ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: ভিডিও কলের অপর প্রান্তে উপস্থিত স্ত্রী ও মেয়ে। এদিকে ঘরে তখন আত্মহত্যার প্রস্তুতি চলছে। কোনওরকম আপত্তিতে কান না দিয়ে নাইলনের দড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শেষমেশ ঝুলেই পড়লেন গড়ফার পূর্বাচল মেন রোডে বসবাসকারী ব্যাংক আধিকারিক। গুজরাটে থাকা স্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে লালবাজারের মারফত গড়ফা থানায় যোগাযোগ করে। লাভ হয়নি কিছুই। পুলিশ ঘটনাস্থলে যখন পৌঁছয় ততক্ষণে সব শেষ। ব্যাংক আধিকারিকের নিথর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।
নিহত বছর সাতচল্লিশের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, গড়ফার পূর্বাচল মেন রোডের অভিজাত আবাসনে বসবাস করেন। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের আধিকারিক। আগে গুজরাটে কর্মরত ছিলেন। তবে কলকাতায় বদলির পর বর্তমানে একাই গড়ফার ফ্ল্যাটে থাকতেন। বড় মেয়ের সামনেই বোর্ডের পরীক্ষা। ছোট মেয়েও রয়েছে। তাই দুই মেয়ের দেখভাল করতে গুজরাটে থাকতেন তাঁর স্ত্রী অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যাংক আধিকারিক এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছিল। উষ্ণতা হারাচ্ছিল দাম্পত্য। ওই ব্যাংক আধিকারিক পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন বলেই সন্দেহ করতেন স্ত্রী। প্রতিদিন গভীর রাতে তাঁর স্ত্রী ওই ব্যাংক আধিকারিককে ফোন করতেন বলেই জানা গিয়েছে। ফোন না ধরতে পারলে ঝগড়াঝাটি হত বলেও অভিযোগ।
দাম্পত্য অশান্তির জেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই ব্যাংক আধিকারিক। সেকথা বারবার স্ত্রীকে জানিয়েছেন। তবে লাভ কিছু হয়নি। তা সত্ত্বেও অশান্তি ক্রমশই বাড়ছিল। রবিবার সন্ধেয় স্ত্রীকে হোয়াটসঅ্যাপে স্ত্রীকে সুইসাইড নোট পাঠান। এরপর বেশ গভীর রাতে স্ত্রীকে ফোন করেন ব্যাংক আধিকারিক। ইন্টারনেট অন করতে বলেন। সেই অনুযায়ী স্ত্রীকে মোবাইলের ইন্টারনেট অন করেন। মুহূর্তের মধ্যে ভিডিও কল করেন ব্যাংক আধিকারিক। ভিডিও কল চলাকালীন গলায় নাইলনের দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
স্বামীকে চোখের সামনে আত্মহত্যা করতে দেখে কার্যত অবাক হয়ে যান অপর্ণা। তিনি চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডাকেন। এরপর সরাসরি লালবাজারে যোগাযোগ করেন। তারপর যোগাযোগ করা হয় গড়ফা থানায়। পুলিশ খবর পাওয়মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে ততক্ষণে সব শেষ। পুলিশ দরজা ভেঙে ওই ব্যাংক আধিকারিকের ফ্ল্যাটে ঢোকে। সিলিং থেকে ঝুলতে দেখা যায় তাঁকে। তড়িঘড়ি দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.