ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: থিমপুজোর রমরমা চতুর্দিকে। তাই উৎসবের আনন্দে গা ভাসানো বহু বাঙালিই মণ্ডপসজ্জা দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন নানা পুজোয়। কিন্তু থিমপুজো কি আপনার না-পসন্দ? পরিবর্তে সাবেকিয়ানাই আপনার বেশি পছন্দ? তবে আপনার জন্য রইল শহরের বেশ কয়েকটি সেরা বনেদি বাড়ির খোঁজ। নবমীর সকালে মন চাইলে ভিড় জমাতেই পারেন সেখানে।
সাবর্ণ রায়চৌধুরির বাড়ির পুজো: বয়সের নিরিখে এই শহরের সবচেয়ে পুরনো পুজো সাবর্ণ রায়চৌধুরি বাড়ির। যদি সত্যি বনেদি বাড়ির পুজোর স্বাদ নিতে চান তবে আপনাকে এখানে পাড়ি জমাতেই হবে। পুরনো দিনের দুর্গাদালান, আটচালার প্রতিমা আপনাকে অবাক করবেই। বরিষার এই পুজো আপনার মন যে ছোঁবে, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাজা নবকৃষ্ণ দেব পরিবারের পুজো: নানা ব্যতিক্রমী নিয়মে ভরা শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। ২৬১ বছরের পুরনো এই পুজোতে কোনওদিন পশুবলি হয়নি। সন্ধিপুজোর শুরুর ক্ষেত্রে এই বাড়ির নিয়ম একেবারে অন্যরকম। ব্যতিক্রমী নিয়মের জন্য বিখ্যাত এই বাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জনও। তাই শোভাবাজারের এই পুজোয় আপনাকে ভিড় জমাতেই হবে।
বদনচন্দ্র রায় বাড়ি: বনেদিয়ানার স্বাদ পেতে চাইলে মধ্য কলকাতার বদনচন্দ্র রায়ের বাড়ির পুজোতে আপনাকে যেতেই হবে। বৈষ্ণব মতে এখানে উমা আরাধনা হয়। থিমপুজোর ভিড়ে শুধুমাত্র বনেদিয়ানাকে পুঁজি করেই এই পুজো ১৬০ বছরে পা দিয়েছে। তাই পুজোয় এই বাড়িও হতে পারে আপনার গন্তব্য।
পূর্ণেন্দু চন্দ্র ধর পরিবার: উত্তর কলকাতার এই বাড়িতে অসুরদলিনী রূপে মা পূজিতা হন না। এখানে অভয়া রূপে আরাধনা করা হয়। তাই দুর্গাপুজোয় একটু অন্যরকম স্বাদ পেতে চাইলে আপনাকে এই বনেদি বাড়িতে যেতেই হবে। ১৫৭ বছরের এই পুজোয় জাঁকজমক কমলেও, নিয়মে এখনও কোনও ছেদ পড়েনি। তাই এই বাড়িতে উমা আরাধনা আপনার মন ছুঁতে বাধ্য।
খেলাট ঘোষ পরিবার: সবচেয়ে বড় ঠাকুরদালান যদি দেখতে চান তবে আপনাকে উত্তর কলকাতার পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের খেলাট ঘোষ বাড়িতে যেতেই হবে। প্রায় ৮০ ফুট লম্বা এই ঠাকুরদালানে উমা আরাধনা হয়। এছাড়াও নবপত্রিকার ক্ষেত্রেও রয়েছে অভিনবত্ব। এখানে আজও এই বাড়ির মহিলাদের হাতে তৈরি মিষ্টিই নৈবেদ্য হিসাবে মায়ের কাছে দেওয়া হয়। তাই দেরি না করেই আজই একবার ঢুঁ মারুন বনেদিয়ানায় মোড়া এই বাড়িতে।
শিবকৃষ্ণ দাউ পরিবার: বিবেকানন্দ রোড ফ্লাইওভারের কাছের এই বাড়িতে পুজো শুরু হয়েছিল ১৮৪০ সালে। এখানের ঝোলা বারান্দা, ঠাকুর দালান যে আপনার মন ছোঁবে তা বলাই বাহুল্য। এই পরিবারের প্রতিমা সজ্জায় ব্যবহার করুন সোনা, রুপোর গয়নায়। অসাধারণ প্রতিমাই এই বাড়ির মূল আকর্ষণ। তাই বনেদিয়ানার টানে এই বাড়িই হোক আপনার গন্তব্য।
চন্দ্র পরিবার: বরাভয় মুদ্রায় দুর্গা প্রতিমা দেখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি এলাকার চন্দ্র বাড়িতে ভিড় জমাতে পারেন। ১৮৪০ সালে শুরু হওয়া এই পুজো বয়সের ভার যথেষ্ট। তা সত্ত্বেও কমেনি পুজোর জাঁকজমক।
রানি রাসমণির বাড়ির পুজো: মধ্য কলকাতায় অন্যতম আকর্ষণ রানি রাসমণির বাড়ির পুজো। উনিশ শতকের এই বাড়িতে আজও নিষ্ঠাভরে পুজার্চনা হয়। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতার জানবাজারের বাড়ির পুজোতে শামিল হতে পারেন আপনিও।
রাধাগোবিন্দ মল্লিক বাড়ি: ভবানীপুরের রাধাগোবিন্দ মল্লিক বাড়ির পুজো বিখ্যাত সেলেব বাড়ির পুজো হিসাবে। রঞ্জিত এবং কোয়েল মল্লিকের জন্য এই পুজো মূলত বিখ্যাত। তাই একদিকে যেমন বনেদিয়ানার টান আবার অন্যদিকে সেলেবদের চমকে ঠাসা এই বাড়ি আপনার নজর কাড়বেই। তাই অনায়াসে ভিড় জমাতে পারেন মল্লিক বাড়িতে।
ভূকৈলাস রাজবাড়ি: খিদিরপুরের প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো ভূকৈলাস রাজবাড়ির পুজো। ১৫ ফুট লম্বা শিবমূর্তিও রয়েছে এই বাড়িতে। তাই বাবুবাজারের এই পুজোয় আপনি ভিড় জমাতেই পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.