কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: উমা এসেছেন বাপের বাড়িতে। চলছে তার আরাধনা। অথচ তারই মাঝে বাবাকে ছেড়ে চলে গেল মেয়ে। কেড়ে নিল করোনা। কিন্তু সন্তানকে চিরদিনের মতো বিদায় জানাতে কোন বাবারই বা মন সায় দেয়? তাই তো নিজের মেয়ের মরদেহ আগলে রাতভর বসে রইলেন বাবা। বহুক্ষণ পর যদিও স্থানীয়দের তৎপরতায় দেহ দাহের বন্দোবস্ত হয়েছে। মহাষ্টমীতে মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী নাগেরবাজারের (Nagerbazar) যুগিপাড়া।
বাবা সরকারি চাকরি করতেন। বর্তমানে তিনি অবসরপ্রাপ্ত। বাড়িতে মেয়ে আর বাবা ছাড়া কেউই নেই। নাগেরবাজারের যুগিপাড়ার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁদের বাড়ির পাশেই রয়েছে একটি ক্লাব। ওই ক্লাবে জড়ো হওয়া বেশ কয়েকজন যুবকের দাবি, শুক্রবার সন্ধেয় তাঁরা আচমকাই আর্তনাদ শুনতে পান। দৌড়ে যান বাড়িটিতে। কলিং বেল বাজান। বেরিয়ে আসেন বৃদ্ধ। কোনও সমস্যা হয়েছে কিনা তা জানতে চান ওই যুবকেরা। তবে কোনও সমস্যা হয়নি বলেই জানান তিনি। ওই যুবকেরাও ফের ক্লাবে ফিরে আসেন। তবে কিছুক্ষণ পর তাঁরা স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পান বাড়ির মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন বলেও জানতে পারেন তাঁরা।
সকালে কাউন্সিলর কেয়া দাস এই খবর পান। তবে ওই ব্যক্তি কিছুতেই মেয়েকে দাহ করতে তিনি চাননি। পরে স্বাস্থ্যদপ্তরের লোকজনও বাড়িতে পৌঁছয়। বৃদ্ধকে বুঝিয়ে ঘরের ভিতর ঢোকেন তাঁরা। স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, ওই তরুণী কমপক্ষে রাত্রি আটটা-নটা নাগাদ মারা গিয়েছেন। বৃদ্ধকে বুঝিয়ে দেহ উদ্ধার করে দাহর ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু তরুণী করোনা আক্রান্ত ছিলেন তাই তাঁর বাবাকে বাড়িতে থেকে বেরতে বারণ করা হয়েছে। শরীরে ন্যূনতম কোনও উপসর্গ দেখা দিলেন স্বাস্থ্যদপ্তরে খবর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এলাকা স্যানিটাইজ করার প্রস্তুতিও চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.