Advertisement
Advertisement
করোনা

শেষকৃত্য সারার পর মিলল রিপোর্ট, করোনায় আক্রান্ত ছিলেন চোরবাগানের বৃদ্ধা

প্রতিবেশীরা হাজির ছিলেন বৃদ্ধার শেষকৃত্যে।

After cremation report says elderly women was Corona positive in Kolkata
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 15, 2020 8:09 pm
  • Updated:April 15, 2020 8:11 pm  

অর্ণব আইচ : রিপোর্ট এল মৃত্যুর একদিন পর। করোনা পজিটিভ। ততক্ষণে দেহের শেষকৃত্য করে ফেলেছেন পরিজনরা। এর পরই মধ্য কলকাতার মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটে শুরু হল চাঞ্চল্য। মৃত বৃদ্ধার বাড়ির প্রত্যেককে কোয়ারান্টাইনে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয়, তার জন্য ছুটে আসতে হয় পুলিশকেও।

পুলিশের দাবি, উত্তর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। ওই হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ক্ষুব্ধ পুলিশ আধিকারিকরাও। এক পুলিশ আধিকারিকের প্রশ্ন, কীভাবে এতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হতে পারল ওই হাসপাতালটি? যেখানে করোনা সন্দেহে ভরতি, এমন কোনও রোগীর মৃত্যু হলে বহু হাসপাতাল কখনও ২৪, আবার কখনও বা ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত আটকে রেখেছে দেহ, সেখানে রিপোর্ট না আসার আগেই কীভাবে দেহটি পরিজনদের হাতে তুলে দিল হাসপাতাল? পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুরসভার পক্ষে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মৃত বৃদ্ধার বাড়ি ও এলাকাটি স্যানিটাইজ করা হবে। 

Advertisement

[আরও পড়ুন : স্মৃতি ইরানির আবেদনে সাড়া, লকডাউনে চটকল খোলার অনুমতি রাজ্যের]

পুলিশ ও এলাকার সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার জ্বর আসে। সেই সঙ্গে ছিল অন্যান্য উপসর্গ। পরিবারের লোকেরা তাঁকে ওই হাসপাতালে ভরতি করেন। চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়, বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত হতেও পারেন। তাই তাঁর লালারস পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। রিপোর্ট আসার আগেই বুধবার মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের লোকেরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। চিকিৎসকরা প্রথমে দেহটি ছাড়বেন কি না তা নিয়ে আলোচনাও চালান। শেষ পর্যন্ত পরিবারের অনুরোধে বৃদ্ধার দেহ ছেড়ে দিতে রাজি হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল থেকে দেহটি বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে পরিজনরা শ্মশানে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যেহেতু বৃদ্ধার ছেলে এলাকার বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত, তাই শ্মশানবন্ধু হয়ে অঞ্চলের কিছু মানুষও শেষকৃত্যে যোগ দেন। আবার রাতে ওই পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে যান এক পুরোহিত। এদিন সকালে হাসপাতাল থেকে বৃদ্ধার পরিবারের লোকেদের ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় রিপোর্ট। সেখানে দেখা যায় বৃদ্ধা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে। সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। বৃদ্ধা ইতিমধ্যে বাইরে গিয়েছিলেন অথবা বিদেশ বা ভিন রাজ্যের কোন আত্মীয় বৃদ্ধার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে। সেই ক্ষেত্রে মৃতের পরিবারের লোকেরাও যে নিরাপদ নন, তা নিয়েও এলাকায় শুরু হয় আলোচনা।

[আরও পড়ুন :‘এক সেকেন্ডও লাগবে না…!’, কোয়ারেন্টাইনের জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে হুঁশিয়ারি মমতার]

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর যায় জোড়াসাঁকো ও গিরিশ পার্ক থানায়। বৃদ্ধার বাড়ি জোড়াসাঁকো থানা এলাকায়। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে যাতে আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে ও তাঁরা যাতে লকডাউন লঙ্ঘন করে বাইরে বের না হন, সেই ব্যবস্থা করে পুলিশ। এর মধ্যেই খবর যায় স্বাস্থ্য দপ্তরে। স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে বাড়িটির দোতলার বাসিন্দা বৃদ্ধার পরিবারের লোকেদের কোয়ারান্টাইনে নিয়ে যান। এর পর যে পুরোহিত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ছিলেন, তাঁকে নিয়ে নতুন করে সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। সরকার লেনের বাসিন্দা ওই পুরোহিতকে এলাকার বাসিন্দারা অনেকটা জোর করেই হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু পুরোহিতের দাবি, তাঁর শরীরে জ্বর বা কোনও উপসর্গ নেই বলে হাসপাতাল তাঁকে ফিরিয়ে দেয়। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের কাছে দাবি করেন, ওই পুরোহিতকেও কোয়ারান্টাইনে পাঠিয়ে তাঁর লালারস পরীক্ষা করতে হবে। পুলিশের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, এই বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে আপাতত ওই ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে কোনওভাবেই বের হতে বারণ করা হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement