Advertisement
Advertisement
corona Virus

শরীরে ভাইরাস কম থাকলেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি, বলছেন চিকিৎসকরা

মিউটেশনের কারণেই করোনা ভাইরাস সহজে যাচ্ছে না।

Bengali news: Person with little viral load can be a super spreader | Sangbad Pratidin

ফাইল ছবি

Published by: Paramita Paul
  • Posted:October 10, 2020 10:29 am
  • Updated:October 10, 2020 10:29 am

গৌতম ব্রহ্ম ও অভিরূপ দাস: প্রচণ্ড অসুস্থ কিন্তু কাউকে অসুখ ছড়াননি। কেউ আবার একাধিক লোককে করোনা দিয়েছেন। আরটিপিসিআর টেস্টে শুধু ধরা পরে রোগী কোভিড পজিটিভ না নেগেটিভ। কিন্তু সেটাই আসল নয়। রোগীর শারীরিক অবস্থা কেমন তা জানা যাবে ভাইরাল লোড যাচাই করলে। যে লোড বেশি থাকলে ঝুঁকি বেশি। কম থাকলে ঝুঁকি কম।

তবে সেটাকেই মানদন্ড মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছেন, ভাইরাল লোড নির্ভর করে সিটি ভ্যালু বা সাইকেল থ্রেশহোল্ড ভ্যালুর উপর। সিটি ভ্যালু কম হওয়া মানে ভাইরাল লোড বেশি। এই সিটি ভ্যালুর ২৪ সূচককেই মাথায় রাখতে বলছেন চিকিৎসকরা। সিটি ভ্যালু ২৪-এর নিচে হওয়া মানেই ভাইরাল লোড বেশি। আবার সিটি ভ্যালু বেশি হওয়া মানে ভাইরাল লোড কম। কোভিড পজিটিভের সঙ্গে এই বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ বলেই মত শহরের চিকিৎসকদের। আরটিপিসিআর টেস্টের রিপোর্টে সিটি ভ্যালুর উল্লেখ থাকে না। তবে উপায়? কমিউনিটি মেডিসিনের চিকিৎসক ডা. বিজয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, সিটি ভ্যালু ধরতে পারার সহজ একটি উপায় আছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন : বিষে বিষে বিষক্ষয়! ক্রনিক ব্যথা ভোলাতে ‘পেন কিলার’ হয়ে উঠছে করোনাই]

করোনা একটি আরএনএ প্রজাতির ভাইরাস। কিছু সাইকেল বা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একে ডিএনএ তে রূপান্তরিত করা হয়। এবার ডিএনএকে টিকে ধরতে কতগুলি সাইকেল ব্যবহার করতে হচ্ছে সেটাই আসল। সোয়াবে জেনেটিক মেটেরিয়াল বেশি থাকলে সহজেই ধরা যাবে, মানে সাইকেল ভ্যালু কম লাগবে। তার মানেই ভাইরাল লোড বেশি। তবে এর মধ্যেও কিছু ফাঁক রয়েছে। যিনি সোয়াব টেস্ট করছেন তাঁর দক্ষতার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে। আরটিপিসিআর টেস্টে নাকের মধ্যে বা মুখ থেকে যে ন্যাসো ফেরিঞ্জিয়াল বা অরো ফেরিঞ্জিয়াল সোয়াব নেওয়া হয়। এই সোয়াব যিনি নিলেন তিনি ঠিকভাবে নিতে পারলেন কি না তার ওপরেও নির্ভর করে ভাইরাল লোড। নির্দিষ্ট যে জায়গা থেকে নেওয়া হল সেখানে ভাইরাস আদৌ কতটা ছিল সেটাও দেখার বিষয়। ডা. জোয়ারদার ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন, যে সোয়াবের স্যাম্পেলে ভাইরাস বেশি, ধরে নেওয়া যায়, সেটা যে মানুষটির শরীর থেকে নেওয়া হয়েছে তার ভাইরাল লোড বেশি। অনেকেই ভাবেন ভাইরাল লোড যার বেশি তাঁর থেকে সংক্রমণ বেশি ছড়ানোর সম্ভাবনা। এটা যদিও খুব ভোতা হিসেব বলেই মত ডা. ভাইরোলজিস্টদের।

Advertisement

[আরও পড়ুন : ক’দিন আগে সর্দি-কাশি হয়েছে? হয়তো কম ভোগাতে পারে করোনা, দাবি গবেষকদের]

প্রশ্ন উঠছে একজন মানুষ কতজনকে সংক্রমিত করতে পারবেন? ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, সেটা নির্ভর করে রিফ্র‍্যাক্টিং নম্বরের উপর। অতিমারির প্রথম দিকে প্রথমে একজন মানুষ তিনজনকে সংক্রামিত করছিলেন। এখন সেই সংখ্যাটা ১.৬২। চিকিৎসকরা অপেক্ষা করে আছেন কবে এই সংখ্যাটা শূণ্যতে আসবে। অর্থাৎ হোক না ভাইরাল লোড বেশি। একজন মানুষ যেন আরেকজনকেও সংক্রমিত না করতে পারেন। তার মানে ভাইরাল লোডের উপরেও সবকিছু দাঁড়িয়ে নেই। সিদ্ধার্থবাবুর ব্যাখ্যায়, এটাকেই বলা হয় ডিসপারসন ফ্যাক্টর। অর্থাৎ ভাইরাল লোড বেশি এবং তার সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি। তাই তিনি আরেকজনকে সংক্রমিত করতে পারবেন না। তা হলে তাঁকে স্প্রেডারও বলা যাবে না। এই বোধহয় ভাইরাস চলে এল রোগীর থেকে। এমন আশঙ্কায় ভোগেন অনেকেই। করোনা রোগীর এঁটো ফেলতে দেন না ময়লার গাড়িতে। সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের কথায়, “মিলিয়ন ভাইরাস শরীর থেকে নির্গত হলে তবেই আরেকজনকে সংক্রামিত করা সম্ভব। সাধারণত হাঁচি, কাশির মাধ্যমেই সেই পরিমাণ ভাইরাস বেড়োয়। আমার ইমিউনিটি বেশি থাকলে ১০ মিলিয়ন বা ২০ মিলিয়ন ভাইরাস থাকলেও তাকে স্প্রেডার বলা যাবে না। বিষয়টি অত সরল নয়।”

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ কমিউনিটি মেডিসিনের চিকিৎসক ডা. বিজয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ভাইরাল লোড বেশি হলেই গেল গেল অবস্থা এমনটা মনে করার কারণ নেই। সাধারণ ভাবে ছোটরা যাঁরা আক্রান্ত হয়েছে তাদের ভাইরাল লোড অত্যন্ত বেশি। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত থাকায় তারা ঠেকিয়ে দিয়েছে অসুখকে। ওই একই ভাইরাস নিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছেন সত্তরোর্দ্ধরা। তাঁর কথায়, অতিমারির প্রথমদিকে ভাইরাস শক্তিশালী থাকে। যত সময় যাবে ভাইরাসের ক্ষমতা অনেকটাই কমবে। কিন্তু মিউটেশনের কারণে করোনা ভাইরাস সহজে যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে যারা আক্রান্ত রয়েছেন তাদের বেশিরভাগেরই উপসর্গ সামান্য বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ