সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত ভূখণ্ডে চিনা অনুপ্রবেশের অভিযোগ অব্যাহত। ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (Line of Actual Control) বরাবর সেই অরুণাচলেই মিলল চিনা অনুপ্রবেশের প্রমাণ। রাজ্যের উত্তর সুবনসিরির পরে এবার শি ইয়োমি জেলায় ঢুকে গ্রাম বানানোর অভিযোগ উঠল বেজিংয়ের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার মধ্যে ছয় কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে এই গ্রাম তৈরি করেছে চিন সেনা। সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রে সেই গ্রামের ছবি ধরা পড়ছে বলে দাবি এক সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলের।
এদিন দু’টি উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করেছে ওই টেলিভিশন চ্যানেল। প্রথমটি এই বছরের সেপ্টেম্বরের মাসের। আর দ্বিতীয়টি ২০১৯ সালে মার্চ মাসের। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে ছবিতে জনবসতির কোনও চিহ্ন নেই। কিন্তু দু’মাস আগের ছবিতে স্পষ্ট হচ্ছে ঘরবাড়ির ছবি। শি ইয়োমি জেলায় সদ্য গড়ে ওঠে এই গ্রামের ৯৩ কিলোমিটার পশ্চিমে চিনের একটি জনপদ রয়েছে। যদিও চিন সেনার এই গ্রাম তৈরির কথা রাত পর্যন্ত স্বীকার করেনি অরুণাচল প্রদেশ (Arunachal Pradesh) সরকার ও ভারতীয় সেনা। তবে সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, এই গ্রামের অবস্থান প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খানিক উত্তর দিকে। একই সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও ভারতীয় সেনা সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করল কেন্দ্র, গুরু নানকের জন্মদিনে বড় ঘোষণা মোদির]
সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল দাবি করেছিল, উত্তর-পূর্বে অরুণাচল প্রদেশে ধীরে ধীরে থাবা বসাচ্ছে লালফৌজ। এই বছরের জানুয়ারি মাসে রাজ্যের উত্তর সুবনসিরি জেলায় চিনা অনুপ্রবেশের অভিযোগ করা হয়েছিল। ওই টেলিভিশন চ্যানেল তাদের রিপোর্টে দাবি করেছিল, ভারতীয় ভূখণ্ডের চার কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে এসে তাসরি চু নদীর তীরে গ্রাম তৈরি করেছে চিন। সেই সময় প্রকাশিত এক উপগ্রহ চিত্রকে প্রকাশ্যে এনে, ওই চ্যানেল দাবি করেছিল ওই এলাকায় ১০০-র বেশি বাড়ি তৈরি করেছে চিন সেনা। এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছিলেন অরুণাচলের বিজেপি সাংসদও। পরবর্তী সময় লোকসভার অধিবেশনে এই ব্যাপারে তিনি সরবও হয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: বন্দুক হাতে ভরা আদালত কক্ষে বিচারকের উপর ‘হামলা’ পুলিশকর্মীর, চাঞ্চল্য বিহারের মধুবনীতে]
সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের (US Defense Ministry) বার্ষিক রিপোর্টেও ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা জবরদখলের সেই অভিযোগের স্বীকৃতি মিলেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের বার্ষিক রিপোর্ট দেখার পরেই মুখ খুলেছিল বিদেশমন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রক অরুণাচল সীমান্তে চিনা জবরদখলের কথা স্বীকার করলেও, ভারতীয় সেনা এই খবর মানতে চায়নি। যা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। এই টালবাহানার মধ্যেই দিনকয়েক আগে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত জানিয়েছিলেন, সীমান্তে ভারতের এখন সবচেয়ে বড় বিপদ চিনই। তাঁর সেই আশঙ্কা কার্যত সত্য হয়ে গেল। প্রায় চুপিসারে অরুণাচলের ভিতরে ঢুকে ফের একটি গ্রাম তৈরি করল চিন সেনা। এর মধ্যেই আর এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, শুধু অরুণাচল নয়, ডোকলামের কাছে ভুটান ভূখণ্ডেও গ্রাম তৈরি অভিযোগ উঠেছে চিনের বিরুদ্ধে।
এই পরিস্থিতিতেই ফের সীমান্ত আলোচনায় বসেছিল ভারত ও চিন। পূর্ব লাদাখে গালোয়ান পরবর্তী সময়ে এই নিয়ে দু’দেশের মধ্যে ১৪ দফা বৈঠক হল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর এবারও চিনকে দ্রুত সেনা সরানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
সব খবরের আপডেট পান সংবাদ প্রতিদিন-এ
Highlights
- সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের বার্ষিক রিপোর্টেও ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা জবরদখলের সেই অভিযোগের স্বীকৃতি মিলেছে।
- মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের বার্ষিক রিপোর্ট দেখার পরেই মুখ খুলেছিল বিদেশমন্ত্রক।
- বিদেশমন্ত্রক অরুণাচল সীমান্তে চিনা জবরদখলের কথা স্বীকার করলেও, ভারতীয় সেনা এই খবর মানতে চায়নি। যা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক।