Advertisement
Advertisement

কালোর বদলে গাঢ় নীল, সংখ্যাতত্ত্বের অঙ্ক কষে গাড়ি উদ্ধার পুলিশের

রাজু সিং নামে ওই গাড়ির চালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

kolkata police seized the vehicle
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:March 15, 2019 9:50 pm
  • Updated:March 15, 2019 9:50 pm

অর্ণব আইচ : রঙের ভ্রম। কালো গাড়ির সন্ধান চালিয়ে শেষ পর্যন্ত উদ্ধার হল গাঢ় নীল গাড়ি। দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালানো গাড়িটির খোঁজে নামার পর পুলিশের হাতে ছিল শুধু চারটি সংখ্যা। ১, ৩, ৪ আর ৯। নিউ আলিপুর থানার মধ্যে চলল সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে দীর্ঘ হিসেব-নিকেশ আর অঙ্ক কষা। শেষ পর্যন্ত অঙ্ক কষেই নিউ আলিপুর থানার পুলিশ প্রমাণ করল গাড়িটি কালো নয়, গাঢ় নীল। তারপর বেহালার একটি গ্যারাজ থেকে উদ্ধার হল সেই গাড়ি। কালো নয়, গাঢ় নীল। তবু গাড়ির সামনের দিকে সামান্য তুবড়ে যাওয়া অংশটিই প্রমাণ করে দেয়, দুর্ঘটনার পিছনে রয়েছে এই গাড়িটিই। রাজু সিং নামে ওই গাড়ির চালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৪ মার্চ এই ঘটনার সূত্রপাত। রাত সোয়া এগারোটা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুরের সাহাপুর কলোনি দিয়ে বেপরোয়া গতিতে আসছিল গাড়িটি। এতটাই বেপরোয়া যে, জনা পাঁচেক মানুষকে ধাক্কা মারার চেষ্টা করে গাড়িটি। রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা এক বিশিষ্ট ব্যক্তির গাড়িতেও ধাক্কা দেয়। এলাকার বাসিন্দারা তাড়া করলে দাঁড়ানোর বদলে গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যায় গাড়িটি। সিসিটিভির ফুটেজে চলন্ত গাড়িটির ছবি মিললেও তার তথ্য জানা যায়নি। এলাকার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গাড়ির নম্বর চাইলে আরও ধন্দে পড়ে যান পুলিশ আধিকারিকরা। প্রায় প্রত্যেকেই জানান, গাড়ির রং ছিল কালো। তাঁদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে যে, নম্বরপ্লেটে ১, ৩, ৪ ও ৯ নম্বর ছিল। এবার নিউ আলিপুর থানায় শুরু হয় সংখ্যাতত্ত্বের খেলা। কত রকমভাবে সাজানো যায় এই নম্বরপ্লেট ? অনেক রকমভাবেই সাজানো শুরু হয়।

Advertisement
[৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড বিধায়ক অর্জুন সিং, তৃণমূলে যোগ দিলেন তাঁর ভাই]

এর মধ্যে কয়েকজন পুলিশকে জানান, প্রথম দু’টি সংখ্যা হয় ৩৪ না হয় ৪৩। ফের শুরু সংখ্যা সাজানো। ৩৪১৯, ৩৪৯১, ৪৩১৯ না কি ৪৩৯১ ? এই চারটি নম্বর ধরে তদন্ত শুরু করেও ২২৭টি বিভিন্ন ধরনের গাড়ির সন্ধান মেলে। তার মধ্যে থেকে বাছাই শুরু হয় বিশেষ ধরনের কালো রঙের গাড়ি। কিন্তু এ যে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় ! শেষ পর্যন্ত ৪৭টি গাড়ির তালিকা তৈরি হয়। কিন্তু, তাতেও মিটল না সমস্যা। প্রত্যেকটি গাড়ি আলাদাভাবে খতিয়ে দেখা শুরু হয়। গাড়িগুলির বেশিরভাগের মালিকের বাড়ি দক্ষিণ কলকাতায়। শেষ পর্যন্ত অঙ্ক মেলে। গাড়ির নম্বর ডবলু বি ০২ ওয়াই ৪৩৯১। গাড়ির মালিক একটি চা কোম্পানির মালিক। এন এস রোডে এই সংস্থায় গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, গাড়িটি ওই সংস্থার পক্ষ থেকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বেহালার পর্ণশ্রী পল্লির বড়বাগান রোডের বাসিন্দা রাজু সিংকে। তার বাড়িতে হানা দিয়ে দেখা যায়, সে নেই। তার পরিবারের লোকেরা জানান, রাজু এক মাস ধরে বাড়ির বাইরে। কিন্তু, মোবাইলের টাওয়ার যে বলছে, আগের রাতেই সে ছিল বেহালা এলাকায়। সেই সূত্র ধরেই জেমস লং সরণির একটি গ্যারাজে গিয়ে গাড়িটি পুলিশ উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার হয় রাজু। পরে দোষও স্বীকার করে সে।

Advertisement

অঙ্ক মিলল। কিন্তু গাড়ি উদ্ধার করে একটু অবাক আধিকারিকরা। কালো কোথায় ? গাড়ির রং যে গাঢ় নীল। জানা যায়, রাতের অন্ধকারে কালো আর গাঢ় নীল যে একই রকমের মনে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। তা হোক, অঙ্কে একশোয় একশো পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে পুলিশের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ