BREAKING NEWS

১৬ অগ্রহায়ণ  ১৪৩০  শুক্রবার ১ ডিসেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

স্রেফ আতঙ্কেই সর্বনাশ, নির্বিষ সাপের কামড়ে ‘ট্যাকিকার্ডিয়া’য় আক্রান্ত অনেকে

Published by: Sucheta Sengupta |    Posted: July 28, 2022 2:38 pm|    Updated: July 28, 2022 2:38 pm

People getting non venomous snake bites, suffering from panic attack called 'Tachycardia' | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

অভিরূপ দাস: ‘বিষ নেই তার কুলোপানা চক্কর’। এমনই ঘটনা দেখা গেল কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। স্বাভাবিক হৃদস্পন্দন মিনিটে ৬০ থেকে ৭০। বাড়তে বাড়তে সেটাই হয়ে গিয়েছে ১৮০। হাত-পা কাঁপছে, ধড়ফড় করছে বুক। অথচ সাপের (Snake) কামড় খাওয়া ব্যক্তি যে সাপটি হাতে করে নিয়ে এসেছেন, তা নিরীহ গোবেচারা দাঁড়াশ। গেরস্তের বাড়ির আনাচ-কানাচে ঘুরে বেড়ানো মামুলি নির্বিষ সাপ। তার কামড়েই শরীরের এমন হাল? সর্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাপের বিষের থেকেও মারাত্মক সর্পাতঙ্ক। ভয়েই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে রোগীর। বেড়ে যাচ্ছে হৃদস্পন্দন। চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম ‘ট্যাকিকার্ডিয়া’।

Snake

হার্ট দুর্বল থাকলে যে কোনও মুহূর্তে হৃদযন্ত্র বিকল। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে! কীভাবে? এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালের কার্ডিও থোরাসিক ভাসকুলার সার্জন ডা. সন্দীপ কর জানিয়েছেন, আতঙ্ক থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। চিকিৎসা পরিভাষায় যা ‘প্যানিক অ্যাটাক’। সাপ বা অন্যান্য সরীসৃপে আতঙ্ক অনেকেরই। নির্বিষ সাপ কামড়ালেও সেই আতঙ্ক থেকেই হাত-পা কাঁপা, বুক ধড়ফড় করা, মারাত্মক ঘাম হয়। এ সময় হৃদপিণ্ডের উপরের কিংবা নিচের প্রকোষ্ঠে অনিয়মিত সিগন্যাল পৌঁছয়। হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এ থেকেই হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack)।

[আরও পড়ুন: ‘একবার না পারিলে…’, ৩৯ বারের চেষ্টায় গুগলে চাকরি, যুবককে কুর্নিশ নেটিজেনদের]

সর্প বিশেষজ্ঞ বিশাল সাঁতরা বলছেন, সাপ নিয়ে আমজনতার অযথা আতঙ্কই সমস্যা। যে সাপ কামড়েছে তাকে বগদলদাবা করে নিয়ে আসতে হবে হাসপাতালে। তবেই মিলবে সঠিক চিকিৎসা। গাঁ-গঞ্জের মানুষের মনে গেঁথে যাওয়া এই বদ্ধমূল ধারণাকে দূর করতে বলছেন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. দয়ালবন্ধু মজুমদারও। তিনি জানিয়েছেন, সাপে কামড়ালে দ্রুত নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসুন। সাপ ধরে আনার কোনও প্রয়োজন নেই। এমনটা করতে গিয়ে হিতে বিপরীতও হচ্ছে। সাপের বিষের চরিত্র বুঝে এমন এক ট্যাবলেট তৈরি করা হয়েছে যা সর্পদষ্টের প্রাণনাশের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেবে। সেই ট্যাবলেটের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত স্নেহেন্দু কোনার জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত সাতজন ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন। এঁদের প্রত্যেককেই সাপ কামড়েছিল। দু’জন সাপ নিয়েই হাসপাতালে এসেছিলেন।

[আরও পড়ুন: ভুয়ো সিমে কথা, মাছ ধরা থেকে লং ড্রাইভ! পার্থ-অর্পিতার সম্পর্কের জল কতদূর?]

এমনটা করতে গিয়ে অনেক সময় ভুল সাপ নিয়েও হাসপাতালে আসছেন আক্রান্ত। অতি সম্প্রতি জলঢোঁড়া নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে (National Medical College) এসেছিলেন এক ব্যক্তি। তাঁর কিডনি বিকল হতে শুরু করে। শেষমেশ চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন ভুল সাপ নিয়ে এসেছেন তিনি। আদতে তাঁকে চন্দ্রবোড়া কামড়েছে। গোটা দেশে মূলত চারটি সাপের বিষের প্রতিষেধক মেলে – গোখরো, চন্দ্রবোড়া, কালাচ, ফুরশা। বঙ্গে তা তিনটি। ডা. দয়ালবন্ধু মজুমদারের কথায়, ”সাপ দেখে নয়, যাঁকে কামড়েছে তাঁর শরীরের লক্ষণ দেখেই প্রতিষেধক দেওয়া হয়। সাপ কামড়ে চলে গিয়েছে। অযথা খোঁজাখুঁজি করে সময় নষ্ট করবেন না।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে