Advertisement
Advertisement

Breaking News

Omar Abdullah

EXCLUSIVE: পূর্ণ রাজ্যের স্বীকৃতি না ফিরলে কাশ্মীর বিধানসভায় লড়াই নয়, প্রতিজ্ঞা ওমরের

'গরিষ্ঠতা পেয়ে ঠিক ৩৭০ ধারা ফেরত আনব', দাবি কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।

EXCLUSIVE: Omar Abdullah will not contest Assembly Election in Kashmir until statehood comes back

ফাইল ছবি।

Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:April 8, 2024 10:38 am
  • Updated:April 8, 2024 1:28 pm

সোমনাথ রায়, শ্রীনগর: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেবেন না ওমর আবদুল্লা (Omar Abdullah)। দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন। সরকারিভাবে ঘোষণা না হলেও এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে বয়সের কারণে এবার আর শ্রীনগর কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন না ফারুক আবদুল্লা। দিল্লিতে গিয়ে কাশ্মীরিয়তের আওয়াজ জোরাল করতে এবার সেই কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন ফারুক পুত্র ওমর। তার আগে জেলায় জেলায় ঘুরে চলছে নির্বাচনী প্রচার। চূড়ান্ত ব্যস্ততার মাঝে সংবাদ প্রতিদিন-এর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বললেন জম্মু-কাশ্মীরের (Kashmir) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাতেই জানালেন নিজের লক্ষ্যের কথা।

ওমর বলছেন, “যতদিন না জম্মু-কাশ্মীর আবার পূর্ণ রাজ্যের স্বীকৃতি পাচ্ছে, ততদিন আমি বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেব না।” সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে করতে হবে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন। উপত্যকার অনেক বিরোধী নেতা সেই নির্দেশ বাস্তবায়িত হওয়া নিয়ে সংশয়ে থাকলেও সহমত নন ওমর। তাঁর মতে, আদালত অবমাননা করে অতখানি দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ করবে না কেন্দ্র। তাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সেমিফাইনাল ও আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বিধানসভা নির্বাচনকে ফাইনাল হিসাবে ধরে নিয়ে কর্মীদের তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন। বলছিলেন, “বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে আদালত কিন্তু কোনও প্রস্তাব দেয়নি। নির্দেশ দিয়েছে যে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচন করতেই হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও সরকারিভাবে বলেছেন লোকসভার পরপরই বিধানসভা নির্বাচন হবে। আমার মনে হয় না, এত কিছুর পরে সরকার কোনও দায়িত্বজ্ঞানহীনের মত কাজ করবে।” তাঁর মতে, “অমরনাথ যাত্রা ১৮ আগস্ট শেষ হবে। আমার ধারণা ২০ তারিখের কাছাকাছি নির্বাচন ঘোষণা করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে।” তা হলে কি ফের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে তাঁকেই… প্রশ্ন থামিয়ে বললেন, “যতদিন জম্মু-কাশ্মীরকে স্বতন্ত্র রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করা না হবে, আমি বিধানসভা ভোটে অংশ নেব না।”

Advertisement

ভোট আসে ভোট যায়। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে উপত্যকার মানুষ নিরুত্তাপ, উদাসীন থাকেন। বাকি অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের মতো ওমরও মনে করেন, পুরনো সব রেকর্ড এবার ভেঙে ফেলবে ভূস্বর্গ। বলছিলেন, “মিলিয়ে নেবেন, গত ৩০-৩৫ বছরে যা হয়নি, এবার হবে। ৭, ১৩ ও ২০ মে পোলিং স্টেশনের সামনে মানুষের ঢল নামবে।” কিন্তু কেন? সাধারণত, কাশ্মীরের মানুষ মনে করেন লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির নেতা বাছতে হয়। তাতে তাঁদের কোনও লাভ নেই। তার উপর এতদিন ছিল বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ভোট বয়কটের ডাক। ওমরের ব্যাখ্যা, “এতদিন যারা মূলধারার রাজনীতি এড়িয়ে চলত, তারাও এখন আমাদের প্রচার, র‌্যালিতে আসছে। সত্যি বলতে কী, সেই সংখ্যা আমাদের প্রত্যাশার বাইরে। কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ ঠিক করেই রেখেছেন, এবারের নির্বাচনে দিল্লিকে বার্তা দিতে হবে। ৩৭০ ছিল আমাদের মাথার মুকুট। স্বাধীনতার সময় কাশ্মীরকে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা ভেঙেছে বিজেপি সরকার। তাই এবার ইভিএম-এ তাদের বার্তা দেবে আম কাশ্মীরি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘গরিবদের খাবার কেড়ে জঙ্গিদের বিরিয়ানি খাওয়ায়’, কংগ্রেসকে তোপ যোগীর

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন লাগু হওয়ার পরবর্তী সময়ে বিজেপি দাবি করে এসেছে উপত্যকা এখন শান্ত। কাঁধ থেকে ধুলো ঝাড়ার মতো করে ওমর বললেন, “এতই যদি কাশ্মীর শান্ত, তাহলে কেন লোকসভার সঙ্গেই করানো গেল না বিধানসভা নির্বাচন? কেন বলা হল, এত প্রার্থীকে নিরাপত্তা দেওয়ার মত বাহিনী মজুত নেই। প্রধানমন্ত্রী তো এক দেশ এক নির্বাচনের জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে কমিটি তৈরি করলেন। তার প্রস্তাব কেন মানা হল না? আসলে কী জানেন, যা দাবি করা হচ্ছে তার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন।” সঙ্গে জুড়লেন, “৩৭০ পরবর্তী পরিস্থিতি কেমন, তার জবাব কাশ্মীরের মানুষই দেবে। মনে রাখবেন, গত পাঁচ বছরে কাশ্মীরিদের কথা কিন্তু কেউ শোনেননি। যা শোনা গিয়েছে তা হয় আমাদের মতো বিভিন্ন বিরোধী, না হয় কেন্দ্রের শাসক দলের নেতাদের বক্তব্য। কাশ্মীরের মানুষ কী ভাবছেন, তা বুঝতে পারবেন ৪ জুন।”

৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পর জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন বিরোধী দল নিজেদের মধ্যেকার মতবিরোধ দূরে সরিয়ে রেখে, বৃহত্তর স্বার্থের কথা মাথায় রেখে জোটবদ্ধ হয়েছিল। যার নাম দেওয়া হয়েছিল পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন (পিএজিডি)। যাদের অন্যতম প্রধান দাবি হল, ৩৭০ ধারা পুনর্বহাল করা। জম্মু-কাশ্মীরের প্রার্থী ঘোষণায় অবশ্য অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে সেই জোট। সম্মুখ সমরে নেমেছে আবদুল্লাদের এনসি এবং মুফতিদের পিডিপি। এই অবস্থায় কাদের সমর্থন করা হবে, তা নিয়ে ধন্দে কংগ্রেস, সিপিএম-এর মতো অন্যান্য জোটসঙ্গী। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাংলার উদাহরণ টানলেন ওমর। বললেন, “আপনার রাজ্যে তো কংগ্রেস, বামদের একটা আসনও ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস। অথচ মমতাদিদি তো ‌‘ইন্ডিয়া’-র গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। গত সপ্তাহে দিল্লির রামলীলা ময়দানেও জোরাল উপস্থিতি ছিল টিএমসির। দিল্লিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়লেও পাঞ্জাবে আবার মুখোমুখি লড়াই কংগ্রেস-আম আদমি পার্টির। একই ছবি কেরলেও। সেখানে কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে লড়াই করলেও জাতীয় রাজনীতিতে পাশাপাশি চলছে। ঠিক সেভাবেই এখানে আমাদের সঙ্গে পিডিপির লড়াই হচ্ছে। এতে সমস্যার কিছু নেই।”

৩৭০ ধারার পুনর্বহাল সম্পর্কে বললেন, “কেউ ভেবেছিল ’৮৪-র নির্বাচনে মাত্র দু’টি আসন পাওয়া বিজেপি একদিন নিজেদের ঘোষণা ঠিক বাস্তবায়িত করবে? ৩৭০-এর অবলুপ্তি ঘটাবে, রামমন্দির বানাবে? ঠিক তেমনই আজ হয়তো আমরা সংখ্যাতত্ত্বে পিছিয়ে। একদিন ঠিক আসবে, যেদিন আমরাও সংখ্যাগুরু হব। সেদিন ঠিক ৩৭০ ফেরত আনব।” সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া, ৩৭০ পুনর্বহাল করা এইসবের জন্য ওমরদের এখনও প্রচুর অপেক্ষা করতে হবে। আপাতত তাই সেমিফাইনালের প্রস্তুতিই জোরকদমে সারছে ন্যাশনাল কনফারেন্স। গ্রামে গ্রামে জনসভা, পাহাড়ের কোলে মিছিল। বার বার মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ তকমা কেড়ে নিয়ে ভূস্বর্গের সঙ্গে কতটা অন্যায় করেছে বিজেপি। বলা হচ্ছে কোনও অবস্থাতেই ভোটের দিন ঘরে বসে থাকা যাবে না। গোটা প্রক্রিয়ায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জুনিয়র আবদুল্লা।

[আরও পড়ুন: মার্কিন শেয়ার সংস্থার নামে প্রায় ২ কোটির সাইবার জালিয়াতি! ভোপালে গ্রেপ্তার চক্রের পান্ডারা

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ