Advertisement
Advertisement

Breaking News

পাত্রী

‘চুয়াত্তরের যুবকের’ বউ চাই, বিজ্ঞাপনের সাড়ায় অবাক পাত্র

সাত দিনে এসেছে ৫০ পাত্রীর ফোন।

A 74 years old man give a matrimonial ad of himself

ছবি: প্রতীকী

Published by: Bishakha Pal
  • Posted:April 16, 2019 12:33 pm
  • Updated:April 16, 2019 12:33 pm

নব্যেন্দু হাজরা: সাত দিনে প্রায় পঞ্চাশ ফোন! চুয়াত্তর বছরের বৃদ্ধের বিবাহ আহ্বানে সাড়ার বহর দেখে স্বয়ং পাত্রই অবাক। গত রবিবার সাত এপ্রিল একটি বাংলা দৈনিকে পাত্রী চাই কলামে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, পাত্র বিপত্নীক, ৭৪ বছর বয়স্ক, ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা। রিজার্ভ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত পদস্থ অফিসার। ৫০ বছরের কমবয়সি পাত্রী কাম্য। দুটি ফোন নম্বরও দিয়েছেন। সেই শুরু। বিজ্ঞাপন বের হওয়ার দিন সকাল থেকে সে দু’টি নিরন্তর বেজেই চলেছে। ওপারে কখনও পাত্রী স্বয়ং। কখনও আত্মীয়। মাঝে দিন সাতেকর মধ্যে ইচ্ছুক পাঁচ পাত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি বসে কথাও বলেছেন তিনি। যদিও কাউকে পছন্দ হয়নি। “তাড়াহুড়ো তো নেই। কিছুদিন না হয় অপেক্ষা করি। যাচাই করে নিতে হবে তো!”-বলছেন পাণিপ্রার্থী।

বৃদ্ধের বাড়ি বাগুইআটির কাছে। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্ত্রী মারা গিয়েছেন বছর তিনেক আগে। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একাকীত্ব কাটাতে নতুন জীবনসঙ্গিনী খুঁজছেন। কিন্তু এজন্য এই বয়সে বিয়ে? বৃদ্ধাশ্রমে যেতে পারতেন। বাড়িতে বিশ্বস্ত কাজের লোকও আনতে পারতেন। তাহলে তো একা থাকতে হত না! প্রশ্ন শুনে বৃদ্ধের সাফ জবাব, চিরকাল নিজের মতো বেঁচেছি। বৃদ্ধাশ্রমে অনেক নিয়ম কানুন। সেসব পোষাবে না। আর কাজের লোক আনার থেকে বিয়ে করে নেওয়াটাই ভাল নয় কি! কোনও কথা ওঠার সুযোগ থাকবে না।” মেয়ে কি রাজি?

Advertisement

[ আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে আক্রান্ত কংগ্রেস নেতা, প্রতিবাদে রাতভর ধরনায় অধীর চৌধুরি ]

Advertisement

বৃদ্ধের দাবি, মেয়ে নিজের সংসারে নিজের মতো রয়েছেন। তাঁকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেননি। এ ব্যাপারে মেয়ের কিছু বলার থাকতে পারে না বলেই উনি মনে করছেন। কিন্তু বয়সে পঁচিশ বছরের ছোট যে সব মহিলা আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তাঁদের কারও চোখ যে আসলে তাঁর সম্পত্তির উপর নয়, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হচ্ছেন কী করে?

বৃদ্ধের প্রত্যয়ী জবাব, “সে সব তো আমি যাচাই করে নেব। অনেক বড় দায়িত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছি। আমাকে ধোঁকা দেওয়া অত সহজ হবে না।” চুয়াত্তর বছর বয়সি স্বামীর সঙ্গে অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ মহিলার স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন সম্ভব কিনা, সে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে বৃদ্ধ বলেন, “বিয়ে মানে শুধু শরীরের মিলন নয়। মনটাই আসল। ভাল মেয়ে হলে বয়সটা কোনও বাধা নয়। বোঝাপড়া ঠিক গড়ে উঠবে।” তবে শেষ বয়সে তাঁকে পরিচর্যা করতে গেলে যে বেশ শক্তসমর্থ মহিলা দরকার, তার উপরও তিনি বিলক্ষণ জোর দিচ্ছেন। এতদিন পরে কেন বিয়ের কথা ভাবলেন? ওই বৃদ্ধের জবাব, স্ত্রী মারা গিয়েছেন তিন বছর আগে। একটু তো সময় লাগবে সিদ্ধান্ত নিতে। সেটাই নিয়েছি। শেষ বয়সে একজন সঙ্গিনীর বড় দরকার।

এদিকে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপনের বহর দেখেই বিষম খেয়েছেন রক্ষণশীলরা। তবে এ কথাও মেনে নিয়েছেন যে, ক্রমশ সাহসী হচ্ছে সমাজ। মনের মধ্যে চার দেওয়ালে চেপে রাখা কথাও ফলাও করে বিজ্ঞাপনে দিতে পিছপা হচ্ছে না মধ্যবিত্ত গেরস্থ। বিশিষ্ট বয়স্ক রোগবিশেষজ্ঞ কৌশিক মজুমদার বলেন, “ওই ব্যক্তির সৎ সাহস আছে। তাই বিজ্ঞাপন দিয়ে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন। অনেকেই শেষ বয়সে এসে একজন অবলম্বন চান। তিনিও হয়তো চেয়েছেন। লন্ডনে তো অনেকেই করেন। আমারও কর্মসূত্রে বেশ কিছু বেশি বয়সে বিয়ে দেখার অভিজ্ঞতা আছে। তবে কেউ কেউ পারভারসন থেকেও বেশি বয়সে বিয়ে করতে চান। কিন্তু বিজ্ঞাপনের ধরন শুনে মনে হচ্ছে, উনি সত্যিই একজন সঙ্গিনী খুঁজছেন।” শহরের বিশিষ্ট এক মনোবিদেরও বক্তব্য, এই ধরনের কথা প্রকাশ্যে বলতে আগে অনেকেই ভয় পেতেন। কিন্তু এখন আর তা পান না। উনি লুকিয়ে কিছু করতে চাননি। সমাজের সমালোচনাকেও ভয় পাননি। ভাল থাকার অধিকার সকলের আছে। সমাজ যে বদলাচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছে।

[ আরও পড়ুন: ৫০ ফুট উঁচু থেকে সোজা মাটিতে, চড়কে শূন্যে ঘুরতে গিয়ে মৃত্যু যুবকের ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ