সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জোর ধাক্কা খেলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান। ইস্তানবুলের মেয়র পদের পুনর্নির্বাচনে সোমবার বিপুল ভোটে জিতেছেন বিরোধীরা। এমনকী, বেশ কয়েকটি প্রেসিডেন্টপন্থী সংবাদমাধ্যমও এই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের জয়’ বলে মন্তব্য করেছে।
[আরও পড়ুন: ‘টার্গেট মিস করিনি’, জোরাল দাবি বালাকোটে হামলাকারী বায়ুসেনার পাইলটের]
মার্চে প্রথম দফার নির্বাচনে মাত্র ১৩ হাজার ভোটে জিতেছিলেন এক্রেম ইমামগলু। যিনি নেহাতই স্বল্পপরিচিত। একটি ছোট্ট শহরের মেয়র ছিলেন। কিন্তু পুনর্নির্বাচনের ঝুঁকি নিয়ে নিজের বিপদ নিজেই বাড়িয়েছেন এরদোগান৷ এবার তাঁর প্রতিপক্ষ ইমামগলু তাঁকে হারিয়েছেন ৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ভোটে। জালিয়াতির বিতর্কিত অভিযোগে প্রথম দফার নির্বাচন বাতিল করে দেওয়া ইস্তানবুলের জনগণ যে ভালভাবে নেয়নি, ভোটের ফলেই তা প্রমাণিত হয়েছে। ইস্তানবুলের শাসনভার প্রায় ২৫ বছর ধরে রক্ষণশীল মুসলিম দলের হাতে। তাই বিরল সাফল্যের ইঙ্গিত মিলতেই উৎসবে মেতেছেন বিরোধীরা। বাম অধ্যুষিত প্রতিবেশী বেস্কিতাসে সারারাত বিয়ার ও জাতীয় পতাকা নিয়ে পার্টি করেছেন অগণিত মানুষ।
একইসঙ্গে বিরোধীদের জয় শাসক এরদোগানের কাছেও অশনি সংকেত বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ২০০৩ থেকে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে যেভাবে শাসকের চাপ বেড়েছে, তাতে ভোটের ফল নিয়েও খুব একটা হইচই নেই সংবাদমাধ্যমে। অত্যন্ত সাদামাটা হেডলাইন, দায়সারা রিপোর্টে দায় এড়িয়েছে। তার মধ্যেও সরকারপন্থী কয়েকটি কাগজ এই ফলকে ‘গণতন্ত্রের জয়’ বলে মন্তব্য করায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় মানুষের মত, পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত শাসক দলের কাছে বুমেরাং হয়েছে। কারণ, তুরস্কের মানুষ চিরকাল অত্যাচারিত, বঞ্চিতদের পাশে থাকে। প্রথম দফার ভোট বাতিল হওয়ায় ইমামগলুর নাম ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। তাঁকে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে বলেও মানুষ মনে করেছেন।
তুরস্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মার্ক পিয়েরিনি টুইট করে বলেছেন, ‘ইমামগলুর জয় গণতন্ত্রের জন্য শিক্ষা। মানুষ নিজের অধিকারের সম্মান রক্ষা করতে জানেন।’ শাসক দলের প্রার্থী ছিলেন তুরস্কের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম। তাঁর বিরুদ্ধে ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ইমামগলু। জয়ের পর যাঁর মন্তব্য, কোনও একটি দল বা ব্যক্তির জিত হয়নি। এই জয় গোটা ইস্তানবুল ও তুরস্কের। এবং তাৎপর্যপূর্ণ হল, টুইটে পরাজয় স্বীকার করে বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট এরদোগানও। জাতীয় স্তরে তাঁর দল এখনও এগিয়ে থাকলেও আর্থিক মন্দা ও মূল্যবৃদ্ধির জেরে এরদোগানের জনপ্রিয়তা পড়তির দিকে। গত মার্চে স্থানীয় নির্বাচনে রাজধানী আঙ্কারার নিয়ন্ত্রণও শাসক দলের হাতছাড়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে ফের যুদ্ধের মেঘ, ইরানের মিসাইল সিস্টেমে আঘাত হানল আমেরিকা]