Advertisement
Advertisement
ঠেলাগাড়িতে মৃতদেহ

অ্যাম্বুল্যান্স দেয়নি হাসপাতাল, ঠেলাগাড়িতে আত্মীয়ের মৃতদেহ বইলেন আদিবাসী দম্পতি

ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্টের বদলে থানায় খবর দিলে ভাল হত, বলছে প্রশাসন।

couple carry relative to hospital in push cart in puducherry

ছবি সৌজন্য: টুইটার

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:November 3, 2019 3:18 pm
  • Updated:November 3, 2019 3:21 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উৎসবে মরসুমে বাড়িতে বেড়াতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক আত্মীয়। অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে ইট বহনকারী ঠেলাগাড়িতে করে চার কিলোমিটার রাস্তা দৌড়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান এক আদিবাসী দম্পতি। কিন্তু, রাস্তাতেই মৃত্যু হয় ওই অসুস্থ রোগীর। এরপর তাঁর মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স চান ওই দম্পতি। কিন্তু, আইনের দোহাই দিয়ে তা দিতে চায়নি হাসপাতাল। বাধ্য হয়ে ফের ওই ঠেলাগাড়িতে করেই মৃতদেহটি ফিরিয়ে আনছিলেন তাঁরা। কিন্তু, এই ঘটনার খবর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেই একটি রাজনৈতিক দলের লোকজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। একটি অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে মৃতদেহটি বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ঘটনাটি ঘটেছে পুদুচেরির সুথুকেনি এলাকায়।

[আরও পড়ুন: ভারতে একযোগে ফিদায়েঁ হামলার ছক লস্কর-জইশের, গোয়েন্দা রিপোর্টে চাঞ্চল্য]

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তামিলনাড়ুর ভিল্লুপুরম জেলার ওজানথিয়াপেটের বাসিন্দা ইরুলা সম্প্রদায়ভুক্ত আদিবাসী যুবতী মাল্লিগার সঙ্গে পুদুচেরির এক ব্যক্তির বিয়ে হয়েছিল। এরপর পুদুচেরির সুথুকেনি গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন তিনি। স্থানীয় একটি ইটভাটায় স্বামীর সঙ্গে কাজও করতে শুরু করেন। কয়েকদিন আগে তাঁদের বাড়িতে ওজানথিয়াপেট থেকে ঘুরতে আসেন মাল্লিগার দিদি ও জামাইবাবু সুব্রমণি। আর এখানে আসার পরেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন দীর্ঘদিন ধরে যক্ষ্মায় আক্রান্ত সুব্রমণি। গত বুধবার আচমকা তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়। পরিস্থিতি দেখে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মাল্লিগা, তাঁর স্বামী ও সুব্রমণির স্ত্রী। এলাকায় কোনও অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে কী করবেন বুঝে ওঠতে পারছিলেন না তাঁরা। বাধ্য হয়ে ইট বহনকারী একটি ঠেলাগাড়িতে সুব্রমণিকে তুলে চার কিলোমিটার দূরে থাকা হাসপাতালে দৌঁড়ে পৌঁছন। কিন্তু, সেখান যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু, তাতেও বিপত্তি কমেনি ওই দম্পতি এবং সুব্রমণির স্ত্রীর। মৃতদেহটি নিয়ে তামিলনাড়ুর বাড়িতে ফিরতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স চান তাঁরা। কিন্তু, তাতে রাজি হয়নি কর্তৃপক্ষ। উলটে তাঁদের জানায় সরকারি আইন অনুযায়ী, পুদুচেরির বাইরে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। বাধ্য হয়ে মৃতদেহটি ফের ঠেলাগাড়িতে উঠিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা।

Advertisement

ওই দম্পতি যখন ঠেলাগাড়িতে করে অসুস্থ সুব্রমণিকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন তখন পথচারীরা বিষয়টি দেখেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি। উলটে তাঁদের ছবি তুলে স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেন। বিষয়টি ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় কাট্টারিকূপম থানার পুলিশ। খবর দেওয়া এসডিপিআই নামে একটি রাজনৈতিক দলের সদস্যদেরও। এরপর ওই সদস্যরা একটি অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে সুব্রমণির মৃতদেহটি তাঁর তামিলনাড়ুর বাড়িতে পৌঁছে দেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন:কর্ণাটকে কুমারস্বামী সরকারের পতন ঘটিয়েছেন খোদ অমিত শাহ! স্বীকারোক্তি ইয়েদুরাপ্পার]

এপ্রসঙ্গে স্থানীয় পুলিশ আধিকারিক জে মুরুগানন্দন বলেন, ‘ইরুলা উপজাতির ওই দম্পতি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। সংসারের অভাব মিটিয়ে মোবাইল কেনার সামর্থ্য হয়নি তাঁদের। শেষপর্যন্ত সুব্রমণিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইট বহনকারী একটি ঠেলাগাড়ি জোগাড় করে নিয়ে আসেন। কিন্তু, রাস্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। বাড়ি ফিরতে ফের ওই ঠেলাগাড়িতেই ভরসা রাখেন তাঁরা। যদিও বিষয়টি জানতে পেরে মৃতদেহটি বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন। ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি জানতে পারলে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা যেত। পথচারীরা ছবি তোলার পাশাপাশি যদি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা থানাকে খবর দিত তাহলে ভাল হত। ওই ব্যক্তির প্রাণও বাঁচত।’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ