সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ বিরোধী মিছিলে হেঁটে বিপাকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) পোল্যান্ডবাসী এক পড়ুয়া। তাঁকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিল এফআরআরও বা ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (Foreigner Regional Registration Office)। একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি পড়ুয়াদের ভর্তির আবেদন খতিয়ে দেখে এই ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস। এই অফিসই বিদেশি পড়ুয়াদের ব্যবস্থা করে দেয় তাঁদের রেজিস্ট্রেশনের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ এই এফআরআরও।
পোল্যান্ডের বাসিন্দা কামিল সিডসিরিস্কি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের পড়ুয়া। সিএএ বিরোধী মিছিলে তাঁকে দেখা দেওয়ার দরুন ২২ ফেব্রুয়ারি এফআরআরও’র কলকাতা দপ্তরে গিয়ে কামিলকে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ মোতাবেক কামিল দেখা করলে তাঁকে ভারত ছাড়ার নিদান দেওয়া হয়। ঠিক একই কারণে কয়েকদিন আগে বিশ্বভারতীর বাংলাদেশি ছাত্রী আফসারা আনিকা মিমকে দেশ ছাড়তে নির্দেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। শান্তিনিকেতনের বিশ্ববিদ্যালয়ে চলা সিএএ-বিরোধী (Anti-CAA) একাধিক কর্মসূচির সমর্থনে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছিলেন ওই ছাত্রী। তারপরেই নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া।
জানা যায়, এফআরআরও কামিলকে দেশ ছাড়ার বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে কারণ হিসেবে বলা হয়, একজন বিদেশি নাগরিক হিসেবে ছাত্র ভিসা নিয়ে এদেশে এসে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হচ্ছেন কামিল। তাই আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে দেশ ছাড়তে হবে। মৌলালিতে আয়োজিত এক সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ সভাতে অংশ নিয়েছিলেন কামিল সিডসিরিস্কি। রাজ্যের এক দৈনিকে তাঁর সাক্ষাৎকার-সহ প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। কামিল কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও তার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি তাঁকে বিপদে ফেলেছে। এই মিছিলে অংশগ্রহণই তাঁর বিপক্ষে গিয়েছে, এমনটাই মনে করছেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা।
[আরও পড়ুন:শহিদ মিনারের মঞ্চ থেকেই ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচির সূচনা অমিতের]
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকজন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেই প্রতিবেদন এফআরআরও অফিসে পাঠায়। এই বিষয়ে অবশ্য পড়ুয়ার কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। এমনকি মুখে কুলুপ এঁটেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কামিলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কয়েকজন পড়ুয়া এফআরআরও-কে অনুরোধ করেছে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার। তবে এফআরআরও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণে থাকায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই।