সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের সমস্ত দাবি উড়িয়ে দিয়েছে আমেরিকা। সংঘাত আরও বাড়িয়ে মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও সোমবার সাফ জানান, দক্ষিণ চিন সাগরে নিজের কর্তৃত্ব কায়েম করতে গিয়ে চিন অন্য কয়েকটি দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করছে। বেজিং অবশ্য পালটা তোপ দেগে বলেছে , আমেরিকার বয়ান ‘একবরেই অযৌক্তিক’।
[আরও পড়ুন: কূটনৈতিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে ফের শুরু আমেরিকা ও চিনের সংঘাত]
হংকং নিয়ে চিনের সঙ্গে সংঘাতের আবহে পম্পেও বলেন, “দক্ষিণ চিন সাগরকে নিজের সাম্রাজ্য হিসেবে চিনকে ব্যবহার করতে দেবে না বিশ্ব। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মিত্রদেশগুলির পাশে আছে আমেরিকা। আন্তর্জাতিক আইন মেনে যে কোনও মূল্যে তাদের অধিকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।” এদিন পম্পেও আর জানান বিতর্কিত জলসীমায় নিজের কর্তৃত্ব স্থাপন করতে গিয়ে অন্য বেশ কয়েকটি দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করছে চিন। এটা কখনওই মেনে নেওয়া হবে না।
এদিকে, আমেরিকার বয়ানে পালটা তোপ দেগেছে চিন। কমিউনিস্ট দেশটি বিবৃতি জারি করে বলেছে, “দক্ষিণ চিন সাগরে শান্তিস্থাপনের অজুহাতে আমেরিকা আদতে পেশিশক্তি প্রদর্শন করছে। করে চলেছে। এতে দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায় নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে। তা ওই এলাকার দেশগুলির মধ্যে বিরোধকে আরও উস্কে দিচ্ছে।”
সম্প্রতি, চিন সাগরে বিতর্কিত জলসীমায় সামরিক মহড়া করে চিনের নৌসেনা (People’s Liberation Army Navy)। তারই জবাবে দু’টি ‘ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ’ পাঠিয়েছে আমেরিকা। উল্লেখ্য, একটি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে থাকে সাবমেরিন, ফ্রিগেট, ডেস্ট্রয়ারে মতো বেশ কয়েকটি রণতরী। এগুলোকে মিলিয়ে বলা হয় ‘স্ট্রাইক গ্রুপ’। যেহেতু মার্কিন রণতরীগুলি আণবিক শক্তি চালিত তাই তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য সাগরে থাকতে সক্ষম। পাশাপাশি, F-18 যুদ্ধবিমানের সঙ্গে ‘USS Nimitz’ ও ‘USS Ronald Reagan’-এ রযেছে বিধ্বংসী মিসাইল সম্ভার।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ চিন সাগরের প্রায় ৯০ শতাংশ নিজেদের বলে দাবি করে চিন। ফলে ইতিমধ্যেই জাপান, ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে বেজিং। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই সাগর দিয়েই প্রতিবছর ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হয়। ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে এই রুটটি অত্যন্ত লাভজনক। এছাড়াও, এশিয়া মহাদেশে মার্কিন প্রভাব খর্ব করতে হলে সবার আগে দক্ষিণ চিন সাগরে মার্কিন নৌবহরকে কাবু করতে হবে, তা ভালই জানে চিন। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলেছে আমেরিকা।