সৌরভ মাঝি, বর্ধমান: রাজনীতিতে কিছু ‘ট্রেড মার্ক’ হয়ে রয়েছে। বামপন্থীদের নামের আগে কমরেড বা সংক্ষেপে কম: লেখা, স্লোগানে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ বলা। যা দক্ষিণপন্থী দলগুলির সঙ্গে একেবারেই মানানসই নয়৷ তাঁদের স্লোগান সাধারণত ‘বন্দে মাতরম’৷
[আরও পড়ুন: ‘উন্নয়ন হয়নি’, ভোটপ্রচারে রাজ্যের শাসকদলকে খোঁচা ভারতী ঘোষের]
কিন্তু কোনও দক্ষিণপন্থী নেতার নামের আগে ‘কমরেড’ লেখা থাকলে ধাঁধায় পড়তে হয়৷ তেমনই ধাঁধায় পড়ছেন বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের মানুষজন৷ এই লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা৷ সম্প্রতি তাঁর একটি দেওয়াল লিখন বেশ ভাইরাল হয়েছে৷ সেই দেওয়ালে লেখা হয়েছে, ‘আগামী ১২ মে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী কম: শ্যামল সাঁতরা এই চিহ্নে ভোট দিন।’ পাশে আঁকা তৃণমূলের প্রতীক ঘাসফুল। তৃণমূল প্রার্থীর নামের আগে কমরেড লেখা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ট্রোল শুরু হয়ে গিয়েছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে এই ছবি৷ সিপিএম ও বিজেপির সমর্থকদের ফেসবুক পেজগুলিতে। সঙ্গে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যও করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ লিখেছেন, ‘তৃণমূলী কমরেড’। কেউ লিখেছেন ‘কিষেনজির মতো’। আবার কারও মন্তব্য, নকল করতে করতে খেয়ালই নেই কী লিখছে। কেউ কেউ আবার ‘দক্ষিণপন্থী কমরেড’ বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে দ্বিতীয় দফার প্রার্থীতালিকা প্রকাশ কংগ্রেসের, দুই আসনে বামেদের সমর্থন]
তৃণমূল সমর্থকরাও পাল্টা দিচ্ছেন। কেউ মন্তব্য করছেন ওটা কী ওদের রেজিস্টার্ড ট্রেড মার্ক না কি! তবে কান পাতলে এখন গ্রাম গঞ্জে এই নিয়ে অন্য কথাও শোনা যাচ্ছে। বাম তথা সিপিএমের ঘর ভেঙেই মানুষ ভিড়েছে তৃণমূলে। সিপিএম থেকে আগত সেই সব মানুষজন এখন তৃণমূলের হয়ে দেওয়াল লিখন করছেন। কিন্তু দল ছাড়লেও পুরনো কমরেড লেখার অভ্যাস ছাড়তে পারেননি।এমনকী কেউ কেউ আবার তৃণমূলের মিছিলে গিয়ে ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানও দিয়ে ফেলেন পুরনো অভ্যাসবশত। আর নির্বাচনী মরশুমে এমন ‘ভুল’ হয়ে থাকলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল অবশ্যম্ভাবী৷ তবে, এবার যেন একটু বেশিই ভুলভ্রান্তি হচ্ছে তৃণমূলের৷ কোথাও প্রার্থীর নামের আগে ‘জনবিরোধী’ সরকার গড়ার ডাক, কোথাও আবার প্রার্থীর পরিচয় ‘কমরেড’ লেখা৷ অবাক হচ্ছেন দলের কর্মী, সমর্থকরাই৷ এমনটা হচ্ছে কীভাবে? অতি তৎপররা আবার বলছেন, উত্তর পরে জানলেও হবে, আগে তো ভুল সংশোধন হোক৷