Advertisement
Advertisement

Breaking News

মৃত্যু নেই, প্রয়াণেও অন্যের চোখে আলো ফোটাবেন গৌরী

দেশবাসীর প্রত্যাশা, বেঁচে থাকুক তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিও।

Slain Journo Gauri Lankesh donated her eyes
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 7, 2017 8:02 am
  • Updated:September 7, 2017 8:02 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কে বলে তিনি প্রয়াত হয়েছেন! বেঁচে আছে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি। আছে তাঁর দৃষ্টিও। আক্ষরিক অর্থেই। প্রয়াত সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশের চোখেই এবার পৃথিবীকে দেখবেন কেউ কেউ। ঘুচবে চোখের অন্ধকার।

তাঁর ইচ্ছে ছিল সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদহীন এক পৃথিবীকে দেখার। তা নিয়ে আমরণ সংগ্রাম করেছেন। নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে গোপন রাখেননি। যেখানেই বিভেদ মাথাচাড়া দিয়েছে, তাঁর লেখনী হয়ে উঠেছে কঠোর সমালোচক। প্রগতিশীল একটি সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন গৌরী লঙ্কেশ। সে ইচ্ছে তাঁর কতটা পূরণ হবে তা সময়ের গর্ভেই নিহিত। দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। তবে বিসর্জনেও আবাহনের মন্ত্র শুনিয়ে গেলেন গৌরী। শেষ ইচ্ছে ছিল, তাঁর চোখ দান করার। সে ইচ্ছে অপূর্ণ থাকেনি। মিন্টো অপথালমিক হসপিটালে রাখা আছে চোখ। যে চোখ দিয়ে পৃথিবীকে দেখবেন এক বা একাধিক জন। বেঁচে থাকবে গৌরীর দৃষ্টি।

Advertisement

গৌরী খুনের প্রতিবাদ কলকাতায়, সাংবাদিকদের সঙ্গে পা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রীও ]

Advertisement

এদিকে প্রবীণ সাংবাদিকের হত্যাতে গোটা দেশ জুড়ে তোলপাড়। আরএসএস-এর মতাদর্শের কড়া সমালোচক ছিলেন অকুতোভয় এই সাংবাদিক তথা সমাজকর্মী। বামপন্থী আদর্শে দীক্ষিত গৌরী নিজের পত্রিকাতে নির্ভীকভাবে বিরুদ্ধ স্বরকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন। দৃঢ় স্বরে জানিয়েছিলেন, সংবিধান যখন বহুত্বকে স্বীকার করেছে, তখন তা বলতে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কিন্তু এই দীপ্ত দৃষ্টিভঙ্গিই কাল হল। নিজের বাড়ির সামনেই খুন হন গৌরী। তাঁর হত্যায় বহু প্রশ্ন উঠেছে। একরৈখিক মতাদর্শের বাইরে যে কোনও ভিন্ন মতকেই কী এভাবে চাপা দেওয়া হবে, প্রশ্ন করছেন অনেকে। অধ্যাপক কালবুর্গি থেকে পানসারেকে যে কায়দায় হত্যা করা হয়েছে, গৌরী হত্যাতেও একই আদল। স্বতন্ত্র স্বরকে স্তব্ধ করে দেওয়ার এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে গোটা দেশ। সাংবাদিকরা প্রতিবাদ মিছিল করে জানিয়ে দিয়েছেন, আক্রমণ কখনও নির্ভীকতাকে কাবু করতে পারে না।

 

[ সাহসিকতার মূল্য দিয়ে খুন হয়েছিলেন আর কোন কোন সাংবাদিক?  ]

কিছুদিন আগে বাংলাদেশে একাধিক মুক্তমনা লেখকের উপর নেমে এসেছিল আক্রমণ। মাত্র কিছুদিনের মধ্যে সেই একই পরিণতির সাক্ষী থাকল ভারতও। মৌলবাদ যে ভারতীয় বহুত্বকে ক্রমশ কবজা করছে, এই ভেবেই আঁতকে উঠেছেন অনেকে। খুঁজছেন এর থেকে মুক্তির উপায়। অন্ধকার কী করে কাটবে তার উত্তর হয়তো এই মুহূর্তে নেই। তবে কারও চোখের অন্ধকার কাটানোর ব্যবস্থা করে গেলেন গৌরী। তাঁর ভাই ইন্দ্রজিৎ লঙ্কেশ জানিয়েছেন, শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী গৌরীর চোখ হাসপাতালে দান করা হয়েছে। গৌরীর দৃষ্টিতেই চোখের অন্ধকার কাটবে কোনও কোনও ব্যক্তির। বেঁচে থাকবে তাঁর দৃষ্টি। আর দেশবাসীর প্রত্যাশা, বেঁচে থাকুক তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ