১৭ অগ্রহায়ণ  ১৪৩০  শনিবার ২ ডিসেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

খাবারেও দূর হয় অবসাদ, নয়া গবেষণায় দাবি বিশেষজ্ঞদের

Published by: Sayani Sen |    Posted: April 27, 2019 9:20 pm|    Updated: April 27, 2019 9:20 pm

Are you depressed, eat foods says researcher in a new study

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে অবসাদের সঙ্গে খাবারের যোগসূত্র রয়েছে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকের দাবি নিয়ে লিখছেন কোয়েল মুখোপাধ্যায়

বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার খেলে ব্রণ এবং পেটের সমস্যা হবেই হবে। খাদ্যতালিকায় স্নেহ পদার্থের আধিক্য থাকলে মেদ ধরবেই। কিন্তু অবসাদ? খাবারের সঙ্গে কী তার কোনও যোগসূত্র আছে? উত্তর হ্যাঁ এবং না, দুটোই। বুঝিয়ে বলা যাক। বছরের পর বছর ধরে এই বিষয় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা। কখনও কোনও গবেষণায় সদর্থক ফল মিলছে, আবার কখনও ঘটছে উলটোটাও। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের পুষ্টিবিদ্যা বিভাগের গবেষক, প্যাট্রিসিয়া চোকানোবেদোয়ার দাবি, তাঁদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এখনও পর্যন্ত অবসাদের সঙ্গে খাদ্য সংক্রান্ত ‘ফ্যাক্টর’-এর প্রত্যক্ষ যোগসূত্র মেলেনি, যা অন্যান্য গবেষকদের ক্ষেত্রে মিলেছে। কিন্তু একটা দিকে নিশ্চিত হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের চিকিৎসকরা। আর সেটা হল ‘ফুড’ এবং ‘মুড’-এর মধ্যে একটা ‘কানেকশন’ অবশ্যই আছে। এর আগেও বিজ্ঞানীরা বহুবার বলেছেন, কোনও কারণে মনখারাপ থাকলে চকলেট খাওয়ার প্রবণতা মেয়েদের ক্ষেত্রে বেড়ে যায়। এরকম আরও বহু ‘স্টাডি’ আছে, যা প্রমাণ করে খাবার-দাবারের সঙ্গে ‘মুড আপলিফটমেন্ট’ সম্পর্কযুক্ত।

[ আরও পড়ুন: খুলল ‘মোতি মহল’-এর দ্বার, ইতিহাসের বিখ্যাত বাটার চিকেন এখন কলকাতায়]

কিন্তু নির্দিষ্ট করে অবসাদের সঙ্গে ‘ফুড কানেকশন’ কী সত্যিই রয়েছে? নার্সেস হেলথ স্টাডি এবং ওমেন’স হেলথ ইনিশিয়েটিভ-এর সমীক্ষা আবার বলছে ‘হ্যাঁ’। কারণ তাদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অবসাদের সঙ্গে কিছু কিছু খাবারের যোগসূত্র রয়েছে। ২০০৫ সালের এই সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ওবেসিটিতে। আর তাতে লেখা হয়েছিল নির্দিষ্ট কিছু খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের সঙ্গে মেদবৃদ্ধি এবং তার জেরে অবসাদ হওয়া – পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। একইরকমভাবে আবার ২০১১ সালের আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-ও পৃথক এক সমীক্ষায় জানায়, যে সব মহিলা বেশি পরিমাণে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার-দাবার তাঁদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখেন, তাঁদের অবসাদে ভোগার সম্ভাবনা অন্যান্যদের তুলনায় অনেকটাই কম হয়। আরও একটি পিছিয়ে যান। ২০১৪ সাল। ‘ব্রেন, বিহেভিয়ার অ্যান্ড ইমিউনিটি’ সংস্থার সমীক্ষায় জানা গিয়েছিল, অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি রয়েছে, এমন ঠান্ডা পানীয় এবং মটন যাঁরা খান, তাঁদের অবসাদে ভোগার আশঙ্কা বেশি থাকে। একই রকমভাবে ২০১৮ সালের ইউরোপীয়ান জার্নাল অফ নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত হয় যে, চিকেন হোক বা মটন হোক বা পর্ক, মাংস বেশি খেলে অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

[ আরও পড়ুন: হোটেল-রেস্তরাঁয় এবার একই তেলে বারবার রান্না নিষিদ্ধ]

চোকানোবেদোয়ার দাবি, এমনিতেই অত্যধিক ধূমপান করা বা মদ্যপান করা মানুষের শরীরের ক্ষতি করে। বাদ যায় না মস্তিষ্কও। তাই তাঁর মতে, অবসাদে আক্রান্ত হওয়া এবং খাবার-দাবারের মধ্যে কোনও নির্দিষ্ট এবং প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া যাক বা না যাক, প্রত্যেকেরই উচিত সুষম আহার গ্রহণ করা। আর তার জন্য তাঁর ‘চয়েস’ মেডিট্রেনিয়ান ডায়েট। এই ডায়েটে থাকে ফলমূল, শাক-সবজি, অলিভ ওয়েল, হোল গ্রেন, চর্বিবিহীন মাংস এবং মাছ। এই ডায়েটে অতিরিক্ত স্নেহপদার্থ এবং চিনির কোনও জায়গা নেই। চোকানোবেদোয়া জানাচ্ছেন, এই ডায়েট গ্রহণ করলেই যে অবসাদ রে রে করে পালিয়ে যাবে, তা নয়। কারণ এখনও পর্যন্ত এই ডায়েট গ্রহণের সঙ্গে অবসাদ দূরীভূত হওয়ার কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকদের হাতে আসেনি। কিন্তু একটা কথা পরিষ্কার। আর সেটা হল, এই ডায়েট গ্রহণ করলে শরীরের কোনও ক্ষতি হবে না, আর তাই ভাল থাকবে মস্তিষ্কও। মেডিট্রেনিয়ান ডায়েট সেবনে রক্তচাপ থাকবে নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি ডায়াবিটিস এবং কার্ডিয়োভাসকুলার সমস্যারও ঘটবে নিরসন। শরীর থাকবে নিরোগ। আর আপনি হবেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। এই ব্যস্ততার যুগে, এইটুকু আশ্বাসই তো যথেষ্ট! না?

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে