নব্যেন্দু হাজরা: বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই। কিন্তু, ব্রাবোর্ন রোডের নিচ দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে গিয়ে বিপাকে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কারণ, বিপজ্জনক বাড়ি। সংখ্যাটা সাড়ে ছয়শোরও বেশি। ৬৬টি বাড়ি আবার অতি বিপজ্জনক।এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজের সময়সীমা ১৭ মাস। কিন্তু, বিপজ্জনক বাড়ির জন্য আদৌও সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে তো? সংশয়ে কেএমআরিএল কর্তারা।
[না জানিয়েই মোবাইল ঘাঁটছে স্বামী, অভিযোগ জানাতে সোজা লালবাজারে স্ত্রী]
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর যাত্রাপথে এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত আড়াই কিমি এলাকায় বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা কম নয়। কলকাতা পুরসভার কাছে ওই বাড়িগুলির নকশা চেয়েছে নির্মাণকারী সংস্থা। আলাদাভাবে চলছে সমীক্ষার কাজও। বাড়ির অবস্থা অনুযায়ী শ্রেণিবিন্যাস করে ফেলতে চাইছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণকারী সংস্থা। জানা গিয়েছে, মে মাসের শেষে অথবা জুনের গোড়ায় এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহের দিকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হবে। এসপ্ল্যানেডে নামবে নতুন দু’টি টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম)। মেট্রোর সুড়ঙ্গ বিপজ্জনক বাড়িগুলির কাছে পৌঁছবে ডিসেম্বরে। আর মেট্রোর কাজ শুরু হলে গেলে ওই সব বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরাতে হবে। তাই এখন থেকেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলে শুরু করে দিয়েছেন মেট্রোর কর্তারা। তবে শুধু বিপজ্জনক বাড়িই নয়, আড়াই কিমি এই যাত্রাপথে মেট্রোপলিটন বিল্ডিং, মাউন্টেন্ড পুলিশ হেডকোয়ার্টার, কলকাতা পুরসভা, ক্যালকাটা টেকনিক্যাল স্কুল, বিধানচন্দ্র রায় বসতবাড়ি মতো হেরিটেজ ভবনও রয়েছে। সুতরাং ঝক্কি কম নয়।
[অত্যাধুনিক জ্যাকেটের আড়ালে পাচার, উদ্ধার তিন কোটির সোনা]
এসপ্ল্যাসেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত যাত্রাপথে মেট্রোর কোনও স্টেশন থাকছে না। কিন্তু, বিপজ্জনক বাড়ি ও হেরিটেজ ভবন বাঁচিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়া বেশ কঠিন হবে বলে মনে করছেন নির্মাণকারী সংস্থা। তাঁদের দাবি, কয়েকটি বাড়ির অবস্থা এতটাই খারাপ, যে টানেল বোরিং মেশিন বা টিবিএমের কম্পনেই ফাটল ধরতে পারে। একটি বাড়ি থেকে অন্য বাড়ির দূরত্ব খুব বেশি নয়। বাড়িগুলি প্রায় গায়ে গায়েই বলা চলে। তাই একটি বাড়ি বাঁচাতে গেলে অন্য বাড়ি ক্ষতির সম্ভাবনাও ষোলো আনা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএলের জেনারেল ম্যানেজার এ কে নন্দী বলেন, ‘এখনও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হয়নি। পুরসভার কাছে কোন বাড়ির কী অবস্থা তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে এতগুলো বাড়ি সামলে কাজ করা তো সহজ নয়! ওখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যেমনটা হয়েছিল ব্রাবোর্ন রোডের কাছে। সেখানে ২৫টি পুরনো বাড়ি ছিল প্রকল্প এলাকার কাছে। অনেকগুলো পরিবারকেই কাজের সময় হোটেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’
[শহরের বুকেই প্রতারণা চক্র, তদন্তে লালবাজারের সাইবার সেল]