সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে বালোচিস্তান (Balochistan)। বালোচ স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে লাগাতার চলছে পাকিস্তানি সেনার লড়াই। বিদ্রোহ দমনে নির্বিচারে গুমখুন চালাচ্ছে পাক ফৌজ। এহেন পরিস্থিতিতে আবারও রক্তাক্ত হল পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ। ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে সাতজন। নিহতদের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তাও রয়েছেন বলে খবর।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, সোমবার রাতে বালোচিস্তান প্রদেশের পাঞ্জগুর এলাকায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই প্রবল ছিল যে নিশানায় থাকা গাড়িটি শূন্যে উঠে যায়। এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে বালগাতার এলাকার ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ইস্তিয়াক ইয়াকুব-সহ সাতজনের। পাঞ্জগুরের ডেপুটি কমিশনার আমজাদ সোমরো বলেন, “চেয়ারম্যান ইস্তিয়াক ইয়াকুবকেই নিশানা করা হয়েছে। তাঁর গাড়িকে লক্ষ্য করেই একটি ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখা হয়েছিল। নিহতরা একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন।”
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বালোচ বিদ্রোহী সংগঠন ‘বালোচ লিবারেশন ফ্রন্ট’। উল্লেখ্য, পাকিস্তানি শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছে বালোচরা। পালটা গুমখুন, হত্যা ও ধর্ষণের মতো অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে বিদ্রোহের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। বিশেষ করে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি হওয়ার পর থেকেই আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে বালোচিস্তান। অভিযোগ, খনিজ সমৃদ্ধ প্রদেশটিকে কার্যত লুট করছে পাক প্রশাসন। প্রতিদানে বালোচ জনতা পেয়েছে শুধু নির্যাতন ও দারিদ্র।
প্রসঙ্গত, ২০১৫-তে স্বাক্ষর হওয়া মউয়ের ভিত্তিতে চিন-পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর বা সিপিইসি নির্মাণকার্য শুরু হয়েছে৷ চিনের প্রস্তাবিত ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ নীতির উপর ভিত্তি করে, তাদের অর্থ সাহায্যেই এই করিডর তৈরি হচ্ছে৷ পাকিস্তানের গদর পোর্ট থেকে চিনের শিনজিং প্রদেশ পর্যন্ত মোট ২,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথটি তৈরি করা হয়েছে৷ এই করিডর নিয়ে প্রথম থেকেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন বালোচিস্তান-সহ গিলগিট-বালতিস্তান ও পিওকে-র নাগরিকরা৷ অভিযোগ, পেশিশক্তির জোরে তাঁদের বাসভূমি কেড়ে নিয়ে এই করিডর তৈরি করেছে পাকিস্তান৷ যাতে পূর্ণ মদত দিয়েছে চিন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.