সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইস্টার ডে বিস্ফোরণের জের। পদ খোয়ালেন শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধান। বুধবার, নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগে দুই আধিকারিককেই পদ ছাড়ার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা। আগাম সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও কেন এহেন ঘটনা ঘটল, প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিরিসেনা। এদিকে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫৯।
[ক্রাইস্টচার্চের বদলা! শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণের দায় স্বীকার আইএসের]
গত রবিবার প্রায় এক দশক বাদে ফের সন্ত্রাসবাদী হামলায় কেঁপে উঠে শ্রীলঙ্কা। বেশ কিছুদিন ধরে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল। এখনও দেশের প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংঘের মধ্যে সম্পর্ক ‘মধুর’ নয়। যে কোনও সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র হতে পারে। এইরকম একটা পরিস্থিতিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ দ্বীপরাষ্ট্রটির মেরুদণ্ড কার্যত নড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই পরিস্থিতির ফায়দা তুলেছে জঙ্গিরা। শ্রীলঙ্কার পাবলিক এন্টারপ্রাইস মিনিস্টার লক্ষণ কিরিয়েল্লা বলেন, “গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ অধিকারীদের একাংশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আগাম সতর্কতার কথা গোপন করেছেন। জেনেবুঝেই হামলা ঠেকাতে তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করেননি।” যদিও সরাসরি কোনও গোয়েন্দা আধিকারিকের নাম প্রকাশ করেননি কিরিয়েল্লা। এদিকে, দ্বীপরাষ্ট্রের প্রাক্তন সেনাপ্রধান ও বর্তমান মন্ত্রী সারথ ফনসেকার দাবি, প্রায় ৭ থেকে ৮ বছর ধরে এই হামলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংঘে আগেই জানিয়েছিলেন, একাধিক আত্মঘাতী বোমারু এখনও ফেরার। ফের এহেন হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
শ্রীলঙ্কার হামলার ঘটনা দায় স্বীকার করেছে ‘আইএস’ জঙ্গিগোষ্ঠী। ঘটনা দেখেই প্রাথমিকভাবেই সবার সন্দেহ হয়েছিল যে এটা আইএস জঙ্গিদেরই কাজ। আইএস জঙ্গিরা যদি এভাবে শ্রীলঙ্কায় ঘাঁটি গাড়তে সক্ষম হয়, তাহলে সেটা ভারতের কাছে উদ্বেগের। শ্রীলঙ্কা দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সন্ত্রাসবাদ প্রত্যক্ষ করেছে। এলটিটিই জঙ্গিরা দিনের পর দিন বড় বড় সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়েছে কলম্বো-সহ দ্বীপরাষ্ট্রের অন্যান্য জায়গায়।
এলটিটিই-কে একসময় বলা হত উপমহাদেশের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর। কিন্তু, সাম্প্রতিক যে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ কলম্বোয় হল তার মতো বড় সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা এলটিটিই-ও করেনি। এ ব্যাপারে কোনও সংশয় নেই যে, এলটিটিই-র চেয়ে আইএস জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ও নৃশংসতা অনেক বেশি। তবে কী কারণে আইএস জঙ্গিরা শ্রীলঙ্কাকে তাদের এই ভয়াবহ হামলার জন্য নিশানা বানাল, তা বোঝা যাচ্ছে না। একটি উদ্দেশ্য নিঃসন্দেহে গোটা পৃথিবীর নজরকাড়া। শ্রীলঙ্কায় সব সময়ই গোটা পৃথিবীর পর্যটকরা হাজির থাকেন। ফলে শ্রীলঙ্কার পর্যটনকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে গোটা পৃথিবীর নজর কাড়া সম্ভব। পর্যটকদের সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের নিশানায় ছিল চার্চও। সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল খ্রিস্টানদের পবিত্র একটি দিনকেও।
[জাপানের প্রতিবেশী জার্মানি! ভূগোল গুলিয়ে হাসির খোরাক ইমরান খান]