Advertisement
Advertisement

Breaking News

Egg Production

ডিম উৎপাদনে রাজ্যকে স্বনির্ভর করছে জঙ্গলমহল, নতুন বছরে টার্গেট ১৫০০ কোটি

এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যে বছরে ডিমের চাহিদা ১,৪৪০ কোটি।

Animal Husbandary department of WB Govt targets 1500 crores egg production in next year to fulfil demands | Sangbad Pratidin

ছবি: সুনীতা সিং।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 12, 2023 8:40 pm
  • Updated:December 12, 2023 8:40 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: প্রাণীপালনে ঝোঁক বাড়িয়ে নতুন বছরে ডিম (Egg) উৎপাদনে আরও বৃদ্ধি চায় জঙ্গলমহল। গত আর্থিক বছরের নিরিখে ডিম উৎপাদনে সেরা পশ্চিম মেদিনীপুর। তার পরেই রয়েছে বাঁকুড়ার স্থান। প্রথম তিনে জঙ্গলমহলের আরেক জেলা পুরুলিয়া (Purulia) না থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এই জেলা এখন ডিম উৎপাদনে অনেকটাই স্বনির্ভর। পড়শি জেলা বাঁকুড়া থেকে বনমহলের এই জেলায় ডিম এলেও প্রান্তিক পুরুলিয়ার ডিম যায় ঝাড়খণ্ডেও।

সাম্প্রতিককালের গড় হিসাব অনুযায়ী এই জেলায় প্রতিদিন ডিম উৎপাদন হয় প্রায় ১৬ লক্ষ। গত আর্থিক বছরের নিরিখে এই জেলায় ডিম উৎপাদন হয়েছে ৫৯.৬৭ কোটি। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ডিম উৎপাদনে রাজ্যকে স্বনির্ভর করতে চায়। সেই কারণেই জঙ্গলমহলের (Junglamahal) জেলাগুলোর উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ এখানকার মানুষজনই প্রাণীপালনে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মাস থেকে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে ডিমের উৎপাদন আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যে সারা বছর ডিমের চাহিদা ১,৪৪০ কোটি। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগীয় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ (Swapan Debnath) জানিয়েছেন, নতুন বছর থেকে ১৫০০ কোটি ডিম উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

Advertisement

তিনি বলেন, “ডিম উৎপাদনে আমরা ২০২৪-এ স্বনির্ভর হতে চাই। এই কাজে জঙ্গলমহল বড় ভূমিকা নিচ্ছে। কারণ আগের চেয়ে এখানে প্রাণীপালনে অনেক ঝোঁক বেড়েছে। নতুন বছর থেকে আমরা সারা বছরের নিরিখে প্রায় ১,৫০০ কোটি ডিম উৎপাদন করতে পারব।” 

Advertisement
ছবি: সুনীতা সিং।

রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই প্রান্তিক পুরুলিয়া ডিম উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে। গত ১০ বছর ধরেই তা চোখে পড়ছে। তবে বিগত ৫ বছরে সবচেয়ে বেশি। এই জেলার প্রান্তিক জনজাতির মানুষজনরা হাঁস, মুরগির পালন আরও বাড়ানোয় এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া উৎপাদনের ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে। ২০১৭ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনসেন্টিভ স্কিমের অধীনে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য পান। এর জন্য রাজ্যের নীতি প্রশংসিত।

[আরও পডুন: সরকারি কোষাগার থেকে টাকা নয়ছয় জ্যোতিপ্রিয়র হাত ধরেই! তথ্য ইডির চার্জশিটে]

তবে এই আশার আলোর মধ্যে চলতি আর্থিক বছরে খানিকটা হতাশার ছবিও রয়েছে বনমহলের জেলা পুরুলিয়ায়। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ পুরুলিয়াকে চলতি আর্থিক বছর ৭৮ হাজার ৪৯০ জনকে মুরগির ছানা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়। সেই সঙ্গে ৯,৮৮০ টি হাঁসের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই দুই ক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী প্রত্যেককে ১০ টি করে হাঁস বা মুরগি ছানা দিতে হবে, যা ২৮ দিনের বাচ্চা। কিন্তু এই কাজে পুরুলিয়া খানিকটা পিছিয়ে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অর্ধেকে পৌঁছয়নি। অথচ হাতে আর সাড়ে তিনমাস সময় রয়েছে। এই ২৮ দিনের হাঁস-মুরগি বাচ্চা থেকেই ডিম উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে এই কাজে জঙ্গলমহল মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ার কাজ আশানুরূপ।

জঙ্গলমহলের জেলা গুলিতে মূলত চারটি স্তর থেকে ডিম উৎপাদন হয়ে থাকে। একটি হল ব্যাকওয়ার্ড পোল্ট্রি। বিভিন্ন বাড়িতে হাঁস-মুরগি প্রতিপালন থেকে যে ডিম উৎপাদন এর আওতায় পড়ে। এছাড়া বেসরকারি খামার ও সরকারি ইনসেনটিভ প্রকল্পের আওতায় থাকা খামার। সেই সঙ্গে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্প। তবে গত এক বছরে এই প্রকল্প থেকে সেভাবে ডিম উৎপাদন হয়নি পুরুলিয়ায়। তাছাড়া এই জেলায় সরকারি কোনও মুরগি খামার নেই। পুরুলিয়ার বেলগুমায় যে রাজ্য পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে, সেখান থেকে হাঁসের বাচ্চা তৈরি করা হয়। রাজ্যের নির্দেশে খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁস থেকে এই কাজ করা হয়ে থাকে। ১ দিনের বাচ্চাগুলো চলে যায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে। তারা ২৮ দিন প্রতিপালন করে তা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে উপভোক্তাদের মধ্যে বিলি করা হয়। এই কাজের মধ্যে দিয়েও আয়ের মুখ দেখে ওই গোষ্ঠীগুলি। ২৫ টাকা পিছু হাঁসের ছানা কিনে তা ৬৫ টাকায় বিক্রি করে।

[আরও পডুন: Narendra Modi: ‘ভারতে কংগ্রেস আছে, মানি হেইস্টের দরকার কী?’, তোপ মোদির]

ডিম উৎপাদনের মধ্য দিয়ে সমগ্র রাজ্যের সঙ্গে জঙ্গলমহলে ব্যাপক কর্মসংস্থান বাড়ছে। বাড়ছে রাজ্যের ইনসেনটিভ স্কিমের আওতায় বেসরকারি পোল্ট্রি প্রকল্প। রাজ্যের উদ্যোগে জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার এক নম্বর ব্লকের গোবিন্দপুর এলাকায় তৈরি হচ্ছে সরকারি পোল্ট্রি ফার্ম (Poultry Farm)। যেখানে ২ লক্ষ ২৪ হাজার মুরগি থাকবে। পরিবেশবান্ধব এই প্রকল্প সেমি অটোমেটিকও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ