Advertisement
Advertisement

Breaking News

জাতীয় পার্টি

এরশাদের প্রয়াণের পর সংকটে জাতীয় পার্টি, ক্ষমতা নিয়ে দেওর-বউদির দ্বন্দ্ব

চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর ভাইকে আপাতত দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব৷

Jatiyo Party in Bangladesh is in crisis with absent of the President Ershad
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 23, 2019 4:21 pm
  • Updated:July 23, 2019 4:21 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: আশঙ্কাই সত্যি হল৷ নেতার প্রয়াণের পরই কার্যত ভেঙে পড়তে চলেছে বাংলাদেশের জাতীয় পার্টি৷ বিতর্কিত সেনাশাসক তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেন মহম্মদ এরশাদবিহীন জাতীয় পার্টিতে দলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রকাশ্যেই দেওর-বউদির সংঘাত শুরু হয়ে গেল৷

[আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশের বহুমুখী সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে পরিকল্পনা দু’দেশের]

এরশাদ নিজের জীবদ্দশাতেই ছোট ভাই কাদেরকে তাঁর ঠিক পরের পদ অর্থাৎ ভাইস চেয়ারম্যান করেছিলেন। দাদার মৃত্যুর পর কাদের আচমকাই নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করে দেন। কিন্তু এরশাদের স্ত্রী রওশন দেওর কাদেরকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নারাজ৷ সোমবার রাতে রওশন-সহ জাতীয় পার্টির (জাপা) নয়জন নেতার তরফে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। ফলে এরশাদবিহীন অথৈ জলে তাঁর দল জাতীয় পার্টি।

Advertisement

এতদিন চেয়ারম্যান হিসেবে কড়া হাতে দলের রাশ ধরেছিলেন তিনি। প্রাক্তন সেনানায়ক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেও তাঁর যথেষ্ট প্রভাব ছিল। তাই তাঁর অনুপস্থিতিতে কার্যত দিশেহারা জাপা। দলে ভাঙনের আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক সংবামাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “জাতীয় পার্টি কোনও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়নি। এটি ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব রয়েছে। দলে এরশাদের নেতৃত্বে একটি ধারা রয়েছে। আরেকটি ধারা কাদেরকে কেন্দ্র করে। এই ধারাই কিন্তু একসময় ভেঙে যেতে পারে।’’ অভিযোগের সুরে তাঁর আরও বিশ্লেষণ, জাতীয় পার্টি সুবিধাবাদী রাজনীতি করেছে। যার কারণে এক সময় ক্ষমতা ভোগ করেছেন তারা। এক সময় ছিটকেও পড়েছে ক্ষমতার বলয় থেকে। আবার রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজিয়ে ক্ষমতার অলিন্দে প্রবেশ করেছে। কিন্তু সব কিছুই ছিল এরশাদকে কেন্দ্র করে।

Advertisement

তাই তাঁর অবর্তমানে জাপা দিশাহীন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বর্তমানে জাতীয় পার্টির কোনও জনভিত্তি নেই। ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটবে দল বা গন্তব্য কী, তারও ঠিক নেই। ১৯৮২ সালে ক্ষমতা দখল করে প্রায় ন বছর ধরে দেশ শাসন করেন এরশাদ। তারপর ১৯৯০ সালে গণ-আন্দোলনের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। কিন্তু তারপরও জাতীয় পার্টি বিস্ময়করভাবে ক্ষমতার রাজনীতিতে ফিরে আসে৷ রাজনীতিবিদের দলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, কাদের দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকবেন। সম্প্রতি জিএম কাদের নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন, তা আদৌ দলের যথাযথ ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। বিবৃতিতে রওশনের স্বাক্ষর থাকলেও বাকিদের নামের পাশে সই নেই। তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে৷

[আরও পড়ুন: ঢাকায় ক্রমশ বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত এক সিভিল সার্জেন]

এইচএম এরশাদের মৃত্যুর পর দলের নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব-গ্রুপিংয়ের অবসান ঘটাতে তৎপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কাদের। এর অংশ হিসেবে তিনি দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান তথা নিজের বউদি রওশন এরশাদের গুলশনের বাসায় যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা দুজনে একান্তে কথা বলেন। দলে ও সংসদে নেতৃত্ব নিয়ে মতবিরোধ কাটাতে সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ সময় তাঁরা একটি ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা করেন। ফর্মুলা অনুযায়ী সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে এরশাদের স্থলাভিষিক্ত হবেন রওশন। আর দলের চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরই দায়িত্ব পালন করবেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ