সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাদা, নরম, রসে ভরপুর রসগোল্লা শুধু রসনাতৃপ্তিতেই আর সীমাবদ্ধ নয়। বাঙালির কাছে রসে টইটুম্বুর রসগোল্লার এক আবেগও বটে। সেই রসগোল্লা আদতে কার, তা নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে ক্রমাগত। ওড়িশা বলে আমার তো আবার পালটা রে রে করে ওঠে বাংলা। বৃহস্পতিবারই দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে ইতি টানল চেন্নাইয়ের জিআই আদালত। তাতেই অবশেষে প্রমাণ হয়ে গেল রসগোল্লা প্রকৃতই বাংলার। রসযুদ্ধে জয়ী হয়ে মুখের হাসি চওড়া হয়েছে বাংলার মিষ্টি প্রেমীদের।
টাইম মেশিনে চড়ে চলুন বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে যাওয়া যাক। ফিরে যাওয়া যাক ১৮৬৪ সালের প্রেক্ষাপটে। সে বছরই নবীনচন্দ্র দাস প্রথম রসগোল্লা তৈরি করতে শুরু করেন। ১৮৬৮ সালে বর্তমান রসগোল্লার জন্ম। তথ্য বলছে, ওড়িশায় রসগোল্লা তৈরি শুরু হয় আরও পরে। কিন্তু বাংলা-ওড়িশা দুই রাজ্যের মধ্যে রসযুদ্ধ জারি রয়েছে গত জুলাই থেকে। সেই সময় ওড়িশাকে জিআই ট্যাগ দিয়েছিল চেন্নাইয়ের জিআই বা জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন রেজিস্ট্রি সংস্থা। ওই শংসাপত্রে বলা হয় রসগোল্লা ওড়িশার আঞ্চলিক মিষ্টি হিসাবে চিহ্নিত হবে। ২০২৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রসগোল্লার দাবিদার হিসাবে ওড়িশার নামই গ্রাহ্য হবে বলেও উল্লেখ করা হয় শংসাপত্রে।
[আরও পড়ুন: রেস্তরাঁয় রান্না থেকে পরিবেশন সবই করছে রোবট, জানেন কোথায়?]
কিন্তু এই রায় মানতে নারাজ বাংলার রসগোল্লা বিশেষজ্ঞরা। তাই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ফের জিআই আদালতের দ্বারস্থ হয় বাংলা এবং ওড়িশা দুই রাজ্যই। বৃহস্পতিবার সেই মামলা নিয়ে চেন্নাইয়ের জিআই আদালতে আলোচনা শুরু হয়। পুরনো নানা নথিপত্র ঘেঁটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলার তরফে জানানো হয়, দুই রাজ্যের রসগোল্লার নাম এক ঠিকই। তবে দু’রাজ্যের রসগোল্লার আকৃতি এবং চরিত্র মোটেই এক নয়। পালটা যুক্তি দেওয়া হয় ওড়িশার তরফেও। তবে ধোপে টেকেনি সেই যুক্তি। অবশেষে নানা তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখার পরেই রায় দেয় চেন্নাইয়ের জিআই আদালত। সেই রায়েই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয় রসগোল্লা শুধুমাত্র বাংলারই। রসযুদ্ধে জয়ী হওয়ায় মুখের হাসি চওড়া হয়েছে বাংলার মিষ্টিপ্রেমীদের।