Advertisement
Advertisement
Ajodhya Hill

অযোধ্যায় নয়া অ্যাডভেঞ্চার বাইক রাইড! শুধু বেড়ানো নয়, গল্পও শোনাচ্ছেন রাইডাররা

ভাড়াও পাওয়া যাচ্ছে বাইক।

Bike Adventure ride in Ajodhya Hill in Purulia | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:December 5, 2023 7:43 pm
  • Updated:December 6, 2023 6:44 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: অযোধ্যা পাহাড় মানেই অ্যাডভেঞ্চার! এবার আরও বেশি করে পাহাড়ের খাঁজ, টিলার জঙ্গলের অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ পাইয়ে দিতে বাইকে ভ্রমণ। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সাইট সিয়িং-র গল্প শোনানো। ইতিহাস থেকে প্রকৃতির রূপ। কাছ থেকে উপভোগ করা যাচ্ছে চোখ জুড়িয়ে যাওয়া ল্যান্ডস্কেপের।

হ্যাঁ, ঠিক তাই। গোয়া, গ্যাংটকের মত অযোধ্যা পাহাড়েও বাইক ভাড়া যেমন মিলছে। তেমনই বাইকে করে অযোধ্যা পাহাড়ের সমস্ত সাইট সিয়িং ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে। তা অফ বিট হোক বা সাধারণ। আসলে চার চাকার গাড়িতে বসে অযোধ্যা পাহাড়ের আমেজটা সেভাবে পাওয়া যায় না। এই শীতে ঝলমলে নীল আকাশে রোদ্দুর, সঙ্গে কনকনে উত্তুরে হাওয়া। আর দুপাশে জঙ্গলজুড়ে শাল, সেগুন, পলাশ, শিমুল, কুসুমের ঘন বন। সেই জঙ্গলের মধ্যেই ছড়িয়ে- ছিটিয়ে টিলা। কোথাও একেবারে কালো পিচের মসৃণ রাস্তা। আবার কোথাও এবড়ো-খেবড়ো পথে এক পাশে গভীর খাদ। আরেক পাশে পাহাড়ি ঝোরার আওয়াজ। কপাল ভালো থাকলে দিনের বেলাতেও বুনো হাতির রাস্তা পারাপার দেখা যাবে। দেখা যেতে পারে বন্য শুয়োর, খরগোশ, বন বিড়াল এমনকী গোল্ডেন জ্যাকেলও। সাক্ষাৎ হয়েই যেতে পারে চিতল হরিণ বা হায়নার সঙ্গেও।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দেশজুড়ে সরকারি স্কুলগুলোতে ফাঁকা লক্ষ লক্ষ পদ, তথ্য দিল কেন্দ্র]

 

Advertisement

পাহাড়ের এমন কিছু অফ বিট সাইট সিয়িং রয়েছে যা সাধারণভাবে পর্যটকরা জানেনই না। কারণ সেখানে চার চাকার গাড়ি ঢোকে না। সেই দুর্গম ও ‘ভয়ঙ্কর’ সুন্দর এলাকাগুলো এবার বাইকে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন বাইক রাইডাররা। তার তালিকা কিন্তু লম্বা। মাছকান্দা ফলস, পিটিতিরি ফলস, ছলছলিয়া ফলস, ঘাঘেশ্বরী ফলস, পাপড়াকোচা ড্যাম, ডাউরি খালের কুমিরের হাঁ মুখ। এই ডাউরি খালে ২০০৬ সালের জুলাই মাসে হড়পা ভেসে গিয়েছিলেন পর্বতারোহীরা । পাহাড় বেয়ে হড়পা বান এলে কী অবস্থা হয় সেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথাও তুলে ধরেছেন এই বাইক রাইডাররা। সেই সঙ্গে এই পাহাড়ের সীতাকুন্ডে রাম-সীতার মিথ। কথিত থাকা নানান গল্প।

 

 

বাঘমুন্ডির পাতরডি গ্রামের বাসিন্দা দুলাল কুমার। এই অযোধ্যা পাহাড় রেঞ্জের বলরামপুরের যশুডি গ্রামের রঞ্জিত মাহাতো। এই দুই যুবকই মূলত বাইকে অযোধ্যা পাহাড় ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন পর্যটকদের। শোনাচ্ছেন এই পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে লুকিয়ে থাকা গল্প। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা দুলাল কুমার বলেন, “আমি সরকারিভাবে কোনও গাইডের প্রশিক্ষণ নিইনি। পাহাড়-জঙ্গল এলাকার ছেলে। ফলত স্বাভাবিকভাবে অযোধ্যা পাহাড়ের সমস্ত সাইট সিয়িংগুলো আমার জানা। তা সে সাধারণ হোক বা দুর্গম। এখন পর্যটনের চেহারাটা দিন-দিন বদলাচ্ছে। মানুষজন বেশি বেশি অ্যাডভেঞ্চার চাইছেন। এই কথা মাথায় রেখেই অযোধ্যা পাহাড় আমি বাইকে ঘুরে দেখানোর কাজ শুরু করি।” ঠিক পুজোর আগে থেকে এই কাজ শুরু করেছেন দুলাল। শীতের মরশুমে তার বাইক ভ্রমণ এখন জমজমাট। সঙ্গে তিনি বাইক ভাড়াও দিচ্ছেন। সারাদিনে বাইক রাইডার দুলাল ৪ থেকে ৫টি সাইট সিয়িং বাইকে ঘুরে দেখাচ্ছেন। সঙ্গে শোনাচ্ছেন গল্প। এর জন্য নিচ্ছেন মাত্র ১ হাজার টাকা। এক বাইকে একজনই পর্যটক। একেবারে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ বিধি মেনে। মাথায় দিচ্ছেন হেলমেট। পর্যটকের জন্যও হেলমেট থাকছে ওই বাইকে ঝোলানো। এছাড়া বাইক ভাড়া নিতে হলে মাত্র ৫০০ টাকা । জ্বালানি একেবারেই নিজের। তবে রঞ্জিত-ই প্রথম অযোধ্যা পাহাড়ে পর্যটকদেরকে বাইকে ঘুরিয়ে দেখানোর স্বাদ দিয়েছিলেন। এই বাইক রাইডারদের হাত ধরে অযোধ্যার পর্যটনকে যেন আরও বেশি করে জানছেন পর্যটকরা।

[আরও পড়ুন: চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের পথে বাধা হতে পারে মামলা! FIR বাতিলের পরামর্শ হাই কোর্টের]

অযোধ্যা পাহাড়ের এই বাইক রাইডাররা মূলত সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করেই পর্যটক টানছেন। ফেসবুকে ফোন নম্বর শেয়ার করে দেদার বুকিং পাচ্ছেন। নদীয়ার রানাঘাট থেকে বেড়াতে আসা শুভম চট্টোপাধ্যায়, সুরজিৎ দাস বলেন, “অযোধ্যা পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে চার চাকায় একদমই জমবে না। তাছাড়া এখানকার বেশ কিছু অফবিট সাইট সিয়িং রয়েছে। যেখানে গাড়ি যায় না। সেই সব জঙ্গলঘেরা এলাকায় অ্যাডভেঞ্চারের জন্য বাইক ছাড়া হবে না। বাইকে ঘুরে অযোধ্যা পাহাড়ে যে আমেজটা পাওয়া যায় তা বলে বোঝাতে পারবো না। “

দেখুন ভিডিও:

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ