সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর কতদিন? লকডাউনের খরা কাটিয়ে ফের কাজে ফিরতে হবে তো? করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে, মারণ জীবাণুর গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসার পর ধাপে ধাপে সেই স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, লকডাউন ধীরে ধীরে শিথিল করার তালিকায় সর্বাগ্রে নাম রয়েছে স্পেন, ইটালি, জার্মানির। যে সব দেশ এখনও করোনার থাবা থেকে মুক্ত হতে পারেনি। এক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই নামগুলিই উঠে এসেছে সকলের আগে। তালিকায় রয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক-সহ নরডিক দেশগুলো।
মেরেকেটে এই সপ্তাহটা। তারপরই জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করবে জার্মানির। চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে তাঁর দেশ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে প্রস্তুত। ইউরোপের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাকে তো দ্রুত সচল করে তুলতে হবেই। মর্কেল বলেছেন, “আমরা সাময়িক ফাঁড়া কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে প্রস্তুত। কোথাও কোথাও দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ ফেরানো হচ্ছে। সেসব জায়গায় লকডাউন শিথিল করা হবে, তবে তা একেবারে বিধি মেনে, সাবধানে।” অথচ জার্মানিতে এখনও করোনা ভাইরাস দাপট দেখাচ্ছে স্বমহিমায়।
[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে শামিল সুইডেনের রাজকন্যা, আক্রান্তদের সেবায় নিযুক্ত হলেন সোফিয়া]
একইভাবে ছন্দে ফিরবে চেক প্রজাতন্ত্রও। সেখানকার এক অ্যাথলেটের কথায়, “আবার কতদিন পর স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করতে যেতে পারব। ভাল লাগছে। তবে গত দু সপ্তাহ বাড়িতে থেকেও আমি অনেক কিছু শিখেছি। সবচেয়ে বড় কথা, লকডাউন কী এবং কেন, তা বেশ বুঝতে পেরেছি। এখন ১০০ শতাংশ নিরাপদ বোধ করছি।” এক চিকিৎসক বলছেন, “আমার মনে হয়, এই পদ্ধতিটা অনেকটা ভাল। আমরা নিজেদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পেরেছি। এবার থেকে সব ঠিকঠাক চলবে।” এই দেশে খুলে যাচ্ছে হার্ডওয়ারের দোকান। টেনিস এবং সাঁতারের ক্ষেত্রেও কোনও বাধা আর থাকছে না।
[আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে মৃত ২০ জন বাসচালক, অসুস্থ শতাধিক]
লকডাউন শিথিল হচ্ছে স্পেন, ইটালিতেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় অঞ্চলের প্রধান ড. হান্স ক্লুগ জানিয়েছেন, এই সপ্তাহে ইউরোপের করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছিল। কারণ, সময়টা বিপজ্জনক ছিল। এমনিতেই বিশ্বের যে ১০টি দেশে করোনার থাবা সর্বাধিক, তার মধ্যে রয়েছে ইউরোপেরই সাত দেশ। তবে এ সপ্তাহটা পেরনোর পর আর তত ঝুঁকি নেই বলে জানাচ্ছেন। তা সত্ত্বেও লকডাউন খুব ভেবেচিন্তে শিথিল করার পক্ষে তিনি। ইউরোপের দুই দেশ – বেলারুস, সুইডেন লকডাউনের পথেই হাঁটেনি। ফলে সেখানে জীবনযাত্রায় খুব হেরফের কিছু হয়ওনি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষা বলছে, পশ্চিমের দেশগুলো প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যা কিছুটা আশাদায়কও। ইউরোপে লকডাউন পরবর্তী সময় কেমন কাটে, সেদিকে নজর সকলের।