সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গর্জালেও গত চার দশকে সেই অর্থে বর্ষায়নি চিন। ফলে দুই বাহিনীর মধ্যে ছোটখাটো মারামারির ঘটনা ছাড়া প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (LAC) কখনও রক্তক্ষয়ী আকার ধারণ করেনি সংঘর্ষ। কিন্তু গত সোমবার, প্রায় ৪৫ বছর পর ফের গুলি বিনিময় হল ভারত ও চিনের মধ্যে। সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ভারতীয় সেনার তিন জওয়ান। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ চিনা সেনারও।
[আরও পড়ুন: লাদাখে চিনের ছোবল, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং]
গতকালের ঘটনা ফের উসকে ৪৫ বছর আগের সেই এক রক্তাক্ত অধ্যায়ের স্মৃতি। দিনটা ছিল ১৯৭৫ সালের ২০ অক্টোবর। আর পাঁচটা দিনের মতোই অরুণাচল প্রদেশে প্রকৃত নিয়মন্ত্রণরেখায় টহল দিচ্ছিলেন অসম রাইফেলস-এর ২৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা। টহলের রাস্তায় শেষ জনপদ হচ্ছে তাওয়াং জেলার থিঙবু তেহসিলের মাগো গ্রাম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ২৪০ মিটার উচ্চতায় থাকা মাগো গ্রাম ছেড়ে জওয়ানরা এগিয়ে যান আরও ওপরে। হিমালয়ের কোলে দুর্গম এবং প্রত্যন্ত গিরিবর্ত্ম তুলুঙ লায়ের দিকে। কৌশলগত দিক থেকে সীমান্ত রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৪ হাজার ৮৬৩ মিটার উঁচুতে থাকা ওই গিরিপথ। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই তাঁদের উপর গুলি বৃষ্টি শুরু করে চিনা ফৌজ। পালটা জবাব দেন ভারতীয় জওয়ানরাও। ওই ঘটনায় শহিদ হয়েছিলেন অসম রাইফেলসের চার সিপাহী। পড়ে জানা যায়, রাতের অন্ধকারে গিরিপথের একটি দুর্গম অংশ দিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে চিনা বাহিনীর গোটা একটি প্লাটুন। তবে লড়াই শেষে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে হানাদার বাহিনীকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
যদিও এই ঘটনা সেভাবে প্রচারের আলোয় আসেনি। বেশিরভাগ মানুষই জানেন, ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর ১৯৬৭ সালে সিকিমে নাথু লা এবং চো লা গিরিপথের সংঘর্ষই ভারত-চিনের মধ্যে শেষ বড় লড়াই। সেবার কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দুই গিরিপথ দখল করতে আচমকাই হামলা চালিয়েছিল চিনা বাহিনী। তবে পাঁচদিনের লড়াইয়ের শেষে ৪০০ জওয়ান খুইয়ে শেষমেশ রণে ভঙ্গ দেয় বেজিং। এরপর ফের ১৯৭৫ সালে যে সংঘর্ষ বড় আকার নিয়েছিল তা স্পষ্ট করে সংবাদমাধ্যমে বিবৃত দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব নিরূপমা রাও।