অভিরূপ দাস: ছোট হলে দিনপ্রতি সাড়ে তিনশো টাকা। বড় হলে সাড়ে চারশো টাকা থাকা-খাওয়ার খরচ। মানুষের নয়, কুকুরের। অসুখ বেড়েছে আমজনতার। যার জেরে ঠিকানা বদলেছে সারমেয়র। মালিক পজিটিভ (COVID-19 Positive) হলে আর বাড়িতে নয়, পোষ্যর ঠাঁই হচ্ছে ক্রেশে। সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে শহরের একাধিক বেসরকারি ডগ ক্রেশে আর তিল ধারণের জায়গা নেই। থিকথিক করছে ডোবারম্যান, ল্যাব্রাডর, লাসা।
বাদামি লোমশ, কুচকুচে কালো, ল্যাজঝোলাদের সামলাতে ব্যস্ত ক্রেশ মালিকরা। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে মাথা তুলেছে অগুনতি কুকুরের ক্রেশ। লেকটাউন এলাকায় কুকুরের ক্রেশ চালান তপন দাস। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিদিনই একটা-দুটো করে কুকুর আসছে। চাপ এতই যে, তাদের কুকুর রাখার রেট বাড়াতে হয়েছে। এই মুহূর্তে অ্যালসেশিয়ান, ল্যাব্রাডরের মতো বড় কুকুর রাখার রেট দিনপ্রতি সাড়ে চারশো টাকা। আর স্পিচ, পাগের মতো ছোট কুকুর রাখতে খরচ হবে দিনপ্রতি সাড়ে তিনশো টাকা।
তবে সমস্যা রয়েছে একটা এবং তা মারাত্মক। কুকুর রেখে তো যাচ্ছেন। কিন্তু সুস্থ হয়ে গেলেও আর নিয়ে যাচ্ছেন না। এমন ঘটনা ভূরিভূরি। দক্ষিণ শহরতলির কসবায় কুকুরের ক্রেশ চালান কাশিকা অরোরা। তাঁর কথায়, ২০২০ সালে কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের লকডাউনে এই ঘটনা প্রথম চোখে আসে। কাশিকার বক্তব্য, লকডাউনে ওয়ার্ক ফ্রম হোমে হাতে ছিল দেদার সময়। তখন অনেকেই কুকুর কিনেছিল। তারপর ধীরে ধীরে অফিস খুলে গিয়েছে। কুকুরকে আর দেওয়ার মতো সময় নেই। তাকে ক্রেশে রেখেই তাই উধাও হয়ে যাচ্ছেন মালিকরা।
এই মানসিকতার সমালোচনা করেছেন পশুপ্রেমীরা। ফেলে যাওয়া কুকুরের কী হবে? ডগ ক্রেশের মালিক তপন দাস জানিয়েছেন, “অনেকেই অসুস্থ হলে কুকুর রেখে যাচ্ছেন, আর নিচ্ছেন না। আমরা যখন দেখি মালিক আর দাবি জানাচ্ছেন না, কোনওরকম যোগাযোগ করছেন না, তখন অ্যাডাপ্টেশনের বিজ্ঞাপন দিই। সহৃদয় কোনও ব্যক্তি ফেলে দেওয়া কুকুরের দায়িত্ব নেন। কোভিড পজিটিভ হয়েছেন আশুতোষ কলেজের অধ্যাপক সমন্বিতা দাস। তাঁর নিজের পোষ্য রয়েছে। জানিয়েছেন, এতদিন এই ধরনের ক্রেশ ব্যবহার হত বাড়ির সকলে ঘুরতে গেলে। পোষ্যকে সেখানে রেখে যেতেন বাড়ির বাসিন্দারা। ওমিক্রনের দাপটে ঘুরতে যাওয়া লাটে উঠেছে। মালিক অসুস্থ হলে তাঁর সারমেয়র দেখভাল তো হচ্ছে এসব জায়গায়। খারাপ কী?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.