সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) ও প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (NRC) প্রতিবাদে দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলন চলছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ, সোমবার বিকেলে আলোচনায় বসতে চলেছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধী ঐক্য বোঝাতে ওই বৈঠকের আয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন, তিনি ওই বৈঠকে থাকবেন না। গত সপ্তাহে ভারত বন্ধের দিন রাজ্যে কংগ্রেস ও বামেদের ‘অশান্তি ছড়ানোর’ পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ক্ষুব্ধ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যে যা হয়েছে, তারপর আমার পক্ষে বৈঠকে থাকা সম্ভব নয়।’’ উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতীও ওই বৈঠকে থাকছেন না বলে জানা গিয়েছে।
Bahujan Samaj Party (BSP) Chief Mayawati tweets, “BSP will not attend today’s opposition parties meeting called by Congress”. pic.twitter.com/G7nrwH2aD3
— ANI UP (@ANINewsUP) January 13, 2020
বিরোধী শিবিরের এই বৈঠকের ডাক দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। সংসদের অ্যানেক্স ভবনে হবে বৈঠক। সেখানে নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির যোগ দেওয়ার কথা। এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন প্রমুখের সেখানে উপস্থিত থাকার কথা। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাম দলগুলিকে। সূত্রের খবর, বৈঠকে আসবেন বলে জানিয়েছেন বাম দলের নেতারা। প্রথমে জানা গিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওই বৈঠকে যোগ দেবেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ওই বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন না। তিনি বলেন, ‘‘নয়া দিল্লিতে আগামী ১৩ জানুয়ারি সোনিয়া গান্ধীর ডাকা বৈঠক বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, বুধবার পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ ঘিরে যেভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে বাম-কংগ্রেস, তা সমর্থন করি না। সেকারণেই বৈঠক বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’এদিকে মায়াবতীও সোনিয়া গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আক্রমণ করে রাজস্থানের কোটায় শিশুমৃত্যুর জন্য দায়ী করেন। তিনি বলেন, “যদি সোনিয়া কোটায় গিয়ে সন্তানহারা মায়েদের সঙ্গে দেখা না করেন, তাহলে উত্তরপ্রদেশের আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে তাঁর বৈঠককে মনে করা হবে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নাটক’।” তাই দুই দাপুটেো বিরোধী নেত্রীর অনুপস্থিতিতে বিরোধী বৈঠক কতটা ফলপ্রসু হয়, তার দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।
[আরও পড়ুন : পুলওয়ামায় গুলির লড়াই, এনকাউন্টারে খতম হিজবুল-জইশ তিন জঙ্গি]
শনিবার দিল্লিতে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই CAA নিয়ে একযোগে বিরোধিতার সিদ্ধান্তের মুখবন্ধটি বেঁধে ফেলেছেন সোনিয়া। তিনি বলেন, “CAA বৈষম্যমূলক ও বিভাজনের আইন। প্রতিটি দেশপ্রেমিক, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয়র কাছে এটি স্পষ্ট, ভারতীয়দের ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করার ভয়ংকর উদ্দেশ্যেই এটি করা হয়েছে।’’ তিনি CAA ও NRC বাতিলেরও দাবি তুলেছেন। CAA পাস হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে নয়া সংশোধনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও বাম শিবির–সহ বিরোধীরা যেমন এই আইনের বিরোধিতায় সরব হয়েছে, তেমনই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে পথে নেমেছে।