Advertisement
Advertisement

নেতাজির কথা মনে করিয়ে জার্মানদের বাংলায় বিনিয়োগে আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

‘রক্তের সম্পর্কে’ লগ্নির ডাক মুখ্যমন্ত্রীর

Mamata Banerjee banks on Netaji, seeks investment from Germany
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:September 19, 2018 10:26 am
  • Updated:September 19, 2018 10:26 am

কিংশুক প্রামাণিক, ফ্রাঙ্কফুর্ট: সামনে রাখলেন নেতাজিকেই। হাতিয়ার করলেন আন্তরিকতাকে। যুক্তি দিয়ে বললেন, বাংলার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্ক বহু পুরনো। বাংলার বীর সন্তান সুভাষচন্দ্র বসু বিয়ে করেছিলেন জার্মান-কন্যা এমিলি শেঙ্কলকে। ফলে বাঙালি আর জার্মানদের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক হয়েই আছে। সবাই এক পরিবার। বাংলা জার্মানদের ঘর।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে অবাক জার্মান শিল্পোদ্যোগীরা। আর এখানেই বোধহয় বাণিজ্য শহর ফ্রাঙ্কফুর্টে জার্মান উদ্যোগপতিদের নিয়ে রাজ্যের শিল্প সভার সার্থকতা। এই গ্লোবাল দুনিয়ায় কোনও কিছুই দূর নয়। জার্মানির শিল্প বাংলার হেঁশেলে ইতিমধ্যে ঢুকেই আছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই জানাচ্ছেন ইতিমধ্যে দুশো জার্মান সংস্থা কোনও না কোনওভাবে রাজ্যে কাজ করছে। আসলে এই সভার উদ্দেশ্য ছিল আরও আরও অংশগ্রহণ। আরও লগ্নি। মমতার নজর জার্মান ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিগুলির দিকে। যে শিল্পের ঐতিহ্য জার্মানিকে শিখরে বসিয়েছে। মঙ্গলবার এই বাণিজ্যনগরীর সম্মেলনে যে সাড়া দেখা গেল তাতে আশাবাদী হতেই পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আহ্বান সভায় যোগ দেওয়া তিনটি নামী জার্মান চেম্বার খুব গুরুত্ব দিয়েছে সম্মেলনকে। গ্রহণ করল কলকাতায় আগামী ৭-৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য সম্মেলনে আসার আমন্ত্রণও। বলা যেতে পারে সেই সময় জানা যাবে এই সম্মেলনের আসল সার্থকতা।

[বাগরিতে অগ্নিকাণ্ড কি পরিকল্পিত নাশকতা? সিসিটিভি ফুটেজ ঘিরে রহস্য]

এদিন হোটেল জুমেরার ব্যাঙ্কোয়েট হলে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। জার্মান সাইডে উল্লেখ্য উপস্থিতি শিল্প সংস্থা আইএইচকে-র আন্তর্জাতিক শাখার এমডি জুর্গেন রাটসিনযার, ডুসেলডর্ফের আইজিসিসির ডিরেক্টর ডিরক মাটার ও ইন্দো-জার্মান বণিকসভার অনেকেই হাজির ছিলেন। বাংলা সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতা যে অনেক, তা তুলে ধরেন বক্তারা। সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত মুক্তা দত্ত তোমর। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। সঞ্চালক শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। রাজ্যের শিল্পমহলের প্রতিনিধি দলের পক্ষে বক্তব্য রাখেন হর্ষ নেওটিয়া, পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা, সঞ্জীব পুরী প্রমুখ। তাঁদের বক্তব্যের মূল সুর ছিল, বদলে যাওয়া বাংলায় শান্তিতে মুখ্যমন্ত্রীর লিডারশিপে কাজ করছেন। বাংলা বিনিয়োগের সঠিক গন্তব্য। মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছে তরুণ উদ্যোগপতিদের একটি দল। রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, সৌমিক বোস, মায়াঙ্ক জালান প্রমুখ ছিলেন সভায়। ছিলেন মুখ্যসচিব মলয়কুমার দে, বিশেষ সচিব গৌতম সান্যাল প্রমুখ।

Advertisement

[‘পা ভেঙে হাতে ক্র্যাচ ধরিয়ে দেব’, প্রতিবন্ধীদের অনুষ্ঠানে মেজাজ হারালেন বাবুল]

মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘ ভাষণ দেননি। যেটুকু বললেন সবটাই আন্তরিকতার সঙ্গে। প্রাথমিক ব্যাখ্যা, কেন বাংলা গন্তব্য। মমতার কথায়, “এমন একটি রাজ্য যার জমি নীতি আছে, ল্যান্ড ব্যাঙ্ক আছে, পোর্ট আছে, রাজনৈতিক স্থায়িত্ব রয়েছে, শ্রমদিবস নষ্ট হয় না। একই সঙ্গে নেপাল-ভুটান-বাংলাদেশ শুধু নয়, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া-সহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির গেটওয়ে। উত্তর পূর্ব ভারতে যে বিশাল বাজার রয়েছে তার গেটওয়ে বাংলা। অতএব এই রাজ্যই হল বাণিজের আসল জায়গা।”এর আগে মিউনিখ শিল্পসভার উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর এই সফর। উদ্দেশ্য একটাই, লগ্নি। তার জন্য জার্মানিকে কাছে টানা। তিনি বোঝান, “শুধু শিল্প নয়, মেলবন্ধনের মাধ্যম হতে পারে ফুটবল।” জার্মান ফুটবল টিমের প্রতি বাংলার মানুষের আবেগের কথা তুলে ধরেন মমতা। বক্তৃতার শেষ পর্বে বলেন, “আমি সুবক্তা নই। কিন্তু কথা কম বলি, কাজ বেশি করি। নিশ্চিন্তে আসুন, নিজের ঘর মনে করে লগ্নি করুন। আমি আছি আপনাদের পাশে।”

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ