সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাগল করে দেয় মধু! পাগল হতে চায় যাঁরা, তাঁরা এই মধু পান করেন। বাজারে যে মধু মেলে, তার স্বাদ, হাজারও ঔষধী গুণের কথা সকলের জানা। নেপালের ‘ম্যাড হানি’রও (Mad Honey) তেমন গুণ রয়েছে, তবে কেবল তার জন্যই এজিনিস খোঁজে না মানুষ। মূলত নেশার দ্রব্য হিসেবে জনপ্রিয় ম্যাড হানি হাজার বছর ধরে। এমনকী যা প্রাণঘাতীও হতে পারে।
ম্যাড হানির রাসায়নিক নাম গ্রায়ানোটক্সিন। নাম থেকেই আন্দাজ করা যায় এর মধ্যে বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে। প্রধানত রডোডেনড্রন ফুলের মধুতে থাকে এই গ্রায়ানোটক্সিন। আরও বেশ কিছু পাহাড়ি ফুলে থাকে এই বিষাক্ত উপাদান। যাকে বলে গ্রায়ানোটক্সিন পয়জনিং বা রডোডেনড্রন পয়জনিং। জেনে শুনে এই বিষই পান করেন রসিক। যার পর স্বাভাবিক মানসিক পরিস্থিতি হারায়। দুনিয়াদারি ভুলে যায় মানুষের মস্তিষ্ক। আর ঠিক এই কারণেই অন্য শক্তিশালী মাদকের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ ম্যাড হানি অতিরিক্ত পান করা।
পাগল করা এই মধু অতিরিক্তি খেলে মারাত্মক ঝিম ধরা ভাব হতে পারে। এছাড়াও বমি, মাথা ধরা, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক হারে রক্তচাপ কমে যাওয়া, পেশীর দৌর্বল্য, ঝাপসা দৃষ্টি, পারকিনসন-হোয়াইট-সিনড্রোম পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। এমনকী পক্ষাঘাত পর্যন্ত হতে পারে। একদল বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ম্যাড হানির অতিরিক্ত সেবন মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে, আরেক দলের বক্তব্য, ততটাও মারাত্মক নয়। আসল কথা এত ভয়, দুশ্চিন্তার পরেও ম্যাড হানি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মধুগুলির একটি। স্থানীয়রা যা গ্রহণ করে আসছেন গত এক হাজার বছর ধরে।
নেপালের (Nepal) গুরুঙ্গ উপজাতির অন্যতম পেশা হল পাহাড়ের খাঁজ থেকে ম্যাড হানি সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা যে মধুকে চিকিৎসার কাজে লাগায়। আলসার-সহ বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা, হাইপার টেনসন ও যৌন রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগে ‘বিষাক্ত’ মধু। জানা যায়, একটা সময় শত্রু বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়রা ব্যবহার করতেন এই মধু। একবার শত্রুপক্ষকে খাইয়ে দিতে পারলেই নেশার ঘোরে নাস্তানাবুদ হত তারা!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.