সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আম খেতে ভালবাসেন না এমন বাঙালির সন্ধান মেলা দুষ্কর। কাঁচা হোক বা পাকা, প্রবল দাবদাহের মাঝেই আম যেমন নিয়ে আসে রসনার পরশ, তেমনই মনে জাগায় তৃপ্ততার ছোঁয়া। আর তাই রসনাপ্রেমীদের আমের স্বাদের পরশের ছোঁয়া দিতেই শহর তিলোত্তমার অন্যতম ভেজিটেরিয়ান তথা নিরামিষ রেস্তোরাঁয় হাজির বাহারি স্বাদের আমের মেনু। এক অর্থে যাকে বলে ‘আমলিসিয়াস’।
‘খানদানি রাজধানী’-তে আমের স্বাদবিলাসের সম্ভারের ছোঁয়া তাই শুরু থেকেই। মেনুতে ম্যাঙ্গো লস্যি ও ম্যাঙ্গো ঠান্ডাই দিয়ে আপ্যায়নের শুরুটা হলেও রয়েছে আম খাস্তা কচুরি, কাঁচা আম চাইনিজ ভেল, কাচ্চি-ই কয়রি খিচিয়া চাট, বারারা বায়রি রোল, ম্যাঙ্গো পিজ্জা ধোকলা, পালক আমরস চাট ও কয়রি মাকাই কা স্যালাডের বাহারি রসনা। মেন কোর্সে আমরস বুন্দি, আম চুরি গুন্ডা কি সব্জি, কয়রি মশালে ভাত, কচ্চে আম কি লউঞ্জি ও কয়রি থেপলা। শেষ পাতে রসনা মেটাতে রয়েছে হাপুস জেলেবি, ম্যাঙ্গো গুলকন্দ মালপুয়া, ম্যাঙ্গো সাবুদানা ক্ষীর। ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া বাহারি স্বাদের এই আমের রসনা চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। গরমে এই প্রবল তাপপ্রবাহের মাঝে পাঠকদের জন্য রইল ‘খানদানি রাজধানী’ রেস্তোরাঁর শেফের দেওয়া জিভে জল আনা আমের তিনটি রেসিপি।
ম্যাঙ্গো পিজ্জা ধোকলা
উপকরণ : ধোকলার জন্য: চালের গুঁড়ি ২০০ গ্রাম, বিউলির ডাল ৩০ গ্রাম (ভিজে), দই ১০০ মিলি, চিনি স্বাদ অনুযায়ী, তেল ২ চা চামচ, সাইট্রিক অ্যাসিড ৪ গ্রাম।
ধোকলার মিশ্রণের উপকরণ : চিনি স্বাদ অনুযায়ী, তেল ৪ চা চামচ, সরষে দানা ১/২ চা চামচ, হিং-১ চিমটে, জল-পরিমাণ মতো, নুন-স্বাদ অনুযায়ী, লেবুর রস-১ চা চামচ।
পিজ্জার উপর টপিং বা সাজানোর জন্য : আমরস-২০০ গ্রাম, বেদানা-৫০ গ্রাম, আমুলের গ্রেট করা চিজ-১০০ গ্রাম, পাকা আমের কিউব বা টুকরো ৫০ গ্রাম, লাল ও সবুজ মরিচ ডাইস-৫০ গ্রাম, চাট মশলা-২ গ্রাম।
তৈরির প্রণালী : প্রথমে একটি মিক্সার ব্লেন্ডারে চাল গুঁড়ি, ভিজে বিউলির ডাল, দই, চিনি ও ১ চা চামচ তেল নিয়ে একটা ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এবার এতে পরিমাণ মতো জল দিয়ে মিশ্রণটিকে সামান্য পাতলা করুন বা বলা ভাল ঘনত্ব খানিকটা কমান। এবার এর মধ্যে হিং দিয়ে এক রাত মতো রাখুন। যাতে হিঙের স্বাদ পুরো মিশ্রণটিতে ভাল মতো ছড়িয়ে যায়। এবার এতে সাইট্রিক অ্যাসিড যুক্ত করুন। এবার স্টোভের উপর স্টিমার রেখে তাতে জল দিয়ে গরম করুন। এবার পাত্রের ধারে সামান্য তেল দিয়ে তার উপর ব্যাটার তথা মিশ্রণটিকে ছড়িয়ে দিয়ে স্টিমে বসিয়ে ২০ মিনিট মতো রাখুন। তারপর আঁচ থেকে নামিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করুন। ঠান্ডা করে নিয়ে ৩ ইঞ্চি ডায়ামিটার সার্কেলে একটা গোল কাট করে ধোকলা কেটে নিন। একটি প্যানে তেল নিয়ে গরম করে তাতে সরষে, লাল মরিচ ফোড়ন দিয়ে তাতে সামান্য পরিমাণে জল দিন। এবার এই গরম জলটিকে ধোকলার উপর (আগে থেকে কেটে রাখা) আস্তে আস্তে ছড়িয়ে দিন। এবার গোলাকার ধোকলাগুলির উপর পরিমাণ মতো আমরস সহ অন্যান্য টপিং বা সাজানোর উপকরণগুলি দিয়ে হাল্কা উষ্ণ অবস্থায় পরিবেশন করুন প্লেটে সাজিয়ে।
কাঁচা আম ও পিঁয়াজের ভাজিয়া
উপকরণ : ১/২ কাপ কুরানো কাঁচা আম, ১/৪ কাপ কুরানো আলু, ১/৪ কাপ সরু করে কাটা পিঁয়াজ, ১/২ কাপ বেসন, ২ টেবল চামচ আদা-কাঁচালঙ্কা পেস্ট, নুন স্বাদমতো, ভাজার জন্য তেল।
তৈরির প্রণালী : প্রথমে একটি বড় বাটিতে তেল ব্যতীত সমস্ত উপকরণগুলিকে নিয়ে সামান্য পরিমাণে জল দিয়ে ঘন করে ব্যাটার তৈরি করে ফেলুন। এবার কড়াইতে তেল দিয়ে গরম করে তার মধ্যে ওই ব্যাটারটি বা মিশ্রণটিকে ছোট ছোট করে দিয়ে পকোড়ার মতো করে ভাজুন। একেবারে ডিপ ফ্রাই করবেন। ভাল মতো ভাজা হয়ে গেলে প্লেটে তুলে নিয়ে গরমাগরম পরিবেশন করুন।
আমরস বুন্দি
উপকরণ : পাকা আম থেকে বের করে নেওয়া আমের রস বা পাল্প, বুন্দি (রিফাইন্ড ময়দা ও ফুড কালার একত্রে মিশিয়ে গরম তেলে ভেজে নিয়ে চিনির রসে দু’মিনিট মতো ডুবিয়ে ঠান্ডা করলেই বুন্দি বা বোঁদে তৈরি হয়ে যাবে)।
তৈরির পদ্ধতি : আমের রস অর্থাৎ এককথায় পাকা আমের ক্কাথ বা পাল্পকে একটি বড় বাটিতে নিয়ে ওর মধ্যে সামান্য পরিমাণে দুধ মেশাতে পারেন (যদি একান্তই পাল্পটি সামান্য টক হয়ে থাকে), মূলত আমরসটি ঘন বা স্মুথ করার জন্য। এবার ওর মধ্যে ছোট এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে সামান্য পরিমাণে চিনি দিয়ে মিশ্রণটিকে ভাল মতো নেড়ে নিয়ে রাখুন। যাতে চিনি ও এলাচ গুঁড়ো মিশে গিয়ে আমরস মিষ্টি ও সুন্দর সুবাসিত হয়ে ওঠে। এবার ওর মধ্যে বোঁদে বা বুন্দি দিয়ে পরিবেশন করুন আমরস বুন্দি।