বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শাহর বাংলা সফর শাসকদলের উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টিরই স্ট্র্যাটেজি বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তৃণমূলের গড় মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বিজেপি সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড় নিঃসন্দেহে একুশের নির্বাচনের আগে বাড়তি অক্সিজেন দিল।
একুশের আগে লাগাতার দলবদলে জেরবার শাসকদল। দলের অন্যতম শক্তিশালী স্তম্ভ শুভেন্দু অধিকারী জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন। তিনি ছাড়াও আরও কয়েকজন নেতা নাম লেখান পদ্মশিবিরে। ফলে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেই নতুন করে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করলেন 'চাণক্য'।
রাজ্যের বিরোধীপক্ষের অনেকের সঙ্গে 'বহিরাগত' তকমা জুড়ে বারবার আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাও পালটা দিতে ছাড়েননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলার ভূমিপুত্রই বিজেপির হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে লড়বেন এবং মুখ্যমন্ত্রী হবেন।
বোলপুরে যখন ক্যামেরার সামনে অমিত শাহ, তখন কার্যত নিঃশব্দেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা চষে বেড়াচ্ছেন ভিনরাজ্য থেকে আসা তাঁর সপ্তরথী। যেমন হুগলিতে জনসংযোগ করেন কেশবপ্রসাদ মৌর্য। এঁদের সকলেই বিজেপির কেন্দ্রীয় বা রাজ্য স্তরের রাজনীতিতে সামনের সারিতে থাকেন। এঁদের উপরই বাংলার ভোটের আগে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর মধ্যে দিয়েই প্রতিটি এলাকার জল মাপবে গেরুয়া শিবির।
'অনেক রোড শো দেখেছি, আয়োজনও করেছি। কিন্তু এমনটা দেখেনি।' বোলপুরে জনতার ঢল দেখে একথাই বেরিয়ে আসে অমিত শাহর মুখ থেকে। একদিকে যেখানে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের মিছিলে ভিড় অনেকটাই কম, সেখানে তাঁরই গড়ে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি তুলে অমিত শাহকে সমর্থন জানালেন হাজারো মানুষ। ৯০০ মিটার রাস্তা যেতে সময় লাগল ১ ঘণ্টারও বেশি। বীরভূম জেলায় বিজেপির রোড শোয়ে এমন ভিড় বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বইকী।
বাংলা ছাড়ার আগে বাংলায় শাসকদলের 'কাজে'র পরিসংখ্যান তুলে ধরেন শাহ। তাঁর পেশ করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অর্থনীতি থেকে শিক্ষা- সবদিকেই অবনতি ঘটেছে বাংলার। আর সেই সঙ্গে সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একবার বিজেপিকে সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানান। জল্পনা জিইয়ে রাখেন মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়েও। ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ করতে শাহর এই স্ট্র্যাটেজি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.