সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জিনপিং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে কঠোর সমালোচনার শাস্তি। চিনের জনপ্রিয় সমাজকর্মী জু ঝিয়ংকে গ্রেপ্তার করল লাল ফৌজ। আন্তর্জাতিক মহলে যা নিয়ে ফের তীব্রভাবে সমালোচিত চিনা প্রশাসন। গুয়াংঝৌ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও এ বিষয়ে গুয়াংঝো পুলিশের মুখে কুলুপ। জু’কে নিয়ে চিন্তিত চিনে কর্মরত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সদস্যরা।
কট্টর কমিউনিস্টপন্থী চিনে যেটুকু উদারতা ছিল, শি জিনপিং ক্ষমতায় আসার পর তা খর্ব হয়ে গিয়েছে। বেড়েছে ক্ষমতার আধিপত্য। জিনপিংয়ের চিন সম্পর্কে এমনটাই শোনা যায়। তা যে বিশেষ ভুল কিছু নয়, দুর্নীতিবিরোধী সমাজকর্মী জু ঝিয়ংয়ের গ্রেপ্তারিই তার প্রমাণ। চিনে নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ চিন্তার কারণ হয়ে ওঠার পর গত ডিসেম্বর থেকে জিনপিং প্রশাসনের সমালোচনা শুরু করেছিলেন জু। রোগ নিয়ে প্রকৃত তথ্য গোপন করছেন জিনপিং, জিয়ামেনের প্রকাশ্য সমাবেশে সেকথা সোচ্চারে বলতেও দ্বিধাবোধ করেননি। সেদিনের সমাবেশে জু’এর সঙ্গে সমস্বরে কথা বলায় আটক হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন আইনজীবীও।
[আরও পড়ুন: অন্যদের বাঁচিয়ে নিজে খেলেন করোনার ছোবল, মৃত্যু ইউয়ান হাসপাতালের ডিরেক্টরের]
প্রতিবাদ শুধু মৌখিক স্তরেই আটকে রাখেননি জু। নতুন বছরে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছিলেন তিনি, যার মূল বিষয়বস্তু ছিল, জিনপিংয়ের পদত্যাগের দাবি। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, “ডাক্তারির সরঞ্জাম ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালগুলোয় উপচে পড়ছে রোগীর সংখ্যা, আক্রান্তদের শারীরিক পরীক্ষাও ঠিকমতো হচ্ছে না। সবমিলিয়ে বড়সড় গন্ডগোল বেঁধেছে।” বলেছিলেন, সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করে দেওয়ার মতো প্রাচীন পথেই চলছে চিন।
এরপরই সরকারের রোষ আছড়ে পড়ে জু-এর উপর। বিপদ বুঝে তিনি গা ঢাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। চিনা লাল ফৌজের হাতে গ্রেপ্তার হতেই হল। এ নিয়ে মানবাধিকার সংগঠন নিয়ে গবেষণারত চিনা নাগরিক ইয়াকিউ ওয়াং বলছেন, “করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ তো বাক স্বাধীনতার মতো বেশ কিছু সামাজিক অধিকারও কেড়ে নিয়েছে।” জু’কে কারামুক্ত করতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি তৎপর হয়েছে।