ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে গানটি এনেছে আশা অডিও। রবীন্দ্রসংগীতটিকে নিজের মতো করে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়েছেন শৌনক। ব্যবহার করেছেন মীরার ভজন। গানে তিন জুটির কথা বলা হয়েছে। প্রথমটি এক নববিবাহিত দম্পতির গল্প। তাদের প্রেম মানেই উষ্ণতায় ভরপুর। প্রেমের ডানায় ভর করে যুবক যুবতীর এটি উড়ে বেড়ানোর সময়। স্ত্রীর মনে পড়ছে দাদাকে। বউকে খুশি করতে দাদাকে ডেকে আনে বর। সারপ্রাইজে মুগ্ধ তরুণী। তার চোরা দৃষ্টি সেই কথাই বলে দেয়। তবে ষাটোর্ধ দম্পতির প্রেম কিন্তু এমন নয়। তাদের কাছে প্রেম মানে যত্ন। জীবন সায়াহ্নে এসে রক্তিম গোলাপ এনে যে সবসময় প্রেম বোঝানো যায়, তা নয়। স্বামী যখন কাগজ পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়ে, স্ত্রী তখন পরম যত্নে কাগজ সরিযে রেখে চোখ থেকে চশমাটা খুলে দেয়। সেটাও এক রকম প্রেম। এর মধ্যে ঘনিষ্ঠতা নেই, উদ্দামতা নেই। আছে শান্ত অনাবিল স্নেহ মাখানো ভালবাসা।
[ আরও পড়ুন: লাগামছাড়া উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং সম্পর্কের টানাপোড়নের গল্প উঠে এল ‘সুরমা’ নাটকে ]
এ তো গেল নারী-পুরুষের সম্পর্কের গাথা। কিন্তু যদি কোনও নারী ভালবাসে অপর কোনও নারীকে, বা পুরুষ আর একজন পুরুষকে? সে কি প্রেম নয়? অবশ্যই। প্রেমের ভাষা যে লিঙ্গভেদ মানে না। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ভালবাসা ভালবাসাই। সমকামিতা এখন মুক্ত বিহঙ্গ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সমলিঙ্গে প্রেমে আর কোনও বাধা নেই। কিন্তু সমাজ এখনও সাবালক হয়ে উঠতে পারেনি। নারীতে নারীতে প্রেম বা পুরুষে পুরুষে প্রেম এখনও বাঁকা নজরে দেখা হয়। কিন্তু ভ্যালেন্টাইনস ডে তো তাদেরও। এমন দুই নারীর গল্প উঠে এসেছে গানটিতে। যারা একে অপরকে ভালবাসে। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারে না। দু’জনেই জানে স্রোতের বিপরীতে ভাসার ক্ষমতা নেই তাদের। একদিন হারিয়ে যেতে হবে গতানুগতিকতার মধ্যেই। কিন্তু প্রেমের দিনটা না হয় একটু অন্যরকম হোক। একটু না হয় উপভোগ করা যাক একে অপরের সান্নিধ্য।
‘এসো আমার ঘরে’র ভিডিওটি এই তিন গল্পের উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে। শৌনক নিজেও অভিনয় করেছেন ভিডিওয়। তিনটি গল্পের মধ্যে যোগসূত্র তিনিই। এটি পরিচালনা করেছেন সম্বৃদ্ধ গঙ্গোপাধ্যায়। চিত্রনাট্য লিখেছেন বৈশালী বাগচি।