ফাইল ছবি।
স্টাফ রিপোর্টার: এক শহরের তিন-তিনটে শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব। এখনও দেশের ক্রীড়া মহলে, বিশেষত ফুটবলে, সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। দু’টো ক্লাব রয়েছে জাতীয় ফুটবলের প্রথম সারির লিগে, আর একটি উঠে আসার মুখে। ভারতে অন্যত্র এমন নিদর্শন নেই। এমনকী আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিষয়টি বিরল। এবার কলকাতার সেই তিন প্রধান– ইস্টবেঙ্গল (East Bengal), মোহনবাগান (Mohun Bagan) এবং মহামেডান স্পোর্টিং যুক্ত হচ্ছে বাংলার পাঠক্রমেও। একাদশ শ্রেণির ‘স্বাস্থ্য ও শরীর শিক্ষা’ বিষয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই তিন ক্লাবকে।
সেখানে তিন প্রধানের সোনালি ইতিহাসের কথা পড়ানো হবে রাজ্যের কিশোর-কিশোরীদের। অবশ্য শুধু যে ক্লাস ঘরে বইয়ের পাতায় এই শিক্ষা সীমাবদ্ধ থাকবে, এমন নয়। পাশাপাশি একাদশ ও দ্বাদশের পড়ুয়ারা এই বিষয়ে প্রকল্প তৈরির জন্যও বেছে নিতে পারবে এই তিন ক্লাবকে। অর্থাৎ ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান বা মহামেডানের উত্থানের ইতিহাস নিয়ে হাতে-কলমে কাজ করার সুযোগও থাকছে পড়ুয়াদের কাছে।
সম্প্রতি সংসদ প্রকাশিত পাঠক্রমে ক্লাবদের নাম দেখে খুশি তিন প্রধানের কর্তারাই। লাল-হলুদের কর্তা দেবব্রত সরকারের বক্তব্য, “খুবই ভালো উদ্যোগ। ভারতীয় খেলাধুলোয় এই তিন ক্লাবের কী অবদান আছে, সেটা বাংলার পাশাপাশি সারা দেশের মানুষের জানা প্রয়োজন।” একই সুরে সবুজ-মেরুন সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, “এমন উদ্যোগের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে ধন্যবাদ। এর ফলে অনেক বেশি মানুষ এই তিন ক্লাবের ঐতিহ্য ও আবেগের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। এই সিদ্ধান্তে আমরা খুবই খুশি।” বিষয়টি নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি লেখার কথাও জানিয়েছেন তিনি। মহামেডান সচিব ইস্তিয়াক আহমেদের কথায়, “তিনটে ক্লাবই একশো বছরের বেশি সময় ধরে বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পড়ুয়ারা এবার আরও ভালোভাবে ক্লাবগুলি সম্পর্কে জানতে পারবে।”
একাদশ শ্রেণির প্রথম সেমেস্টারের এই অংশে অবশ্য শুধু যে তিন প্রধানের নাম যুক্ত করা হয়েছে, এমন নয়। ‘স্বাস্থ্য ও শরীর শিক্ষা’ বিষয়ের প্রথম সেমেস্টারের পঞ্চম ইউনিটে রয়েছে এরাজ্যের বিভিন্ন ক্রীড়া নিয়ামক সংস্থাও। ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল, বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের পাশাপাশি রাজ্য ক্রীড়া সংসদ ও স্কুল গেমস নিয়েও পড়ানো হবে ছাত্রছাত্রীদের। সবমিলিয়ে মোট ৩৫ নম্বরের মধ্যে ৭ নম্বর বরাদ্দ থাকছে এই ইউনিটে। তবে প্রকল্প বা কর্মশালার টপিকের তালিকায় অবশ্য কোনও ক্রীড়া সংস্থার নাম নেই। ১০ নম্বরের এই বিভাগে ২২টি বিকল্পের মধ্যে ময়দান থেকে সরাসরি আছে শুধু তিন প্রধান। এপ্রসঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব প্রিয়দর্শিনী মল্লিক বলেন, “শরীরচর্চার ঐতিহাসিক পরিকাঠামোর মধ্যে তিন প্রধানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগে এভাবে নাম উল্লেখ করা ছিল না। এই ক্লাবগুলো পশ্চিমবঙ্গের উজ্জ্বল ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ইতিহাসের অংশ। আমরা চাই, ছাত্রছাত্রীরা এই ক্লাবগুলি সম্পর্কে জানুক। এবং সেই তথ্য পড়ুয়াদের মনে পৌঁছে যাক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.