সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের আগে থেকেই বাড়ি থেকে কর্মীদের কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিল কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা। আর লকডাউনের পর তা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এখন জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সকলকেই বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে কোম্পানিগুলি। অনেকে ভেবেছিল, ‘আহা! তৃপ্তি করে কাজ করা যাবে।’ কেউ আবার বাড়ির লোকেদের সঙ্গে থাকার সময় পেয়ে লাফিয়ে উঠেছিল। কাজও হবে, আবার প্রিয়জনের সঙ্গে থাকাও হবে। কিন্তু ব্যাপারটা যে অত সহজ নয়, তা এখন হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে সবাই। এখন উলটে অফিস হবে যাওয়া হবে তার জন্য দিন গোনা শুরু হয়েছে। কিন্তু লকডাউন না কাটলে তো আর অফিসমুখো হওয়া যাবে না। তাই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’কেই করে তুলতে হবে আকর্ষণীয়।
এমন পরিস্থিতি শুধু ভারতে নয়, পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা দেশেই এখন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত নন, তাঁদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হচ্ছে। কিছুদিন আগে মালয়েশিয়ার মহিলা ও পরিবার উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছিল, বাড়িতে কাজ করার সময় অফিসের মতো সেজেগুজে যেন কাজ করতে বসে মহিলারা। অবশ্য সেই নির্দেশ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। কিন্তু সেসব কথা থাক। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করতে গেলে যে কিছু ব্যবস্থাপনা করতে হয়, তা তো আর ভুল নয়। কারণ বাড়িতে শুয়ে বসে কাজ করা কার্যত অসম্ভব। আবার অফিসের মতো এক জায়গায় ঠায় বসে কাজ করাও সম্ভব নয়। তাহলে উপায়?
[ আরও পড়ুন: লকডাউনে বন্ধ রেস্তরাঁর ঝাঁপ, বাড়িতেই পঞ্চব্যঞ্জনে মজে বাঙালি ]
উপায় আছে। প্রথম বাড়িতে ল্যাপটপ নিয়ে শুয়ে, বসে, বিছানায় উপুড় হয়ে, বালিশে ভর দিয়ে কাজ করার কথা ভুলে যান। কারণ ওভাবে কাজ করতে গেলে আপনার আরামও হবে না, আবার কাজটাও ঠিক মতো হবে না। ফলে একূল ওকূল, দু’কূল যাবে। তাই টেবিলে রাখুন ল্যাপটপ। সামনে চেয়ার নিয়ে বসুন। মোটকথা অফিসে যেভাবে কাজ করেন, সেভাবেই কাজে বসুন বাড়িতেও। এতে অন্তত ঘণ্টা খানেক আপনা মন চঞ্চল হবে না। কিছুটা কাজ এগিয়ে যাবে। সম্ভব হলে টেবিলটাকে অফিসের মতোই সাজিয়ে রাখুন। পেন, লেখার প্যাড রাখুন টেবিলেই। যাতে বারবার না উঠতে হয়, এমন ব্যবস্থা করেই কাজে বসুন। কিন্তু তাতেও তো মন টেকে না। অস্বাভাবিক নয়। বাড়িতে থাকলে টানা কাজ করা সত্যিই সম্ভব নয়। তাই এক ঘণ্টা অন্তর ঘুরে আসুন। পারলে নিজের চা-টা নিজেই বানিয়ে নিন। এতে একঘেয়েমি কাটবে।
বাড়িতে কাজ মানেই দিনভর ল্যাপটপের সামনে বসে থাকবেন, তা কিন্তু নয়। অফিসের মতো কাজ শেষ মানে ল্যাপটপ বন্ধ এখানেও। কঠোরভাবে এই নিয়মটা মেনে চলুন। নাহলে বাড়িতে অশান্তি অনিবার্য। সারা দিন আপনি অফিসের কাজ নিয়ে বসে থাকবেন, তা কিন্তু পরিবারের কেউ মেনে নেবে না। সে আপনি যতই বাড়িতে থাকুন। পরিবারে ছোট সদস্য থাকলে তো সমস্যা আরও বেশি। একটু ওকেও সময় দিন। এতে আপনি নিজেও যেমন রিফ্রেশ হতে পারবেন, তেমনই ওরও ভাল লাগবে। অফিসের জন্য বছরভর হয়তো সময় দিতে পারেন না ওকে। এখন সুযোগ আছে, সদ্ব্যবহার করুন। সেও কাজের মর্ম বুঝতে পারবে ছোট থেকেই। এতে ভবিষ্যতে আপনার এবং তার, উভয়েরই লাভ। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা থাকলে, তাদেরও সময় দিন।