সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় আড়াই মাসের কঠিন যুদ্ধ। অবশেষে জয়ের মুখ দেখল চিনের ইউহান। ভয়ংকর করোনা ভাইরাসকে পরাজিত করতে পেরেছে তাঁরা। গত পাঁচদিনের মধ্যে একজন ছাড়া হুবেই প্রদেশের রাজধানী ইউহানে আর কোনও করোনায় আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ৮ এপ্রিল তুলে নেওয়া হচ্ছে লকডাউন। এমন খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ইউহানবাসী। যদিও ওই একজন আক্রান্তকে ঘিরে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত বছরের শেষের দিকে চিনের ইউহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে ইউহানে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় ইউহানকে। অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি হয় লকডাউন। গোটা চিনে এতদিনে প্রায় ৩ হাজার ২৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ইউহানের। কিন্তু বর্তমানে প্রায় বিপদমুক্ত ইউহান। ইউহানের স্বাস্থ্য কমিশনের রিপোর্ট বলছে, হুবেই প্রদেশে যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৭ হাজারেরও বেশি, গত পাঁচদিনের একজন ছাড়া আর কেউ আক্রান্ত হয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাই ৮ এপ্রিল থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে লকডাউন। এমনকী হুবেই প্রদেশেও যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয় বুধবার থেকে।
[ আরও পড়ুন: পোশাকের সঙ্গে মাস্কের রংমিলান্তি, নেটদুনিয়ায় নজর কাড়লেন স্লোভাকিয়ার প্রেসিডেন্ট ]
জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় চিনে মোট ৮০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। তার মধ্যে ৭৬ জনই বিদেশফেরত। গত আড়াই মাসের বিচারে এই সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। ফলে এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে চিন নিজেকে ‘মুক্ত’ বলে বিবেচনা করছে বলে খবর। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ এখনই চিনকে ক্লিনচিট দিতে রাজি নয়। চিন এখনও বিপদ মুক্ত নয় বলে দাবি করছেন তাঁরা। নতুন করে আক্রান্তদের নিয়ে চিনে আবার পুরনো পরিস্থিতি ফিরে আসতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। যদিও চিন এই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে করোনা ভাইরাস নিয়ে কূটনৈতিক মহলের কাদা ছোঁড়ছুঁড়ি খেলা এখনও অব্যাহত। বিজ্ঞানীদের একটা অংশ দাবি করেন, এটি কোনও প্রাকৃতিক সংক্রমণ নয়, বরং মনুষ্য সৃষ্ট। জৈবিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য চিনই ভাইরাসটি তৈরি করেছে। এই অভিযোগে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পেম্পেও করোনাভাইরাসকে ‘চিনা ভাইরাস’ বলে কটাক্ষ করেছেন। বুধবার এরই প্রতিবাদ করেন ভারতে অবস্থিত চিনের দুতাবাসের মুখপাত্র জি রং। তাঁর সাফ কথা, চিন এই ভাইরাস তৈরি করেনি বা ছড়ায়নি। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি থেকেই ভাইরাসটি বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ শুরু করে। চিন সরকার একেবারে গোড়ার দিক থেকেই এটা নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী এবং উপযোগী পদক্ষেপ করার চেষ্টা করে চলেছে। তাছাড়া কোনও একটি ভাইরাসকে নির্দিষ্ট একটি দেশের তৈরি বলে এভাবে দেগে দেওয়া যায় না।