বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: মারণ করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) সঙ্গে দশদিনের যুদ্ধে হার মানলেন রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় (Ananda Deb Mukherjee)। আজ সকালে দক্ষিণ কলকাতার এক নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৫ বছর। রাজ্যে সাক্ষরতা প্রসারে একেবারে সামনের সারিতে থাকা ব্যক্তিত্বের প্রয়াণে শোকগ্রস্ত শিক্ষামহল। প্রাক্তন শিক্ষককে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁর অগণিত ছাত্রছাত্রী।
জানা গিয়েছে, সমুদ্রবিজ্ঞানী তথা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় দিন দশের আগে কোভিডে আক্রান্ত হন। দক্ষিণ কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তিনি। স্ত্রী প্রয়াত হয়েছেন আগেই। একমাত্র কন্যা থাকেন আমেরিকায়। ফলে এখানে নিকটজন বলতে তেমন কেউ ছিল না তাঁর। করোনা রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে ভরতি হন নার্সিংহোমে। সেখানেই ১০ দিন ধরে যুদ্ধ চলছিল। তবে সবরকম চেষ্টার পরও করোনার কবল থেকে সত্তরোর্ধ্ব শিক্ষাবিদকে রক্ষা করতে পারেননি চিকিৎসকরা। আজ সকালে নার্সিংহোমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আমেরিকায় মেয়েকে এই দুঃসংবাদ জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছেন, কোভিড প্রোটোকল মেনেই আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
আসলে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অথবা সমুদ্রবিজ্ঞানী বললে আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের পরিচয় অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এ রাজ্যে সাক্ষরতা অভিযানের অগ্রণী ভূমিকা ছিল তাঁর। বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী বিশিষ্ট অধ্যাপক ঘরে ঘরে শিক্ষা পৌঁছে দিতে সরকারি পরিকল্পনায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। সমুদ্রবিজ্ঞানে দক্ষতার কারণে বাম আমলে দিঘা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান পদেও নিযুক্ত ছিলেন।
২০০৬ সালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর নিজের মতোই শিক্ষাচর্চা করতেন। আজীবন শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। অগণিত ছাত্রছাত্রীর কাছে ছিলেন প্রিয় ‘স্যর’। ছিলেন অতি পরিচিত মুখ। করোনার কবলে পড়ে তাঁর আচমকা এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউই। এদিন খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজ্যের শিক্ষামহলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.