মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: এক পশলা বৃষ্টিতে ডুবে গেল আমতা ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বিস্তীর্ণ এলাকার ধানজমি। প্রায় খানচারেক গ্রাম পঞ্চায়েতের জমির ধান কার্যত জলের তলায় চলে গিয়েছে। এতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ধানচাষিরা। কৃষকরা জানিয়েছেন, এমনিতেই দিনকয়েক ধরে ঝড়বৃষ্টিতে ধানজমিতে সামান্য জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তার উপর শুক্রবার ভোররাতে হঠাৎ প্রবল বৃষ্টি হয়। প্রায় ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় ধরে বৃষ্টি চলে। কোথাও এক হাঁটু তো কোথাও এক ফুট জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
মূলত আমতা-২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া চিতনান, কাশমলি ও ঝামটিয়া, এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। তাতেই সমস্যায় পড়েছেন ধানচাষিরা। ধানচাষিরা জানান, প্রবল ঝড়ের আশঙ্কায় চাষিরা দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। মজুরের সমস্যায় অনেকেই ধান কেটে বাড়ি তুলতে পারছিলেন না। আপাতত তাঁরা তা মাঠে রেখেছিলেন। দিনকয়েকের মধ্যেই তা তাঁদের ঘরে তুলে নেওয়ার কথা। আর তার মাঝেই শুক্রবার ঘণ্টাখানেকের প্রবল বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়ে গেলেন চাষিরা। উত্তর ভাটোরার ধানচাষি প্রশান্ত সামন্ত, নিরঞ্জন গায়েন-সহ একাধিক চাষির বক্তব্য, “বৃষ্টির পর সকাল থেকেই মাঠে চলে যায় ধানের অবস্থা দেখতে। দেখি জমিতে এক হাঁটুর কাছাকাছি জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কাটা ধান জলে ভাসছে। যদি এই অবস্থায় আর একদিন কাটা ধান জলে রয়ে যায় তাহলে সেই ধান থেকে কলা বেরিয়ে যাবে।”
[আরও পড়ুন: লকডাউনে বন্ধ সস তৈরির কারখানা, কুমড়ো রপ্তানি না হওয়ায় মাথায় হাত কৃষকদের]
তাই তাড়াতাড়ি ধান জল থেকে তুলে ডাঙায় রাখার চেষ্টা করছেন চাষিরা। কিন্তু আকাশের মুখ যে ভার। তাতেই তারা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। প্রশান্ত সামন্ত বলেন, “আবার যদি বৃষ্টি হয় জানি না ধানের কী অবস্থা হবে।” সেই আশঙ্কাতেই দিন গুনছেন গ্রামের চাষিরা। ফের বৃষ্টি হলে সমস্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছে প্রশাসনও। ভাটোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক গায়েন বলেন, “আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় বারোশো বিঘা জমির অনেক ধান জলের তলায় চলে গিয়েছে হঠাৎ বৃষ্টিতে। পঞ্চায়েত সমিতিকে বিষয়টা জানিয়েছি। ব্লক প্রশাসনকেও জানাব।” আমতা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, “আমাদের এলাকার চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষিরা হঠাৎ বৃষ্টির জেরে সমস্যায় পড়েছেন। আমরা বিষয়টির প্রতি নজর রেখেছি। আমরা তা জেলা প্রশাসনকে জানাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মানুষের পাশে রয়েছে।”