দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজভবনে গিয়ে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) নামে নালিশ করেছিলেন মিল্লি আল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সেই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাঁকে বদলির চিঠি ধরানো হয়েছে। উত্তর কলকাতার রামমোহন কলেজে পাঠানো হয়েছে বৈশাখীকে। করোনা সতর্কতায় এখন রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। শনিবার বিকাশ ভবনে সাধারণত উচ্চশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা আসেন না। অধ্যাপক বৈশাখীর বক্তব্য, “যেদিন থেকে আমি রাজরোষের শিকার সেদিন থেকেই জানি আমার উপর শাস্তির খাঁড়া নেমে আসবে। শুক্রবার রাজভবনে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের আক্রমণের কথা জানানোর পরের দিনই তাই তড়িঘড়ি বদলি করা হল। রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করতে আমাকে শাস্তি দেওয়া হল।”
মিল্লি-আল-আমিনের দীর্ঘদিনের সমস্যার জট কাটাতে রাজ্যপাল দ্বারস্থ হয়েছিলেন বৈশাখী (Baisakhi Banerjee)। শুক্রবার বিকেলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
কলেজের টিটার-ইনচার্জের উদ্দেশ্যে তার ২৪ ঘণ্টা আগে ফিরহাদ বলেছেন, ‘উসে উখাড়কে কে ফেক দো’। পুর প্রশাসক ও মন্ত্রীর মন্তব্য অত্যন্ত অশালীন এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন, এই মর্মে রাজ্যপালের কাছে নালিশ করেন দু’জনে। ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই বদলির চিঠি আসে। তবে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সেই চিঠিতে শুক্রবারের তারিখ দেওয়া হয়েছে। বৈশাখী মনে করছেন রাজভবনে যাওয়ার পর ওই রাতেই উচ্চশিক্ষা দপ্তরের দরজা খুলিয়ে বদলির চিঠি তৈরি হয়েছে। এই বদলি তিনি মানেন না। তাহলে এবার কি তিনি আইনি পদক্ষেপ করবেন? উত্তরে বৈশাখী জানিয়েছেন, “আমি ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলছি। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেব।”
[আরও পড়ুন: কৃষকদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন, রাজ্যে ৩ দিনের বিশেষ কর্মসূচি তৃণমূলের]
বছর দু’য়েক ধরে অচলাবস্থার মুখে মিল্লি আল আমিন কলেজ। যার জেরে উচ্চ শিক্ষাদপ্তরে কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বৈশাখী। কিন্তু তার কোনো উত্তর আসেনি। কলেজের পরিস্থিতি এখন আরও সংকটজনক। ছাত্রীরা পরীক্ষায় বসতে পারছেন না, বেতন পাচ্ছেন না অধ্যাপকরা। এসবের প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরে কলেজের সামনে ধরনায় বসেছেন একদল পড়ুয়া। বৃহস্পতিবার সেখানে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যান ফিরহাদ। পড়ুয়াদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে তিনি টিচার-ইনচার্জকে সমূলে উৎপাটিত করার আহ্বান করেন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন এবং বৈশাখী রাজভবন থেকে বেরিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেন। তারপরেই বদলির চিঠি ধরানো হয়। চিঠিতে জনস্বার্থে বদলি করা হল বলে জানানো হয়েছে।