সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের জেরে কোপ পড়ল বাঙালির প্রিয় রথযাত্রাতেও। জুন মাসে আয়োজিত রথযাত্রাও অনুষ্ঠিত হবে ওড়িশায় মন্দিরের ভিতরে। প্রতি বছরের মত নিয়ম মেনে এবার রথ বের হবে না রাস্তায়। কারণ যে রথে চড়ে এই রথযাত্রা হয় তার নির্মাণ করাই শুরু হয় আজ অর্থাৎ অক্ষয় তৃতীয়ার পূণ্য লগ্নে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে সেই কাজও বন্ধ। তাই ছেদ পড়ল জগন্নাথ দেবের মন্দিরের এই পরম্পরায়।
কথিত আছে, অক্ষয় তৃতীয়ার পূণ্য লগ্নে এই নির্মাণ কাজ শুরু করতে হয়। ওড়িশার আইনমন্ত্রী প্রতাপ জেনা জানান, “প্রথা মেনে মন্দির চত্বরেই রথের নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এই বছর তা করা সম্ভব হয়নি। তবে ৪ মে লকডাউন উঠে গেলে মন্দির কর্তৃপক্ষ যদি তা রথ নির্মাণ করবেন বলে স্থির করেন তাহলে তা করতেই পারেন।” যদিও চলতি সপ্তাহের শুক্রবার মন্দির কর্তৃপক্ষ ধর্মগুরু শুক্রাচার্যের নির্দেশ মেনেই এই অনুষ্ঠানের সমস্ত কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে চান বলেই জানায়। তবে রথযাত্রার আগে সম্পন্ন হয় চন্দন যাত্রা (sandalwood voyage)। প্রথা মেনে সেই অনুষ্ঠান বরাবর মন্দিরের বাইরে অনুষ্ঠিত হলেও এই বছর তার আয়োজন করা হয় মন্দিরের ভিতরেই।
[আরও পড়ুন:লকডাউনে রেললাইন ধরে হেঁটে ঘরে ফেরার চেষ্টা, মালগাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের]
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় মন্দির কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের মধ্যে। প্রশ্ন ওঠে যদি এবার রথযাত্রা আয়োজনও করা হয় তাহলে রথকে কোথায় ঘোরানো হবে? তবে রথযাত্রা সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার যেহেতু মন্দির কর্তৃপক্ষের রয়েছে। তাই তাঁরা জানায়, “ওড়িশা ও বিশ্বের মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ও অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে যা যা করার প্রয়োজন আমরা সেই সবটাই করব। মন্দিরের ভিতরেই হবে এবছরের রথযাত্রা।” ওড়িশার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, “জগন্নাথ দেবকে রাস্তায় বের করলেই যতই বারণ করা হোক মানুষ রাস্তায় নেমে আসবেনই তখন তাদের থামানো সম্ভব হবে না। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন:বাজার বন্ধ থাকার আতঙ্কে রাতেই খুলল দোকানপাট, সংঘর্ষ-লাঠিচার্জে উত্তপ্ত বেলুড়]
তবে ইতিহাস সাক্ষী থাকল, সংক্রমণের আশঙ্কায় কীভাবে মন্দিরের পরম্পরা, ঐতিহ্য সব পালটে যেতে পারে। প্রতিবছর এই রথযাত্রা দেখতে দূর দূরান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্তরা ভিড় জমান পুরীতে। আন্তর্জাতিক সম্মান লাভ করেছে এই অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান চাক্ষুস করবে বলে প্রায় এক বছর আগে থেকে হোটেলের ঘর বুক করে রাখা হয়। শুধুমাত্র জগন্নাথ দেবের রথের দড়ি ধরার আশাতেই অনেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে ভিড় জমান। তবে করোনার করাল কোপে সেই সমস্ত অনুষ্ঠানে ছেদ পড়েছে। তবে জয় জগন্নাথ বলে মানে মানে ভাইরাসের কবল থেকে মুক্তি পেলেই শেষ রক্ষা হয়।