জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: ঘূ্র্ণিঝড় আমফানের দাপটে নদীর বাঁধ ভেঙে প্রচুর নোনা জল ঢুকেছে চাষের জামিতে। যার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধান, সবজির। সেইসঙ্গেই নষ্ট হয়েছে আম-লিচু-কলা অর্থাৎ ফলও। যার জেরে মাথায় হাত চাষিদের। সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় তাঁরা।
বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি, বাদুড়িয়া, স্বরুপনগর, হিঙ্গলগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকায় সবজির পাশাপাশি আম, লিচু, কলার চাষ করেন বহু কৃষকরা। যাদের মধ্যে অধিকাংশই ঋণ নিয়ে ফল চাষ করেন। ফলন উঠলে বিক্রি করে ধার শোধ করেন তারা৷ কিন্তু চলতি বছরে আমফানের দাপটে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফলের। তাই কী হবে আগামীতে সেই দুশ্চিন্তাই গ্রাস করেছে চাষিদের। চাষিদের কথায়, “সারাবছর টুকটাক বিক্রি চললেও মূলত মে থেকে জুলাইয়ে মাঠের ফলন, আম, লিচু, কলা বিক্রি করি। কিন্তু লকডাউনের কারণে বছরের শুরুতে সেভাবে বিক্রি হয়নি। এর মধ্যেই আমফান ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে বসিরহাট। নোনা জলে নষ্ট হতে বসেছে গাছ।” হাড়োয়ার সালিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষি রবিউল মোল্লা বলেন, “গাছের গোড়ায় নোনা জল জমে থাকায় আম, কাঁঠাল, সিঙ্গাপুরী কলা গাছ মরে যাচ্ছে। পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। রোদ উঠতেই গাছের গোড়ায় পচন ধরা শুরু করেছে।” সালিপুর গ্রামের কলাচাষি জগদীশ প্রামাণিক বলেন, “প্রচুর টাকা ঋণ নিয়ে কলা চাষ করেছিলাম। নদীর নোনা জল ঢুকে সবশেষ। আমার মতো অনেক চাষির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হল। এখন কী করব জানি না।”
[আরও পড়ুন: পঙ্গপালের তাণ্ডবে রাজস্থানে বিপুল পরিমাণ ফসলের দফারফা, চাষিদের মাথায় হাত]
ঋন পরিশোধ তো দূরের কথা সংসার চালাতে ঘাম ছুটছে তাঁদের বলে জানিয়েছেন একাধিক চাষি। বাধ্য হয়ে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের আরজি জানাচ্ছেন সকলেই। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত কলা চাষিরা হাড়োয়ার বিডিওর কাছে তাঁদের সমস্যার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন বিডিও দীপঙ্কর দাস। কিন্তু কতদিনে কী হবে, তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না তাঁরা।