Advertisement
Advertisement

Breaking News

যোগীর রাজ্যে উপনির্বাচনে হারের বদলা, রাজ্যসভায় গোল শোধ বিজেপির

মোদি-শাহের চালে ধরাশায়ী বুয়া-ভাতিজার জোট।

Uttar Pradesh bypolls: BJP bags 9 out of 10 seats, Maya-Akhilesh stunned
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 24, 2018 9:34 am
  • Updated:July 30, 2019 6:03 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোল শোধ বিজেপির। উত্তরপ্রদেশে লোকসভা উপনির্বাচনে হারের বদলা নিল রাজ্যসভার ভোটে। নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহর চালে ধরাশায়ী সমাজবাদী পার্টি-বহুজন সমাজ পার্টির অলিখিত জোট। লোকসভা উপনির্বাচনে ‘বুয়া’ মায়াবতীর হাত ধরে উতরে গিয়েছিলেন ‘ভাতিজা’ অখিলেশ যাদব। কিন্তু রাজ্যসভায় তার পুনরাবৃত্তি হল না। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার মধ্যে ক্রস ভোটিংয়ে ভর করে উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর মুখের গ্রাস কেড়ে নিল বিজেপি।

[পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যে ১৩ হাজার চাকরি]

রাজ্যে লোকসভা উপনির্বাচনে হারের বদলা নিতে মরিয়া ছিল বিজেপি। রাজ্যসভায় ফাঁকা আসন ছিল দশটি। মরিয়া বিজেপি নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে আসরে নামিয়ে দেওয়ার পরই বোঝা গিয়েছিল, পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠতে চলেছে। শুক্রবার ঠিক সেটাই দেখা গেল লখনউয়ে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত আটটি আসনেই বিজেপি প্রার্থীরা জিতেছেন। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী জিতেছেন একটি আসনে। দশম আসনে বসপা প্রার্থী বি আর আম্বেদকরকে হারিয়ে জিতেছেন বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী অনিল আগরওয়াল। বসপা প্রার্থী আম্বেদকর পেয়েছেন ৩২টি ভোট। যদিও জয়ের জন্য তাঁর ৩৭টি ভোটের প্রয়োজন ছিল। অর্থাৎ হিসাবের চেয়ে ৫টি ভোট কম পেয়েছেন তিনি। বিজেপির জয়ী প্রার্থীরা হলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, অনিল জৈন, জি ভি এল নরসিমা রাও, বিজয় পাল তোমর, কান্তা কারদাম, অশোক বাজপেয়ী, হরনাথ যাদব, শকলদীপ রাজভর, অনিল আগরওয়াল। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হিসাবে জিতেছেন জয়া বচ্চন।

Advertisement

একইভাবে কর্নাটকেও স্নায়ুর লড়াই জমজমাট হয়ে উঠেছিল। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির (বসপা) এবং কর্নাটকে জেডি (এস)-এর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘণ্টা দু’য়েক ভোটগণনা স্থগিত ছিল। পরে ভোটকেন্দ্রের ভিডিও ফুটেজ দেখে নির্বাচন কমিশন সবুজ সংকেত দেওয়ায় ফের গণনা শুরু হয়। রিটার্নিং অফিসার পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে জেডি (এস) প্রধান এইচ ডি কুমারস্বামী অভিযোগ করে ভোট বয়কট করেন। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস তিনটি ও বিজেপি একটি আসনে জয়ী হয়েছে। ক্রস ভোটিংয়ের অভিযোগ উঠেছে ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ডেও। কেরলে বামেদের সমর্থনে জিতেছেন শরদ যাদব অনুগামী জেডি (ইউ) প্রার্থী। ছত্তিশগড়ে একমাত্র আসনে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী। তাঁর পক্ষে নির্দিষ্ট ভোটের বাইরে দু’টি অতিরিক্ত ভোট পড়েছে। তেলেঙ্গানার তিনটি আসনই পেয়েছে শাসক দল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি।

[রাজ্যসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা, চারটিতেই জয়ী তৃণমূল]

শুক্রবার সকাল থেকেই হাওয়া গরম করে দিয়েছিলেন উন্নাও পূর্বের বসপা বিধায়ক অনিলকুমার সিং। বৃহস্পতিবার রাতে মায়াবতীর বাড়িতে বসে নৈশভোজ সেরেছেন। আর শুক্রবারই বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে ক্রস ভোটিং করেছেন তিনি। ভোট দেওয়ার পর তাঁর প্রকাশ্য ঘোষণা, “আমি মহারাজজির (যোগী আদিত্যনাথ) সঙ্গে রয়েছি।” নীতিন আগরওয়াল নামে এক সপা বিধায়ক ক্রস ভোট দিয়েছেন। তিনি সদ্য দলত্যাগী সপা নেতা নরেশ আগরওয়ালের পুত্র। আবার নির্দল বিধায়ক রঘুরাজপ্রতাপ সিংহ ওরফে রাজা ভাইয়াকে দলে টেনেছিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। কিন্তু ১৬ বছর আগে মায়াবতী তাঁকে জেলে পাঠিয়েছিলেন। পুরনো রাগ কি তিনি এত সহজে ভুলতে পারেন? সকাল থেকে তিনিও বেসুরে গাইতে শুরু করেছেন। “আমি অখিলেশ যাদবের সঙ্গে রয়েছি, কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমি মায়াবতীর প্রার্থীকে ভোট দেব।” শুধু মুখে বলাই নয়, ভোট দিয়েই তিনি ছুটলেন যোগী আদিত্যনাথের দপ্তরে। নির্দল বিধায়ক বিনোদ সরোজও বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সপা’র কোণঠাসা বিধায়ক আমনমণি ত্রিপাঠী ভোট দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ‘মেন্টর’ বলে উল্লেখ করেছেন। এই পাঁচটি ভোটই মায়াবতীর হাসি মিলিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট ছিল।

 

উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার দশটি আসনে প্রার্থীর সংখ্য ১১। জয়ের জন্য প্রত্যেক প্রার্থীর ৩৭টি করে ভোট দরকার ছিল। মায়াবতীর দলে মাত্র ১৯ বিধায়ক। কিন্তু গোরক্ষপুর ও ফুলপুরে সমঝোতা করে জয়ের পর মায়াবতীর প্রার্থীকে যে কোনও উপায়ে জিতিয়ে আনতে চাইছিলেন অখিলেশ যাদব। এসপি-র বাড়তি দশটি ভোট, কংগ্রেসের সাতটি এবং আরএলডি-র একটি ভোট বিএসপি-তে পড়লে, সব মিলিয়ে বিএসপি প্রার্থী পেতেন ৩৭টি ভোট। অন্যদিকে বিজেপি তাদের ৮ প্রার্থীকে জেতানোর পর তাদের সমর্থিত নির্দল প্রার্থীর জন্য ছিল ২৮টি ভোট। তিন নির্দল বিধায়ক আর দু’টি ক্রস ভোটে তারা বাজিমাত করে গেল। টানটান উত্তেজনা কর্নাটকেও। চারটি আসনে এক জন প্রার্থীর নির্বাচিত হওয়ার জন্য ৪৬টি ভোট দরকার ছিল। কংগ্রেসের বিধায়ক ১২৪ জন। অর্থাৎ দু’জন প্রার্থী সহজেই জিততেন। তার পরেও ৩২টি ভোট অতিরিক্ত ছিল। কংগ্রেসের তৃতীয় প্রার্থীর সেই ৩২টি ভোট পাওয়ার কথা। কিন্তু কর্নাটকে বিজেপি-র বিধায়ক ৪৪ জন। রাজ্যসভায় বিজেপি-র সঙ্গে সমঝোতা করেই লড়ছিল আর এক বিরোধী দল জেডি (এস)। তাদের বিধায়ক সংখ্যা ৩৯। আরও কয়েকটি ছোটখাট দলকে নিয়ে বিজেপি-জেডি (এস) ৯০ জন বিধায়কের সমর্থন জোগাড় করে ফেলেছিল। কিন্তু ভোটগ্রহণ শুরুর পর কর্নাটকের ছবিটাও বদলে যায়। জেডি (এস)-এর অন্তত সাত বিধায়ক বিদ্রোহ করেন। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে তাঁরা বিধানসভায় ঢোকেন। কংগ্রেস শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে দিয়েছিল বিজেপিও। দুই কংগ্রেস বিধায়ক সকালে বিজেপির দিকে ভোট দেন। কিন্তু তাঁদের ব্যালট বাতিল করিয়ে ফের ভোট দেওয়ানোর ব্যবস্থা করেন সিদ্দারামাইয়া। তৃতীয় আসনে দলীয় প্রার্থীর জয় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসকে বাড়তি উৎসাহ জোগাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

[আপ বিধায়কদের সদস্যপদ বহাল, দিল্লি হাই কোর্টের রায়ে স্বস্তিতে কেজরি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ